বিক্রেতারা যখন ৫৮০, এমনকি ৫৫০ টাকা দরে মাংস বিক্রি করছেন, তখন কেন সরকারি সংস্থা দাম নির্ধারণে তৎপর হলো, সে প্রশ্ন ভোক্তাদের। এরই মধ্যে ব্যবসায়ীদের একাংশ ৬৫০ টাকা দরে বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে।
Published : 09 Dec 2023, 12:10 AM
প্রতিযোগিতায় গরুর মাংসের দাম কমে ছয়শ টাকার নিচে চলে আসা এবং দাম ক্রমান্বয়ে আরও নিম্নমুখী হওয়ার মধ্যে এর দাম বেঁধে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভোক্তারা।
তাদের অভিযোগ, গত এক দশকে দাম বেড়ে যখন তিনগুণ হয়েছে, সে সময় সরকারের কোনো সংস্থা এই দাম যুক্তিসঙ্গত কি না, কোনো পর্যায়ে অতিরিক্ত মুনাফা হচ্ছে কি না, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখার চেষ্টা করেনি।
এখন কিছু বিক্রেতা যখন ছয়শ টাকার কম দামে মাংস বিক্রি করতে শুরু করেছেন, অনেকে তাদের অনুসরণ করতে শুরু করেছেন, তখন খামারি ও মাংস ব্যবসায়ীদের সমিতি মিলে প্রতিকেজি গরুর মাংস ৬৫০ টাকা দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছে, যা নিয়ে ক্রেতাদের আপত্তি।
তারা বলছেন, চাহিদা ও যোগানে দাম স্থির হওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত। এতে দাম আরও কমে আসতে পারত। কিন্তু এখন উল্টো চক্রে আবার বেড়ে যেতে পারে।
রাজধানীর শান্তিনগরের বাসিন্দা জীবন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডকমকে বলেন, “যখন আমরা শাজাহানপুর বাজার থেকে ৫৯০ টাকায় গরুর মাংস পাচ্ছি, তখন কীভাবে তারা আলোচনার মাধ্যমে ৬৫০ টাকা দাম নির্ধারণ করে?”
গরুর মাংসের বাজারে যে অতিরিক্ত মুনাফার কারবার চলে আসছে, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামানও সে কথা মানছেন। তবে তার ভাষ্য হল, মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার ক্ষমতা তাদের হাতে নেই।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা বিক্রি করে দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র কেজিতে দেড়শ থেকে দুইশ টাকা করে মুনাফা করছিল। এই বিষয়গুলো গত ছয়মাস ধরে আমরা বলে আসছি। এখন কিছু ব্যবসায়ী নিজেরা উদ্যোগী হয়ে ৫৯৫ টাকায় মাংস বিক্রি শুরু করেছে এবং এতে তাদের লাভও হচ্ছে। এই বিষয়টি বাজারে ছড়িয়ে দিয়ে দাম কমাতে একটা প্রভাব সৃষ্টির চেষ্টা করেছে ভোক্তা অধিকার।”
এতে কাজও হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, “এখন বাধ্য হয়ে তারা (মাংস ব্যবসায়ীরা) নিজেরাই বৈঠক করে ৬৫০ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন আমরা দেখব বাজারে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব কতটা। আমার ধারণা ৬৫০ টাকা নয়; মাংসের দাম কমে ৫০০ টাকার দিকে চলে আসবে যদি এই খাতে দীর্ঘদিন ধরে চলমান অনিয়মগুলো বন্ধ করা যায়।”
২০১৪ সালে ঢাকায় গরুর মাংসের দাম ছিল গড়ে ২৭৫ টাকা কেজি, ২০২৩ সালে সেই মাংস উঠে যায় ৮০০ টাকায়, কোথাও কোথাও তার চেয়ে বেশি।
উচ্চমূল্য ক্রেতা কমিয়ে দেওয়ার পর চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে ক্রেতা আকর্ষণে বিক্রেতারা ধীরে ধীরে দাম কমানোর উদ্যোগ নিতে থাকেন। নভেম্বরের শেষে সেই প্রতিযোগিতা নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়।
যে বিক্রেতারা আগে দাবি করতেন আটশ টাকায় তাদের ‘পোষায় না’, সেই তারাই ৬০০ টাকা কেজি দরে বেচে মুনাফা হওয়ার কথা জানাতে থাকেন।
দাম কমার পর বেড়ে যায় বিক্রি, যে দোকানে দিনে একটি গরু বিক্রি হত না, সে দোকানে তিনটি গরু জবাই করার কথা জানাতে থাকেন কসাইরা।
