এখন দলাদলির সময় নয়: চীনের রাষ্ট্রদূত

লি জিমিং বলেছেন, তার দেশ চায় সব দেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2022, 05:18 PM
Updated : 5 Dec 2022, 05:18 PM

ইউরোপের মতো বিপর্যয় থেকে এশিয়াকে রক্ষায় দেশগুলোকে একত্রে কাজ করায় জোর দিয়েছেন বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। তিনি বলেছেন, কারও উচিৎ হবে না অন্য দেশের বিরুদ্ধে কোনো উপদল বা জোট তৈরি করা।

সোমবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন এই চীনা কূটনীতিক।

লি জিমিং বলেন, “আমাদের উচিৎ হবে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী অন্যান্য দেশ, ভারত, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে যথাসম্ভব চেষ্টা করা, যাতে এ ধরনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তেমন পরিস্থিতি যেন এই অঞ্চলে, এশিয়ায় না ঘটে। এটাই আমরা চাই এবং এটাকেই উদ্বুদ্ধ করছে চীন।”

চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, “আমার পরামর্শ হচ্ছে, সবার সঙ্গেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখা উচিৎ। কারও উচিৎ হবে না অন্যের বিরুদ্ধে কোনো ছোট উপদল বা গ্রুপ তৈরি করা। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কথা বললে, আমরা দেখতে পাচ্ছি ইউরোপে কী ঘটছে। এটা খুব সম্পদশালী মহাদেশ, দেখুন সেখানে কী ঘটছে।”

রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পে গার্ডার দুর্ঘটনা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে লি জিমিং বলেন, চীনের প্রতিষ্ঠান এই দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েছে। এ শিক্ষা থেকেই ভবিষ্যতে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এরকম দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে।

গত ১৫ অগাস্ট ঢাকার উত্তরায় বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পে গার্ডার পড়ে হতাহতের ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে ‘চায়না গ্যাঝুবা গ্রুপ করপোরেশন (সিজিজিসি)’।

লি জিমিং বলেন, “ওই দুর্ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং এটা আমরা মেনেও নিয়েছি। তবে আমরা ওই দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েছি। আমি মনে করি, সবাই এখান থেকে শিক্ষা নিয়েছে। এই দুর্ঘটনার শিক্ষা আমরা ভবিষ্যতের প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজে লাগাতে পারব। আমি বিশ্বাস করি এই শিক্ষা থেকে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে।”

রাষ্ট্রদূত লি বলেন, “চীনা প্রেসিডেন্টে শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের পর বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে যৌথ কৌশলগত অংশীদারিত্বভিত্তিক উন্নয়নকে আরও উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাকে এখানে পাঠানো হয়। আমি মনে করি, আমার ৩ বছর ৪ মাসের মেয়াদে আমি এখানে অনেক কিছুই অর্জন কতে সক্ষম হয়েছি।”

কোভিড-১৯ মহামারীর সময়েও চীন বাংলাদেশের উন্নয়নে পাশে ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “কোভিডের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমরা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে অনেক প্রকল্প সম্পন্ন করেছি।

“আমরা অধিকাংশ প্রকল্পই ইতোমধ্যেই শেষ করতে পেরেছি এবং আরও বেশ কিছু শেষ হওয়ার পথে রয়েছে। আগামী বছরের মধ্যেই এসব প্রকল্প শেষ হওয়ার পথে রয়েছে।”

এই রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, “আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের জন্য আরও অনেক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ আরও অনেক কিছুই অর্জন করতে পারবে।”

চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ঐতিহাসিক এবং এই বন্ধুত্ব হাজার বছরের পুরানো মন্তব্য করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “চীন বাংলাদেশের বিখ্যাত প্রতিবেশি। ভারত, জাপান, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেই আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চাই।

“আমাদের সবার মধ্যে সুসম্পর্ক, ব্যবসা এবং উন্নয়নের মাধ্যমে আমাদের জনগণের জীবন মান উন্নয়ন করাই আমাদের লক্ষ্য।”