“উচ্চশিক্ষা কি শুধু ধনীদের জন্য? আবেদন ফি কমাও, গুচ্ছ পদ্ধতি চালু রাখ," ফেইসবুক পোস্টে লেখেন তিনি।
Published : 14 Dec 2024, 09:31 PM
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন ফি কমানো ও গুচ্ছ পদ্ধতি চালু রাখার দাবি তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
শনিবার নিজের ফেইসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, "শিক্ষা সবার অধিকার, বাণিজ্যের পণ্য নয়! হাজার টাকার আবেদন ফি, যাতায়াত ও থাকার খরচ- বর্তমান ভর্তি প্রক্রিয়া শিক্ষার্থীদের জন্য এক ভয়ানক আর্থিক চাপ। প্রতিটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ ঝুলছে টাকার অঙ্কে।“
চাকরির জন্য বিসিএস পরীক্ষার আবেদনের ফি গত সপ্তাহে ৭০০ থেকে কমিয়ে ২০০ টাকা করা হয়েছে। অন্যান্য সরকারি চাকরির ফিও কমাতে সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এমন প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ সরকার পতন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এ দাবি তুললেন। তবে কমিয়ে কত টাকা করতে হবে তা তিনি বলেননি।
গত কয়েক বছরে ভর্তি পরীক্ষার ফি বেড়ে কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার টাকা ছাড়িয়েছে।
আগের বছরের চেয়ে ৫০ টাকা বাড়িয়ে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিটপ্রতি ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৫০ টাকা।
এবার গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে এসে এককভাবে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করতে যাওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাথমিক আবেদনের জন্য ১০০ টাকা নির্ধারণ করেছে। এতে নির্বাচিতদের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি দিতে হবে ৭০০ টাকা।
এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯০০ টাকা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০০০ টাকা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাথমিক আবেদন ফি ৫৫ টাকা এবং চূড়ান্ত আবেদন ফি ১৩০০ টাকা ধরা হয়েছে।
গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০০ টাকা।
এসব আবেদন ফি এর খরচ একজন শিক্ষার্থীর জন্য ‘ভয়ানক’ চাপ হিসেবে তুলে ধরেন হাসনাত আব্দুল্লাহ।
ফি কমানো ও গুচ্ছ পদ্ধতি চালু রাখার দাবি তুলে তিনি লেখেন, "মেধার মূল্যায়ন নয়, বৈষম্যের দেয়াল টেনে দিচ্ছে এই ব্যবস্থা। উচ্চশিক্ষা কি শুধুই ধনীদের জন্য? আবেদন ফি কমাও, গুচ্ছ পদ্ধতি চালু রাখ।"
দেশের একাধিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে আলাদা করে ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করেছে এসব বিশ্ববিদ্যালয়।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন। এতে তিন গুচ্ছের (সাধারণ, প্রকৌশল ও কৃষি) ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বেশ কয়েকটি নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইতোমধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও (শাবিপ্রবি)।
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবারের মতো সাধারণ ও বিজ্ঞান প্রযুক্তির ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। গত শিক্ষাবর্ষে সাধারণ ২৪টি, প্রকৌশলী ৩টি ও কৃষির ৯টি বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করে।