দাম ৮০০ থেকে ৭৫০, পরে ৭০০ এরপর ৬৫০, পরে ৬০০ তে নামে। রীতিমতো ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে কেউ কেউ ৫৮০ টাকায় বেচতে থাকেন। দাম যত কমে, দোকানের সামনে ক্রেতার লাইন বাড়ে।
এর মধ্যে মিরপুর-১১ নম্বরে মামা ভাগিনা গোস্ত বিতানে ৫৪৯ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি শুরু করেন বিক্রেতা আবুল কাসেম।
তিনি বলেন, “আগে হয়ত বেশি লাভ হত, এখন কম, লাভ হয়। পুরা ষাঁড় গরু, কোনো গাই গরু নাই। কাস্টমার খাইব, দোয়া করব।”
কাসেম ৫৪৯ টাকায় বিক্রি করে মুনাফা করতে পারলেও এখন উৎপাদকসহ ‘সব পক্ষের স্বার্থের’ কথা বলে দাম ৬৫০ টাকা নির্ধারণের চেষ্টা চলছে। আবুল কাসেমের ভাষায়, “ওইটা তো সিন্ডিকেট।”
চলতি বছর রোজার আগে বগুড়ার গাবতলীর কালু কসাই নামে একজন বিক্রেতা ৫৮০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করে আলোচনায় আসেন।
চলতি নভেম্বরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড স্ট্যান্ড মোড় এলাকায় জালু কসাইয়ের ‘বিসমিল্লাহ গোশত বিতানে’ ৬০০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি শুরু হয়। গণমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমগুলোতেও এ নিয়ে প্রচার চলতে থাকে।
ঢাকার শাহজাহানপুর বাজারে খলিল গোস্ত বিতানে ‘প্রতি কেজি ৫৯৫ টাকা’ লেখা ব্যানার ফেইসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। পরে সামনে আসে মিরপুর-১১ নম্বরের মামা ভাগিনা গোস্ত বিতানের ভিডিও।
চাপে পড়ে যারা বেশি দাম নিতেন, কমাতে শুরু করেন তারাও।
এর মধ্যে গত রোববার গরুর খামারি, মাংস ব্যবসায়ী, সুপার শপ ব্যবস্থাপক, ট্যারিফ কমিশন, বাজার বিশেষজ্ঞ ও ভোক্তা অধিকার কর্মীদের নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
মাংসের দামের সমস্যা বোঝার জন্য ওই সেমিনার আয়োজন করা হলেও সেখানে সুলভ মূল্য ও উচ্চ মূল্য নিয়ে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন মাংস ব্যবসায়ীরা।
যারা দাম কমাতে রাজি নন, তাদের দাবি, যারা মাংসের দাম কমিয়েছে তাদের পণ্যের ‘মান ভালো নয়’ এবং সেখানে হাড় ও চর্বির পরিমাণ বেশি।
সব শুনে খামারি ও মাংস ব্যবসায়ীদের একসঙ্গে বসে একটা দাম ঠিক করার পরামর্শ দেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান।
এরপর বুধবার ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন ও মাংস ব্যবসায়ী সমিতির একদল সদস্য বৈঠক করে প্রতিকেজি ৬৫০ টাকা দাম নির্ধারণের চেষ্টা করেন। তবে সেখানেও একদল মাংস ব্যবসায়ী আপত্তি জানান।
ওই বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরান হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা হিসাব করে দেখেছি, প্রতিকেজি ৬৫০ টাকা করে বিক্রি করলেও ব্যবসায়ীদের কেজিতে ৩০ টাকা করে লাভ থাকে।”
তবে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ রবিউল আলমের বক্তব্যেই এই দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “যেখানে ৫৯৫ টাকায় প্রতিকেজি মাংস বিক্রি হচ্ছে, সেখানে ৬৫০ টাকায় মাংসের দাম নির্ধারণ করাটা দুরভিসন্ধিমূলক। গরুর মাংস আরও কম দামে বিক্রি করা সম্ভব বলে আমরা মনে করি। খামারিরা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় দাম বেশি নির্ধারণের চেষ্টা করছে।”
আগামী রোববার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে গিয়ে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে কয়েকজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন।
ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরান বলেন, “বৃহস্পতিবারই ঢাকার অন্তত ৯০ শতাংশ মাংসের দোকানে ৬৫০ টাকার বিক্রি হওয়ার খবর পেয়েছি। অবশ্য দুই একটি জায়গায় আগের দামে বিক্রি হওয়ার খবরও এসেছে।”
‘কার লাভ দেখা হচ্ছে’
দাম যখন ক্রমেই কমছে, তখন একটি দাম নির্ধারণ করে দিয়ে কারা কার স্বার্থ দেখছে সেই প্রশ্ন রেখেছেন ঢাকার শান্তিনগরের জীবন আহমেদ। তিনি বলেন, “বাজারে কম দামে পণ্য বিক্রি হওয়ার সময় দাম আরও বাড়িয়ে নির্ধারণ করলে সেটা তো সাধারণ মানুষের পক্ষে গেল না।”
শামীম হোসেন নামে একজন ভোক্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “মুক্তবাজার অর্থনীতির দেশে দাম বাজারের ওপর নির্ভরশীল থাকছে না। বরং সরাসরি মাংসের ও গবাদি পশুর সাপ্লায়াররা ঠিক করে দিচ্ছে, প্রাইস ফিক্সিং হচ্ছে। এই ধারাটি চিনি, আটা ও চালের ক্ষেত্রেও দেখেছি। এই দেশে নাকি প্রতিযোগিতা কমিশন আছে, এর কোনো কাজ দেখা যায় না।”
জাকারিয়া হোসেন নামে আরেক ক্রেতা লিখেছেন, “জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রতি কেজি মাংস বিক্রি হয়েছে ৬৫০ টাকায়। গত সপ্তাহে ৬২০ টাকাতেও গরুর মাংস পাওয়া গেছে। কয়েকদিন থেকে হঠাৎ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মাংস ব্যবসায়ীরা গরুর মাংসের অধিক দাম নিয়ে বেশ তর্ক বিতর্ক করে। টিভিতে পত্রিকায় দেখি এক দাম, বাজারে আরেক দাম।
“আজ ঢাকার খোলা বাজারে এক মাসের জন্য গরুর মাংস প্রতি কেজি নির্ধারণ হয়েছে ৬৫০ টাকায়। আগে তাইলে কত ছিল? বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, এফবিসিসিআই, ভোক্তা অধিকার তাইলে ঘোষণা দিয়ে এত আলোচনা পর্যালোচনা করে কী ফলাফল এনে দিল?”
দাম বাড়ল কীভাবে?
মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল জানান, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে প্রতি রোজায় মাংসের দাম ঠিক করে দিত নগর কর্তৃপক্ষ। পরের মাসগুলোতে এই দরেই বিক্রি হত তা।
সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী ২০১৮ সালে মাংসের কেজি ছিল গড়ে ৪৩০ টাকা। সে বছর সিটি করপোরেশন দাম আর ঠিক না করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
রবিউল জানান, ২০১৯ সালে গরুর মাংসের দাম হয়ে যায় ৫০০ টাকা, ২০২০ সালে হয় ৬০০। ২০২১ সালে তা আরও বেড়ে হয়, ৬৫০, পরের বছর ৭০০ আর চলতি বছর তা ছুঁয়ে ফেলে ৮০০ টাকা।
তিনি বলেন, “দাম অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার কারণে বহু ভোক্তা মাংস খাওয়া এক প্রকার ছেড়েই দিয়েছে। প্রতি বছর ৬০ লাখের ওপর গরু জবাই হত, সেখানে এখন ৩০ লাখে নেমে এসেছে জবাই। এ পরিস্থিতিতে কিছু ব্যবসায়ী উদ্যোগী হয়ে কম দামে মাংস বিক্রি শুরু করে।”
ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, “প্রতিকেজি ৮০০ টাকা বিক্রির সময়ে মাংস ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফা করেছে। তারা এককেজি মাংসে অন্তত দেড়শ টাকা করে লাভ করেছে, যেটা কখনোই উচিত ছিল না। এর ফলে মানুষ ধীরে ধীরে মাংস খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে।“
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, “এখন দাম কমাতে পারলে মানুষ আবার মাংস খাওয়া শুরু করবে। একটার জায়গায় ১০টা গরু জবাই হবে। ভোক্তা-ব্যবসায়ী সবাই ভালো থাকবে।”
দাম বেঁধে দিলে লাভ কী?
দাম বেঁধে দিলে যে লাভ হয় না, তা ভোক্তারা দেখেছেন।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে যখন চালের দাম বাড়ছিল, সে সময় সরকার সর্বোচ্চ দর বেঁধে দেয়। কিন্তু লাভ হয়নি।
চলতি বছর যখন আলু, পেঁয়াজ আর ডিমের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল, সে সময় সর্বোচ্চ দর বেঁধে দেওয়া হয় এই তিনটি পণ্যেরও।
সেই দরে বিক্রি নিশ্চিত করতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে শুরু করে সরকারের নানা সংস্থা অভিযান কম চালায়নি।
শীত নামার আগে আগে এখন কমছে গরুর মাংস, মুরগির মাংস, ডিম, মাছ, সবজির দর। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, সরবরাহ বাড়ছে আর বাড়তি দরের কারণে চাহিদা কমছে, দুইয়ের ফল ফলছে একসঙ্গে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, “কয়েকজন ব্যবসায়ী ৬০০ টাকা করে মাংস বিক্রি শুরু করার পর দাম অটোমেটিকভাবে পড়ে যাচ্ছে। এর মানে হচ্ছে এতদিন দামটা অস্বাভাবিক বেশি ছিল। দাম কত হওয়া উচিত সেটা সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বসে ঠিক করতে পারেন।”
কিছু ব্যক্তির উদ্যোগে মাংসের দাম কমে এল; তাহলে সরকারি সংস্থাগুলো এতদিন কী করেছে– সেই প্রশ্ন রাখা হলে সফিকুজ্জামান বলেন, “গত জুলাই মাসে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আনুষ্ঠান আয়োজন করে এ বিষয়গুলো নিয়েই আমরা আলোচনা করেছিলাম। সেখান থেকে একগুচ্ছু সুপারিশ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো যেসব সংস্থার প্রয়োগ ঘটানোর কথা তারা ঘটায়নি।”
গরুর খামারিদের নেতা ইমরান হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডকমকে বলেন, “গরুর মাংসের দাম নির্ধারণের চেয়ে সরকারের পক্ষ থেকে মান নির্ধারণ করা বেশি জরুরি। এক কেজি মাংসে কতটুকু হাড় ও চর্বি থাকতে পারবে সেটা ঠিক করলে দিলে তা বাজার স্থিতিশীল করতে ভূমিকা রাখবে। কেউ ভোক্তাকে ঠকাতে পারবে না। আবার কেউ কম দামের নামে মানহীন মাংস খাওয়াতে পারবে না।
“সেজন্য অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আমরা প্রতিকেজি মাংসে ৭৫০ গ্রাম খাটি মাংস, ২০০ গ্রাম হাড় ও ৫০ গ্রাম চর্বি রাখার সুপারিশ করেছি।”
হাড়-চার্বি ও মাংসের মান নিয়ে খামারি ও মাংস ব্যবসায়ীদের এই প্রস্তাবকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখছেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাবের ট্রেজারার মো. মুঞ্জুর-ই-খোদা তরফদার। তবে প্রতিকেজি ৬৫০ টাকা দাম নির্ধারণ করা হলে তা ভোক্তাবান্ধব হবে বলে মনে করেন না তিনি।
মুঞ্জুর-ই-খোদা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাজারে ইতোমধ্যে ৫৯৫ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি চলছে এবং সেটা বেশ ভালোভাবেই সমাদৃত হয়েছে। যারা দাম নির্ধারণ করেছে তারাও একটা প্রেশার গ্রুপ। তবে এই দাম নির্ধারণের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের চড়ামূল্যের চক্রটা ভেঙেছে।”