“ফুটপাত থেকে দেখে কিনলে ভালো জিনিসও কেনা যায়,” বলেন এক ক্রেতা।
Published : 07 Apr 2024, 11:01 PM
ঢাকায় একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন শাহেদ আরেফিন। বায়তুল মোকাররম সংলগ্ন ফুটপাতে সন্তানের জন্য জামা কিনছিলেন তিনি।
কর্মস্থলের নাম শুনে ফের প্রশ্ন করায় বলে উঠলেন, “ফুটপাত এখন সর্বজনীন কেনাকাটার জায়গা ভাই।”
নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জীবনযাপনে যে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাও উঠে এলো শাহেদের কথায়।
“মূল্যস্ফীতি এত বেড়েছে যে, খোঁজ নিলে দেখবেন আরও অনেকেই এখন ফুটপাত থেকে কেনাকাটা করেন।”
রোববার রাজধানীর বায়তুল মোকাররম, গুলিস্তান, মহাখালীর ফুটপাত ঘুরে নানা শ্রেণির মানুষকে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে।
রমনা মার্কেটের সামনের ফুটপাতে জুতা দেখছিলেন বেসরকারি চাকুরে হাশেম সরকার।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বেতন-বোনাস পেলাম দেরি করে, তাই কেনাকাটা করতেও একটু দেরি হয়ে গেল। পরিবারের সবার জন্য কিনেছি। ফুটপাত এবং মার্কেট দুই জায়গা মিলিয়েই কিনলাম।”
ছোট ভাইয়ের জন্য প্যান্ট দেখছিলেন রুস্তম সওদাগর।
অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বললেন, “ফুটপাত থেকে দেখে কিনলে ভালো জিনিসও কেনা যায়। আর আমি স্বল্প আয়ের মানুষ। একটু কম দামেও কেনা যায়। তাই এখান থেকে কেনা।”
ঈদের আগ মুহূর্তে বিক্রিবাট্টা নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে দেখা গেছে বিক্রেতাদের।
বায়তুল মোকাররম এলাকার পোশাক বিক্রেতা আবদুল হামিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত কয়েকদিনের তুলনায় আজ বিক্রি বেড়েছে। আসলে এই কয়েকটা দিনের ব্যবসায়ের জন্যই তো আমরা অপেক্ষা করে থাকি। সারা বছর তো আর এরকম বিক্রি হয় না।”
গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের ফুটপাতের ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন, “আজ প্রায় ১০ হাজার টাকা বিক্রি করলাম। মূলত ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটার জন্যই। এমনিতে বেচাকেনা এত হয় না।
“আগামীকাল, পরশু আরেকটু বাড়বে আশা করি। শেষ সময়ে অনেকেই কেনাকাটা করেন।”
মহাখালী কাঁচাবাজার সংলগ্ন ফুটপাতেও সন্ধ্যার পরও বেশ ভিড় দেখা গেছে। সেখানে ফুটপাতের পাশাপাশি ভ্যানেও পোশাক, জুতা বিক্রি হতে দেখা গেছে।
সেখানে কথা হচ্ছিল পোশাক কর্মী হোসাইন সাগরের সঙ্গে।
তিনি বলেন, “মার্কেটে গেলে জামাকাপড়ের দাম চায় দ্বিগুণ, তিনগুণ। তাই আমাদের ফুটপাতই ভরসা।”
এই এলাকার ব্যবসায়ী কাদের হাওলাদার বলেন, “আজকে আল্লাহর রহমতে বিক্রি বেড়েছে দুইদিনের তুলনায়। গত কয়েকদিনের মধ্যে আজকেই বেশি বেচাকেনা হয়েছে। আমার দোকানে শার্ট-প্যান্ট বিক্রি করি।
“ঈদের আগের দিন পর্যন্ত বিক্রি আরেকটু বাড়বে আশা করি। রোজার ঈদটাই তো বেচাকেনার। কোরবানি ঈদে মানুষ তো গরু কেনে শুধু।”