আড়াই বছর আগে তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। দেশে কিছুদিন চিকিৎসার পর ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে প্রায় দেড় মাস চিকিৎসা করানো হয়।
Published : 26 May 2024, 08:11 PM
বোনম্যারো ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শিল্পী খানম মারা গেছেন।
দুই বছরেরও বেশি সময় রোগে ভোগে রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৪৫।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও কলা অনুষদের ডিন হোসনে আরা বেগম ।
তিনি বলেন, “আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওনার চিকিৎসার জন্য টাকা দিয়েছেন। কিন্তু আমি সেটাও তার নিকট পৌঁছাতে পারলাম না। খবরটি শোনার পর থেকেই খুব খারাপ লাগছে।”
বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাস ফেইসবুক পোস্টে শোক প্রকাশ করে লিখেছেন, “অধ্যাপক ডক্টর শিল্পী খানমের ক্যান্সারে মৃত্যু আমাদের জানিয়ে গেল শিক্ষক হিসেবে কতটা অসহায় আমরা। ব্যয়বহুল চিকিৎসা নিয়ে তার পরিবারকে বিচলিত হতে দেখা গেছে। শিক্ষকরা ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে অর্থ সহায়তা করেছেন। কিন্তু তারও একটা সীমাবদ্ধতা ছিল। আমাদের সহকর্মীর মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শিল্পী খানমের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরে। সেখানে মরদেহ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমে তার চিকিৎসার খরচ ও দেনা-পাওনার বিষয়টি দেখা হবে বলেও জানান প্রক্টর৷
আড়াই বছর আগে শিল্পী খানমের ক্যান্সার ধরা পড়ে। দেশে কিছুদিন চিকিৎসার পর ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে প্রায় দেড় মাস চিকিৎসা করানো হয় তার।
তবে দেশে ফেরার পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। দীর্ঘ সময়ের ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ বহন করতে গিয়ে শেষ হয়ে যায় সঞ্চয়ে থাকা সব টাকা। অনেকের কাছ থেকে ঋণও করতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিও একবার সহায়তার হাত বাড়িয়েছিল।
বিভাগের শিক্ষার্থীদেরও উদ্যোগে চিকিৎসার জন্য অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছিল। এরই মধ্যে অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত শুক্রবার রাতে শিল্পী খানমকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।
সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে তার জানাজায় অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
শিল্পী খাতুন দুই সন্তানের জননী ছিলেন। তার দুই ছেলেই এবার এসএসসি পরীক্ষা পাস করে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন।