জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি প্রান্তিকে অনুদান পেতে অনলাইনে আবেদন করা যাবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
Published : 05 Jan 2025, 10:56 PM
জুলাই-অগাস্ট আন্দোলনে আহত হয়ে যারা চিকিৎসাধীন তাদের মধ্যে ‘অসচ্ছল ও মেধাবী’ শিক্ষার্থীদের বিদ্যমান একটি সরকারি ট্রাস্ট থেকেও অনুদান দেওয়া হচ্ছে।
জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি প্রান্তিকে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে স্নাতক পর্যায়ের আহত শিক্ষার্থীরা এ ট্রাস্ট থেকে অনুদান পেতে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
যে ট্রাস্ট থেকে এই অনুদান দেওয়া হচ্ছে তা হল- ‘প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট’। এ ট্রাস্ট থেকে দুর্ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের অনুদান দেওয়া হয়।
রোববার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন সোহাগ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ট্রাস্টের পক্ষ থেকে প্রতি দুইমাস পর পর অস্বচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেয়ে থাকি।
“এ টাকা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থী বা বৈধ অভিভাবকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়।
“আন্দোলনে আহত অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। গত প্রান্তিকেও আমরা আন্দোলনে আহত বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে অনুদান দিয়েছি।”
আহত চিকিৎসাধীন ‘অস্বচ্ছল ও মেধাবী’ শিক্ষার্থীদের প্রতি দুই মাস পরপর আর্থিক অনুদান দেয় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট।
ট্রাস্টের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ‘অসচ্ছল ও মেধাবী’ শিক্ষার্থীদের এককালীন চিকিৎসা অনুদান দেওয়া হয়।
‘দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের এককালীন আর্থিক অনুদান প্রদান নির্দেশিকা-২০২০’ অনুসরণ করে এ অনুদান দেওয়া হয়।
অনলাইনে https://www.eservice.pmeat.gov.bd/medical লিংকে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। শিক্ষার্থীরা তার চিকিৎসা মেয়াদে একবার মাত্র চিকিৎসা অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
শিক্ষার্থীদের আহত হওয়া বা হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের সময়কাল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অর্থবছর বা এক বছরের মধ্যে হতে হবে।
নির্দেশিকায় অনুদান পাওয়ার কিছু শর্ত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত দপ্তর ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীর সন্তান আর্থিক অনুদান পাওয়ার জন্য যোগ্য বিবেচিত হবে। অন্যান্য ক্ষেত্রে বাবা-মা বা অভিভাবকের বার্ষিক আয় ২ লাখ টাকার কম হতে হবে।
দুর্ঘটনা প্রমাণে জেলা পর্যায়ের সিভিল সার্জন, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ও উপজেলা পর্যায়ের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দেওয়া ‘গুরুতর আহতর’ সমর্থনে প্রত্যয়নকৃত শিক্ষার্থীর চিকিৎসা সনদ থাকতে হবে।
আবেদন করতে শিক্ষার্থীদের ছবি, জন্মনিবন্ধন সনদ, অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্র, নির্ধারিত ফরমে ‘শিক্ষার্থী দরিদ্র পরিবারের সন্তান’ বলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের সুপারিশ, দুর্ঘটনা প্রমাণে জেলা পর্যায়ে সিভিল সার্জন, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক বা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সুপারিশ এবং সরকারি কর্মচারীদের সন্তানের ক্ষেত্রে বাবা, মা বা অভিভাবকের প্রতিষ্ঠান প্রধানের প্রত্যয়নপত্র লাগবে।
জুলাই-অগাস্ট আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার খরচ সরকার বহন করছে। এর পাশাপাশি ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ আহতদের ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এক পর্যায়ে গণআন্দোলনে রূপ নেয়, যার তোড়ে ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। তার আগে এ আন্দোলন দমাতে গিয়ে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এত বিপুল হতাহত হয়।
২১ ডিসেম্বর জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৮৫৮ জন নিহত এবং সাড়ে ১১ হাজার আহত ব্যক্তির প্রথম ধাপের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে ‘গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেল’। এ তালিকা পরবর্তী সময় চূড়ান্ত করা হবে।
পুরনো খবর: