ঋণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় থাকা বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংকের সর্বশেষ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহমুদ হাসান পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের কাছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এমডি মেহমুদ হোসেন যে পদত্যাগপত্র ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের কাছে জমা দিয়েছেন, তার একটি অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগেও পাঠিয়েছেন।
“নিজস্ব শর্ত দিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দিয়ে থাকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। তার নিয়োগ বাতিল বা পদত্যাগপত্র গ্রহণ বিষয়ে পর্ষদ সিদ্ধান্ত নেবে। এখন আমরা অপেক্ষা করব এমডি বিষয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ কী সিদ্ধান্ত নেয়। তারপর বাংলাদেশ ব্যাংক দেখবে বিষয়টি নিয়ম মাফিক হয়েছে কি না বা আইনের কোনো ব্যত্যয় হয়েছে কি না।”
গত বুধবার রাতে ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহমুদ হোসেন পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যান। অফিস ছাড়ার আগে তিনি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন।
ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবারও এমডির পদত্যাগের খবর জানতেন না, রোববার সকালে সংবাদ মাধ্যমের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছেন তারা। ব্যাংকের নির্বাহী পর্যায় থেকে শুরু করে পরের দিকের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছুটিতে রয়েছেন।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকটির পর্ষদে রয়েছে সিকদার গ্রুপের কর্তৃত্ব। বর্তমানে ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে মনোয়ারা সিকদার। নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান সংসদ সদস্য পারভিন হক সিকদার।
ঋণে অনিয়মের খবর আলোচনায় আসার পর বাংলাদেশের প্রথম প্রজন্মের এই বেসরকারি ব্যাংকে গত প্রায় এক দশকে কোনো ব্যবস্থাপনা পরিচালকই মেয়াদ শেষ করতে পারেননি।
২০২১ সালেও তিন মাসের বেশি সময় ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদটি শূন্য ছিল। তখন ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিয়ে ব্যাংকটি পরিচালিত হয়ে আসছিল।
ঢাকা স্টক এক্সেচেঞ্জে (ডিএসই) জমা দেওয়া ব্যাংকটির অনীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির ঋণস্থিতি ৪১ হাজার ৮৩৭ কোটি টাকা। ২০২২ সালের প্রথম ৯ মাসে ব্যাংকটি লোকসান গুণেছে ৩৮৬ কোটি টাকা। শেয়ার প্রতি লোকসান (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ২০ পয়সা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরের শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা, খেলাপি ঋণের হার ২৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
রোববার ডিএসইতে ব্যাংকটির শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৮ টাকা ২০ পয়সায়।