“সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মসজিদের খতিবকে শুধুমাত্র সাময়িকভাবে ইমামতি করা থেকে বিরত থাকতে মৌখিক নির্দেশ দেয়া হয়েছে, এর বেশি কিছু নয়,” বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
Published : 31 May 2024, 12:25 PM
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এক নারী শিক্ষার্থীকে ঘুমন্ত অবস্থায় পাওয়ার ঘটনায় ইমাম (খতিব) মো. সালাহউদ্দিন আহমেদকে অব্যাহতি দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইমাম সালাহউদ্দিনকে সাময়িকভাবে ইমামতিতে বিরত থাকতে মৌখিক নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিষয়টিকে গণমাধ্যমে ‘ভুলভাবে’ উপস্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “গত ১৫ মে বুধবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থী অবস্থানের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে মসজিদের ইমামসহ সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলার বিষয়ে তদন্তপূর্বক একটি নিরপেক্ষ প্রতিবেদন প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
“বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। কোনো কোনো গণমাধ্যম খতিবকে অপসারণ করা হয়েছে বা অব্যাহতি দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে, যা অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
“সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মসজিদের খতিবকে শুধুমাত্র সাময়িকভাবে ইমামতি করা থেকে বিরত থাকতে মৌখিক নির্দেশ দেয়া হয়েছে, এর বেশি কিছু নয়,” বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে একটি অংশ নারীদের জন্য আলাদা করা। ছাত্রীরা সেখানে নামাজ পড়েন। গত ১৫ মে রাত ১১টা ২০ মিনিটে সেখানেই সেই ছাত্রীকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পান মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম ছালাহ্ উদ্দীন।
এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ইমামকে মৌখিকভাবে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয় বলে জানা যায়।
ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে ২৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম লুৎফর রহমানকে আহ্বায়ক এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খালেদ সাইফুল্লাহকে সদস্য সচিব করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এই ঘটনাকে মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কঠোর সমালোচনা শুরু করেন। মসজিদের ইমামকে ‘অন্যায়ভাবে বহিষ্কারের’ প্রতিবাদে ৩০ মে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ মিছিল করেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কেন্দ্রীয় মসজিদে ইবাদতেই গিয়েছিলেন সেই ছাত্রী, সেখানে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। সেখানে যেকোনো অঘটন ঘটতে পারত। দায়িত্বে অবহেলার কারণে আমরা ইমামকে নামাজ পড়ানো থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছিলাম। সেটা অনেক গণমাধ্যম ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে, যা সঠিক নয়।”
এদিকে ওই ঘটনার পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মসজিদসহ অন্যান্য অ্যাকাডেমিক ভবন ও এর আশেপাশে বসবাসরত কর্মচারীদের তিন মাসের মধ্যে আবাসস্থল ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
তবে মসজিদে ছাত্রীকে ঘুমন্ত অবস্থায় পাওয়ার সঙ্গে কর্মচারীদের তিন মাসের মধ্যে আবাসস্থল ছাড়ার নির্দেশের কোনো সম্পর্ক নেই বলে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আইনুল ইসলাম জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:
জবি কর্মচারীদের ক্যাম্পাসের আবাসস্থল ছাড়ার নির্দেশ, অসন্তোষ
জবি মসজিদে মধ্যরাতে ঘুমন্ত ছাত্রী, ইমামকে অব্যাহতি