পাশাপাশি নারী কর্মীদের আয়ও বৃদ্ধি হয়।
Published : 13 Jun 2023, 09:19 PM
পোশাক কারখানায় নারী সুপারভাইজার নিয়োগ দেওয়া হলে তাতে কর্মপরিবেশ তুলনামূলকভাবে বেশি ‘শ্রমিকবান্ধব ও উৎপাদনবান্ধব’ হয় বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা আইএফসি ও আইএলও বাংলাদেশের পোশাক কারখানায় নারী শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর তাদের কর্মদক্ষতা নিয়ে পরিচালিত এক সমীক্ষায় এমন চিত্র পেয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার লো মেরিডিয়ান হোটেলে ‘বেটার ওয়ার্কস বাংলাদেশ’ এর ‘জেন্ডার ইকুয়ালিটি অ্যান্ড রিটার্নস’ (জিইএআর) কর্মসূচির এক অনুষ্ঠানে ওই জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
ঢাকা ও চট্টগ্রামের ২৭টি পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকদের ওপর চালানো সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, পোশাক কারখানার ব্যবস্থাপনা পদে নারী কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে লাইন সুপারভাইজার হিসাবে উন্নীত করতে পারলে তা উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। পাশাপাশি নারী কর্মীদের আয়ও বৃদ্ধি করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সাল থেকে জিইএআর কর্মসূচির আওতায় ৭৮টি কারখানায় ছয়শর বেশি নারী কর্মী কারিগরি দক্ষতা এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ নারী তাদের কর্মক্ষেত্রে সুপারভাইজার হিসাবে পদোন্নতি পেয়েছেন। প্রশিক্ষিত কর্মীরা ৪০ শতাংশ বেশি আয় করছেন এবং ব্যবস্থাপনা খাতে তাদের আরও পদোন্নতি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
আন্তর্জাতিক পোশাক ব্র্যান্ড এইচঅ্যান্ডএম, এমঅ্যান্ডএস, লেভি’স, রালফ লরেন ও ভিএফ কর্পোরেশনের সহযোগিতায় এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট ইকনোমিক্সের অধ্যাপক ক্রিস্টোফার উডরাফ বলেন, “জিইএআরের প্রশিক্ষণ পাওয়া সুপারভাইজাররা ৪ শতাংশ বেশি দক্ষতার সাথে তাদের কাজ তদারকি করেছে। যার ফলে কারখানার প্রতি লাইনে বার্ষিক ৫ হাজার ডলার এবং ২০ লাইনের একটি কারখানায় বার্ষিক এক লাখ ডলার ব্যয় সাশ্রয় হয়েছে।”
জিইএআর কর্মসূচিতে প্রশিক্ষিত সুপারভাইজাররা তাদের পুরুষ সহকর্মীদের তুলনায় অধীনস্তদের সঙ্গে আরও সহযোগিতামূলক আচরণ করছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
প্রশিক্ষিত নারী লাইন সুপারভাইজারদের একজন এমবিএম গার্মেন্টসের বিথি আক্তার জানান, পরিবারের সমর্থন পেয়ে তিনি এ ধরনের প্রশিক্ষণ নিতে সাহস করেছেন। সেলাই শাখায় বেশির ভাগ কর্মী নারী হওয়ায় সুপারভাইজার হিসাবে তিনি খুব স্বাচ্ছন্দে কাজ করতে পারছেন। পাশাপাশি নারী কর্মীদের সুবিধা-অসুবিধা খুব সহজেই সমাধান দিতে পারছেন।
“শুরুর দিকে অনেকেই সুপারভাইজার হিসাবে আমাকে মেনে নিতে না চাইলেও ধীরে ধীরে কাজটি সহজ হয়ে গেছে। এখন আমার লাইন থেকে সব সময় বেশি উৎপাদন হচ্ছে এবং প্রশংসা পাওয়া যাচ্ছে।”
এশিয়ান ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি রুবানা হক, বিজিএমইএ পরিচালক ফয়সাল সামাদ, পোশাক শিল্পগোষ্ঠী ডিবিএলের চিফ সাসটেইনেবিলিটি অফিসার মোহাম্মদ জাহিদুল্লাহ, এইচঅ্যান্ডএমের সোশ্যাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার প্রদীপ গ্যাব্রিয়েল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।