Published : 04 May 2025, 11:00 PM
প্রতিষ্ঠার সাত বছরেও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারা দেশের ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানকে পাঠানো এক চিঠিতে এ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
চিঠিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ১২(১) ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলেছে মন্ত্রণালয়, যেখানে ভর্তি ও শিক্ষাসংক্রান্ত সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
চিঠি পাওয়ার পর ইউজিসি বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়ার যায় তা পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। তবে এমন কোনো সিদ্ধান্ত তারা নেবে না, যার ফলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন।
এতদিন সাময়িক অনুমতি নিয়ে চলা এ ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে- ঢাকার মোহাম্মদপুরের দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, সাতমসজিদ রোডের ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, সিদ্ধেশ্বরীর স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, রাজারবাগের দ্য মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি, গুলশানের প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, বনানীর প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি, শ্যামলীর আশা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, পান্থপথের সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি ও মিরপুরের বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস।
এছাড়া সিলেটের নর্থ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, কিশোরগঞ্জের ঈশা খাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, ফেনীর ফেনী ইউনিভার্সিটি, কুমিল্লার ব্রিটানিয়া ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও চট্টগ্রামের ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটিও রয়েছে এ তালিকায়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব এ এস এম কাসেম রোববার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাময়িক অনুমতির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তারা স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত না হয়ে ভাড়া ক্যাম্পাসেই শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ইউজিসিকে বলা হয়েছে।”
গত ৮ এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে ওই চিঠি পাঠানো হয়।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাময়িক অনুমতি নিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষা কার্যক্রম চলায়। সাময়িক অনুমতির মেয়াদ থাকে সাত বছর।
এ সময়ের মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজস্ব জমিতে ক্যাম্পাস স্থাপন ও স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণসহ সাতটি শর্ত পূরণ করে স্থায়ীভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পূরণের সনদ নিতে হয়।
শর্ত পূরণ করতে না পারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাময়িক অনুমতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তা পাঁচ বছরের জন্য নবায়নের আবেদন করতে পারে।
আইনের ১২(১) ধারায় বলা আছে, “কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে বা নবায়নকৃত মেয়াদের মধ্যে সনদপত্রের জন্য আবেদন করতে ব্যর্থ হলে, অথবা সনদপত্র পাওয়ার জন্য ধারা ৯ এর কোনো শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে, সাময়িক অনুমতিপত্র বা ক্ষেত্রমত নবায়নকৃত সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদ অবসানের সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি ও শিক্ষা সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।”
তবে এখনই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের মতো ব্যবস্থা না নিয়ে ‘অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা’ নেওয়ার কথা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ।
রোববার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমরা ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে দেখব। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপনের উদ্যোগ আছে, তাদের কিছুটা সময় দেওয়া হবে। আর যারা নিজস্ব ক্যাম্পাসে যাওয়ার উদ্যোগই নেয়নি, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“আমাদের সবশেষ মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচনা করে এমন সিদ্ধান্তই নিয়েছি। আমরা এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেব না, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন।”