নতুন হলের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে রওনা দিয়ে কয়েক দফায় পুলিশের বাধার পর পুরান ঢাকার নয়াবাজার মোড়ে অবস্থান নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
Published : 22 Aug 2016, 12:28 PM
সেখানে তাদের অবস্থান ও বিক্ষোভের কারণে যাত্রাবাড়ী, মাওয়া, সদরঘাট ও গুলিস্তানের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
পরিত্যক্ত কারাগারে নতুন হল নির্মাণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিতে পুরান ঢাকার ক্যাম্পাস থেকে সোমবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে মিছিল নিয়ে তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ের দিকে রওনা হয়।
তাদের অভিযোগ, রায়সাহেব বাজার ও নয়াবাজারে মিছিলে কাঁদানে গ্যাসের সেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। তাঁতীবাজার এলাকায় মিছিলে লাঠিপেটার পাশাপাশি গুলিও চালানো হয়। গুলিবিদ্ধ একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের সেল নিক্ষেপ করার কথা স্বীকার করলেও গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও দাবি করছে পুলিশ।
দাবি আদায়ে সোমবার সকালে ক্যাম্পাসে কয়েক দফা বিক্ষোভ মিছিলও করে আন্দোলনরত শিক্ষার্ধীরা। এর আগে দুই দিন ক্যাম্পাসে ছাত্র ধর্মঘট পালনের পর সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার আদালতপাড়াসহ সর্বত্র নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জনসন রোড, ইংলিশ রোড ও রায় সাহেব বাজার মোড় এলাকায় গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ রয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম নয়ন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুলিশ গুলি ছুড়েছে। একাউন্টিং বিভাগের ১০ম ব্যাচের একজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে সুমনা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আরও অনেকে আহত হয়েছেন।”
এ প্রসঙ্গে কোতয়ালী থানার কর্তকর্তা শাহেনশাহ বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছি।তবে গুলি করিনি।পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে।”
এর আগে বুধবার শিক্ষার্থীরা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে গেলে পুলিশের বাধা পেয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে তারা ক্যাম্পাসে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেয়।
২০০৫ সালে অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানের ১১টি হল প্রভাবশালীদের দখলে ছিল। ২০০৯ সালে বৃহত্তর ছাত্র আন্দোলনে সরকারের উচ্চ মহলের টনক নড়ে। ওই সময় একাধিক হল বিশ্ববিদ্যালয়কে দিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ থাকলেও তা কার্যকর করেনি ঢাকা জেলা প্রশাসন।
গত ২ আগস্ট থেকে সেই মন্ত্রণালয়ের অধীন নাজিম উদ্দিন রোডে পরিত্যক্ত কারাগারের জমিতে হল নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। জমিটি পেতে ২০১৪ সালের মার্চে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে আবেদন করেছিল।
এবারে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে জায়গাটির জন্য গত ১৪ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য মীজানুর রহমান।