বিজিএমইএ নির্বাচনে ভোট চলছে

বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদের ৩৫ পরিচালককে বেছে নিতে ভোট দিচ্ছেন মোট ২ হাজার ৪৯৬ ভোটার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2024, 07:38 AM
Updated : 9 March 2024, 07:38 AM

দেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদের নতুন নেতৃত্ব বেছে নিতে ভোটগ্রহণ চলছে।

ঢাকার উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্স ও চট্টগ্রামের খুলশীতে সংগঠনটির অফিসে শনিবার সকাল ১০টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে।

দ্বিবার্ষিক এই নির্বাচনে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মোট ৩৫টি পরিচালক পদের বিপরীতে লড়ছেন ৭০ প্রার্থী। এর মধ্যে ঢাকা থেকে নির্বাচিত হবেন ২৬ জন এবং চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে নির্বাচিত হবেন নয়জন।

নির্বাচনে ‘ফোরাম’ ও ‘সম্মিলিত পরিষদ’ নামে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। সম্মিলিত পরিষদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেহা ডিজাইন লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং বিজিএমইএর বতর্মান সিনিয়র সহ-সভাপতি এসএম মান্নান কচি। তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

আর ফোরামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সুরমা গার্মেন্টসের পরিচালক ফয়সাল সামাদ। তিনি বর্তমান কমিটির পরিচালক। একবার সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালনও করেছেন।

ভোট কেমন চলছে জানতে চাইলে ফোরাম লিডার ফয়সাল সামাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভোটের পরিবেশ ভালো রয়েছে। এভাবে ভোটগ্রহণ চললে জয়ের ব্যাপারের শতভাগ আশাবাদী।”

তবে ভোট গণনা নিয়ে ‘সংশয়’ প্রকাশ করে ফয়সাল বলেন, “প্রভাব বিস্তারের শঙ্কা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন শক্ত অবস্থান নিলে সুষ্ঠু পরিবেশ থাকবে। আমরা চাই ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হয়ে আসুক।”

অপরদিকে সম্মিলিত পরিষদ সদস্য সচিব সালাম মুর্শেদী বলেন, “আমরা নির্বাচনে এসেছি। কিন্তু দিন শেষে সবাই ব্যবসায়ী। সবাই আমরা একে অপরের সহযোগী।”

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ভোট দিয়ে বলেন, “প্রার্থীদের যোগ্যতা বিবেচনা করবেন সম্মানিত ভোটার এবং পোশাক শিল্পের মালিকরা। বিজিএমইএ শুধু ব্যবসায়ীদের সংগঠন সেটি নয়, বরং এটি লাখ লাখ লোকের কর্মসংস্থান তৈরি করছে। দেশের ৮০ শতাংশ রপ্তানিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে বিজিএমইএ। সেজন্য এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।“

মেয়র বলেন, “সবাই তাকিয়ে আছে যে একটু সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। পোশাক শিল্পের নেতৃত্বে যারা আসবেন তাদেরকে ডেডিকেটেড হতে হবে। পোশাক শিল্পের অগ্রযাত্রা ধরে রাখার জন্য দুই বছর আত্মত্যাগ করতে হবে। এটি এমন একটি সংগঠন যেখানে দেশি এবং আন্তর্জাতিক অনেক বিষয় জড়িত।

“তাছাড়া বাংলাদেশের পোশাক শিল্প সারা বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বিশ্বের এমন কোনো দেশ নেই, যেখানে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেখা পোশাক পৌঁছায়নি। এমন কোনো স্টোর নেই, যেখানে বাংলাদেশের পোশাক বিক্রি হয় না। সব মিলিয়ে আজকে নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

এবারের নির্বাচনে দুটি প্যানেলের প্রায় এক তৃতীয়াংশ প্রার্থী পারিবারিক ব্যবসার উত্তরাধিকারী বা তরুণ প্রতিদ্বন্দ্বী। ভোটার রয়েছেন ২ হাজার ৪৯৬ জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ২ হাজার ৩২ জন ও চট্টগ্রামে ৪৬৪ জন।

এই নির্বাচনের মাধ্যমে পরিচালক নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের মধ্য থেকে সংগঠনের সভাপতি, প্রথম সহ-সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং দুজন সহ-সভাপতির নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হবে। তাদের মনোনয়ন বাছাই শেষে ১৯ মার্চ চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন।

নেতা নির্বাচন নিয়ে আপত্তি থাকলে আপিলের সুযোগও আছে। সেক্ষেত্রে আপিল নিষ্পত্তির পর ২৮ মার্চ চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হবে, যারা ২০২৪-২৬ মেয়াদের জন্য দায়িত্ব নেবেন।

সবশেষ বিজিএমইএ নির্বাচন হয় ২০২১ সালে। ওই ভোটে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৩৫ পরিচালকের ২৪টিতে জয়ী পায় সম্মিলিত পরিষদ। সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক হাসান। আর ওই নির্বাচনে এবিএম সামছুদ্দিনের নেতৃত্বাধীন ফোরাম পায় ১১টি পরিচালক পদ।

২০২৩ সালের এপ্রিলে এই পরিচালনা পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দুই দফায় তারা এক বছর সময় বাড়িয়ে নেয়। ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪-২৬ মেয়াদে বিজিএমইএ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।

তার আগে ৪ ডিসেম্বর বিজিএমইএর নির্বাচনি বোর্ড গঠিত হয়। বোর্ডের চেয়ারম্যান হন বিটিএমএ’র সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামিন। অন্য সদস্যরা হলেন এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইকাব) সভাপতি শমী কায়সার ও ইকাবের সাবেক সভাপতি এ.এস.এম. নাঈম।

সেদিনের সভায় বিজিএমইএ একটি আপিল বোর্ডও গঠন করে। এ বোর্ডের চেয়ারম্যান হন এমসিসিআইর সভাপতি কামরান টি. রহমান। অন্য সদস্যরা হলেন, এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি খায়রুল হুদা চপল ও পরিচালক নিজামুদ্দিন রাজেশ।