বাংলাদেশ ব্যাংকের পুরো সোনা বিক্রির আবদার!

প্রতিদিন কমপক্ষে প্রায় ২০০ কোটি টাকার অবৈধ সোনার অলংকার ও বার চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছে, দাবি বাজুসের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2022, 05:28 PM
Updated : 24 Nov 2022, 05:28 PM

চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত জব্দ সোনার সবটাই বাজারে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।

বৃহস্পতিবার মতিঝিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সঙ্গে সভা শেষে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলিপ কুমার আগারওয়ালা এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে থাকা সব সোনা বিক্রি করতে প্রস্তাব দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে বাজারে এখন সোনার বাড়তি চাহিদা থাকার কথা বলেন তিনি।

চোরাচালান বা অবৈধ পথে আসা বিভিন্ন সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সংস্থার অভিযানে আটকের পর তা বাংলাদেশ ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা হয়।

সময়ে সময়ে তা থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু বিক্রি করে থাকে। এক দশক পর গত ৩ নভেম্বর সেখান থেকে ২৫ দশমিক ৩১ কেজি সোনা বিক্রির কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এর আগে সর্বশেষ ২০০৮ সালের জুলাই মাসে প্রায় ২২ কেজি সোনা নিলামে বিক্রি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার বিএফআইইউ এর সঙ্গে সভায় বাজুসের এ প্রস্তাবের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বা বিএফআইইউ কর্মকর্তারা মন্তব্য করতে চাননি।

রাতে বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। সভায় ‘মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ‘‘ বৈঠকে বাজুস লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছে, প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ত-ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপব্যবহার করে সারাদেশের জল, স্থল ও আকাশ পথে প্রতিদিন কমপক্ষে প্রায় ২০০ কোটি টাকার অবৈধ সোনার অলংকার ও বার চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছে, যা বছরে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা ।’’

বৈঠক শেষে সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের কোনো তথ্য বাজুসের কাছে আছে কি না জানতে চাইলে সংগঠনের সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এরকম তথ্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কাস্টমস ও গোয়েন্দা সংস্থার কাছে থাকতে পারে।’’

স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে বাজুসের কোনো সদস্য জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সদস্যর বিরুদ্ধে চোরাচালানের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কোনো তথ্য পায়নি কোনো সরকারি সংস্থা বলে দাবি সংগঠনটির।

অবৈধভাবে সোনার বার আনা বন্ধ করা সম্ভব হলে মানি লন্ডারিং কমে যাবে বলে মনে করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ আগরওয়ালা।

সভায় বাজুস সাতটি প্রস্তাব দেয় বিএফআইইউকে। এরমধ্যে সোনা চোরাচালান ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ এবং চোরাকারবারিদের চিহ্নিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাজুসের সমন্বয়ে যৌথ মনিটরিং সেল গঠন করা, চোরাকারবারি ঠেকাতে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে আরও কঠোর আইন প্রণয়ন করা।

Also Read: বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে তুলবে ২৫ কেজি সোনা