‘সচেতনতার অভাবে জিআই স্বীকৃতি নিয়ে যাচ্ছে অন্য দেশ’

বাংলাদেশের ৭৩-৭৪টি পণ্য জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য, বলছে বাংলাদেশ আইপি ফোরাম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2024, 07:40 PM
Updated : 15 Feb 2024, 07:40 PM

সচেতনতা ও গুরুত্ব না দেওয়ার কারণেই দেশের পণ্যের ভৌগলিক নিদের্শক বা জিআই স্বীকৃতি অন্য দেশ নিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ আইপি ফোরাম।

বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকার গুলশানে বাংলাদেশ আইপি ফোরাম ও সেন্টার অব এক্সিলেন্স বাংলাদেশের কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশি জিআই পণ্যের সুরক্ষা' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথা বলেন আইপি ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও মেধাস্বত্ব বিষয়ক আইনজীবী হামিদুল মিজবাহ।

বাংলাদেশের জিআই পণ্যের স্বীকৃতি অন্য দেশ কীভাবে নিয়ে যাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তার মতে, সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্বপূর্ণ হলে পণ্যগুলোর জিআই স্বীকৃতি এনে দেশকে লাভবান করা সম্ভব।

শত শত বছরের ঐতিহ্যের টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বীকৃতি দাবি করে সম্প্রতি সেটির স্বীকৃতি নিজেদের পক্ষে নিয়েছে প্রতিবেশী দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।

ভারতের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ফেইসবুক পেইজে গত ১ ফেব্রুয়ারি একটি পোস্টে বলা হয়, টাঙ্গাইল শাড়ি পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্য। এক মাস আগেই পণ্যটিকে পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া, পূর্ববর্ধমানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। 

এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলাদেশে এ নিয়ে ক্ষোভ দেখা দেয়। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে টাঙ্গাইলের শাড়ির জিআই স্বীকৃতি পেতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

এদিন সংবাদ সম্মেলনে আইপি ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা হামিদুল বিলেন, “আমাদের ৭৩-৭৪টি পণ্য আছে যেগুলো জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য। এগুলোকে জিআই স্বীকৃতি এনে দেওয়ার দায়িত্ব সরকারসহ সবার। পাশাপাশি জিআই পণ্য যেহেতু একটি দেশের ভৌগোলিক অবস্থার সঙ্গে জড়িত, তাই সেই পণ্যের স্বীকৃতি অন্য দেশের নিয়ে যাওয়া অনৈতিক।”

সংবাদ সম্মেলনে আইপি ফোরামের প্রধান নির্বাহী মনজুরুর রহমান বলেন, “জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার মতো আমাদের আরও অনেক পণ্য রয়েছে। কিন্তু আমরা এই সম্পদ রক্ষার প্রতিযোগিতায় ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ছি। সম্প্রতি প্রতিবেশী দেশ আমাদের দুটি পণ্যের স্বীকৃতি নিয়ে গেছে। এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হলে প্রয়োজন প্রগাঢ় সচেতনতাবোধ।”

বাংলাদেশ আইপি ফোরামের ট্রাস্টি ও প্রাক্তন অতিরিক্ত সচিব মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, “২০১৬ সালে আমরা প্রথম আমাদের কোনো পণ্যের জিআই স্বীকৃতি পাই। একটি পণ্যকে জিআই স্বীকৃতি পেতে হলে প্রথমে সে পণ্যের রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। তারপর সেই পণ্যের বিষয়ে জার্নাল তৈরি করতে হয়। এ রেজিস্ট্রেশনের আবেদন করতে হয় যে গোষ্ঠী পণ্যটি তৈরি করে তাদের। কিন্তু আমাদের দেশে সেই সচেতনতা নেই। যেটি সরকারসহ অংশীজনদের দেখতে হবে।”

বাংলাদেশ অরগানাইজেশন ফর লার্নিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বোল্ড) সভাপতি কাজী মাহমুদ আহমেদ বলেন, “জিআই পণ্য যেহেতু প্রিমিয়ার মানের হয়, তাই এসব পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে ট্যাগ থাকা প্রয়োজন, যাতে এর সঠিক মূল্য পাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের দেশের জিআই পণ্যের ক্ষেত্রে তেমন কোনো ট্যাগ থাকে না। যার কারণে আমরা সঠিক মূল্য পাই না। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের দেখতে হবে।”