Published : 29 Apr 2025, 07:36 PM
সাম্প্রতিক সময়ে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ কোম্পানি বলেছে, একটি ‘স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ হয়ে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি এবং এর অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান ও পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের সম্পৃক্ত করে ‘এসব তথ্য ছড়াচ্ছে’।
সম্প্রতি এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির বিরুদ্ধে সোনার পদকে ‘ভেজাল’, সিআরআই সংশ্লিষ্টতা, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও মুজিববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান আয়োজনে ‘দুর্নীতি’, জয়বাংলা কনসার্টের আয়োজন ও বিজ্ঞাপনের বাজার ‘দখল’সহ নানা অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
এসব অভিযোগের কথা তুলে ধরে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি বিবৃতিতে বলেছে, “সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া আনা এসব অভিযোগ এশিয়াটিকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।”
সেই সঙ্গে এসব অভিযোগকে ‘অপপ্রচার’ এবং ‘বিভ্রান্তিকর’ আখ্যায়িত করা হয়েছে তাদের বিবৃতিতে।
সেখানে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়ক, রাজনীতিবিদ, দার্শনিক, শিল্প-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, বিশিষ্ট নাগরিক ও সংগঠনকে সম্মাননা দিতে যে সোনার ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছিল, তা সরবরাহ করেছিল অন্য একটি প্রতিষ্ঠান। এ আয়োজনে এশিয়াটিক শুধুমাত্র ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করেছে।”
আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সিআরআইয়ের সঙ্গে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি, এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইরেশ যাকের কিংবা কোনো অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের ‘কোনো সম্পর্ক নেই’ বলে এ কোম্পানির ভাষ্য।
ওইসব কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছে দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, “স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও মুজিব বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান সরকারি ক্রয় দরপত্র আহ্বানের আওতায় অনুষ্ঠিত হয়। এক্ষেত্রে, যথাযথ দরপত্র পদ্ধতির অধীনে প্রাক-যোগ্যতা প্রক্রিয়া ও সর্বনিম্ন মূল্যায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে অনুষ্ঠান আয়োজনে দায়িত্ব দেয়া হয়। এশিয়াটিক শুধু ইভেন্ট আয়োজন, সরঞ্জাম ও সংশ্লিষ্ট সেবা সরবরাহ করে। এক্ষেত্রেও, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে।”
বিজ্ঞাপন ও কমিউনিকেশনস খাতে সেবা প্রদানে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির ‘একচেটিয়া বাজার আধিপত্য নেই’ দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এ শিল্পখাতের বিভিন্ন সেবাখাতে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি অন্যান্য এজেন্সির সাথে প্রতিযোগিতা করে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে।”
জয় বাংলা কনসার্ট আয়োজনের সাথে এশিয়াটিকের ‘সম্পর্ক নেই’ দাবি করে বলা হয়, “বিগত বছরগুলোতে যতগুলো জয় বাংলা কনসার্ট আয়োজিত হয়েছে, তা আয়োজন করেছে শীর্ষস্থানীয় অন্য দুটি প্রতিষ্ঠান (এজেন্সি)। এ কনসার্ট আয়োজনের সাথে এশিয়াটিক ইভেন্টস বা এশিয়াটিকের কোনো অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।”
ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আগে কোনো নোটিস দেওয়া হয়নি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীনে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের (সিআইসি) নির্দেশে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির অধীনস্থ ১৭টি প্রতিষ্ঠান এবং এর পরিচালনা পর্ষদের ৬ জন পরিচালক ও ২ জন কর্মকর্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়। এ বিষয়ে কোনো প্রকার পূর্ব নোটিস অথবা সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি এশিয়াটিককে প্রদান করা হয়নি।
“যেহেতু এক্ষেত্রে অভিযোগের ব্যাপারে সংবাদে অথবা ব্যাংক হতে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগের উল্লেখ ছিল না, তাই এশিয়াটিকের ট্যাক্স ও লিগ্যাল টিম সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি সবিস্তারে জানার চেষ্টা করে।”
গত পাঁচ বছরে এশিয়াটিক ভ্যাট, কর ও অন্যান্য ফি হিসেবে জাতীয় কোষাগারে ৭৫০ কোটি টাকার বেশি জমা দিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে বিবৃতিতে।
সেখানে বলা হয়, “বর্তমানে এশিয়াটিকে ৭শ’র বেশি স্থায়ী কর্মী এবং দেশজুড়ে প্রায় চার হাজার চুক্তিভিত্তিক কর্মী রয়েছে। আকস্মিকভাবে এশিয়াটিকের প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক হিসাব জব্দ করার ফলে এসব কর্মীদের চরম ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে।”