“গত ১৬ বছরের নির্যাতনের কথা ভুলে যাবেন না। যদি ছাত্রলীগের রাজনীতি অনুসরণ করেন, আপনারাও ছাত্রলীগের পথেই যাবেন, পরিণতি ঠিক ছাত্রলীগের মতই হবে,” বলেন তিনি।
Published : 18 Feb 2025, 11:36 PM
ছাত্রদল নিপীড়কের ভূমিকা পালন করলে পরিণতি ‘ছাত্রলীগের মতই’ হবে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
কুয়েটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে ছাত্রদলের দফায় দফায় সংঘর্ষের পর মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “একটা ব্যানার ধরতে ছয়জন মানুষের প্রয়োজন হয়। গত ১৬ বছর এই ছয়জন মানুষ আপনাদের (ছাত্রদলের) ছিল না। আজ আপনাদের পেছনে শত শত মানুষ। এই মানুষগুলোই গত ১৬ বছর ছাত্রলীগের পেছনে ছিল।
“এটি যে শিক্ষার্থীদের কারণে সম্ভব হয়েছে আপনারা তাদের বিরুদ্ধে যাবেন না। গত ১৬ বছরের নির্যাতনের কথা ভুলে যাবেন না। যদি আপনারা ছাত্রলীগের রাজনীতি অনুসরণ করেন আপনারাও ছাত্রলীগের পথেই যাবেন। পরিণতি ঠিক ছাত্রলীগের মতই হবে।”
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ-সমাবেশ ডাকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন।
এ সমাবেশে ছাত্রদলের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা মজলুম ছিলেন, আপনারা জালিম হইয়েন না৷ মজলুম জালিম হলে পৃথিবীতে বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা কেমন রাজনীতি করতে চায় তা জেনে আপনাদের তাদের সঙ্গে তাদের মত অনুযায়ী রাজনীতি করতে হবে। আপনারা যদি ছাত্রলীগের মত রাজনীতি করতে চান সাদ্দামের (ছাত্রলীগ সভাপতি) যে পরিণতি হয়েছে, আপনাদেরও তাই হবে।”
ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে কুয়েটে মঙ্গলবার বিকালে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ১৫ জন আহত ও পাঁচজনকে আটকের খবর পাওয়া যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে হাসনাত আব্দুল্লাহ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, “বুধবার দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জুলাই ও আজকের (মঙ্গলবার) নির্যাতনের ভিডিও প্রদর্শন করা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বিকেল ৩টায় এটি প্রকাশ করা হবে।”
সমাবেশে সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেন, “জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে কোনো দখলদারিত্বের ঠাঁই হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন ছাত্ররাজনীতির দরকার আছে। তেমনি শিক্ষার্থীদের কনসার্ন নিয়ে কাজ করতে হবে। জোরজবরদস্তি করে রাজনীতি খাওয়ানোর চেষ্টা করলে তাদের পরিণতি ছাত্রলীগের মত হবে।
“ছাত্রলীগ তো অনেক পরাক্রমশালী ছিল, তাদেরকে আমরা ঝেটিয়ে বিদায় করেছি। ছাত্রদল তো ‘গতকাল সকালে’ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছে। আমরা ছাত্রদলকে ক্যাম্পাসে নিয়ে এসেছি, তারা যদি আবার শিক্ষার্থীদের উপর হাত দিতে চায়, আমরা তাদের প্রতিরোধ করব।”
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক রিফাত রশীদ বলেন, “যারা আজকে (মঙ্গলবার) কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করেছে, তারা শহীদ ওয়াসিমের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করেছে। যারা বাংলাদেশের অলিতে-গলিতে ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়, তাদের আমরা পায়ের নিচে পিষে ফেলব।”
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার, হাসিব আল ইসলামও সমাবেশে বক্তব্য দেন।