Published : 25 Jul 2024, 08:01 PM
কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে ছয় দিন আগে ঢাকার মিরপুরে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
আহসান হাবিব তামিম নামের ওই তরুণ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। মিরপুর এলাকাতেই তার বাসা।
গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজ সকালে তামিমের বাবার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি নিজেই গত শুক্রবার ছেলের মৃত্যুর বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন।”
তামিমের বাবার বরাতে অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, “গত শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে তামিম মিরপুরের বাসা থেকে বের হয়ে ১০ নম্বর গোল চত্বর এলাকায় যায়। কিছুক্ষণ পর তামিমের বাবার মোবাইলে একটি ফোন আসে এবং জানানো হয় তামিম গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
“ওই খবর শুনে তামিমের বাবা আবদুল মান্নান গোল চত্বর এলাকায় যান। সেখানে লোকজনের কাছ থেকে খবর নিয়ে তিনি যান আল হেলাল হাসপাতালে। তারপর আল হেলাল হাসপাতাল থেকে তামিমের বাবাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে বলা হয়। সেখানে তামিমের গুলিবিদ্ধ মরদেহ দেখতে পান তার বাবা।”
হাসপাতাল থেকে তামিমের মরদেহ নিয়ে তার পরিবার যায় নোয়াখালীর চাটখিলে তাদের গ্রামের বাড়িতে। শনিবার সকালে জানাজা শেষে সেখানেই তামিমকে দাফন করা হয়।”
মিজানুর রহমান বলেন, “তামিম নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তিন সন্তানের মধ্যে সে ছিল দ্বিতীয়। তার বড় ভাই বাবার সঙ্গেই মেকানিকের কাজ করে। রোববার বিভাগের সবার সঙ্গে মিটিং করে তার পরিবারকে আমরা সহযোগিতা করার চেষ্টা করব।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “আমরা গত শনিবার একজনের কাছ থেকে (তামিমের মৃত্যুর) খবরটি পেয়েছিলাম, কিন্তু পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারিনি। আজ নিশ্চিত হয়েছি। সে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিল বলে শুনেছি। আমরা তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।”
তামিমের জন্য শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম। দেশের বিভিন্ন স্থানে আহত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তালিকা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সাহায্য করার আশ্বাস তিনি দিয়েছেন।
উপাচার্য বলেন, “গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ছিল আমাদের পাঁচ শিক্ষার্থী। তাদের চারজনকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। অনিক নামের একজন শিক্ষার্থীকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। তার খাদ্যনালী ফুটো হয়ে গিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।”
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে তামিমের পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন সহিংস রূপ পাওয়ার পর এক সপ্তাহে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর এসেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ক্ষমতাসীনরা বলছে, ছাত্রদের আন্দোলনের সুযোগে এসব নাশকতা ঘটিয়েছে বিএনপি-জামায়াত।