দুই দশক পর বাংলাদেশ থেকে ৩০ হাজার কর্মী নিতে যাচ্ছে ইরাক।
Published : 31 Aug 2013, 02:11 PM
শনিবার এই সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই হলেও কোন খাতে কাজের জন্য কর্মী পাঠানো হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
মালয়শিয়ায় যেতে নিবন্ধিতদের মধ্যে থেকে বাছাই করে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে কর্মী পাঠানো হবে বলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন।
সকালে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে বাংলাদেশ ও সফররত ইরাকের একটি প্রতিনিধি দলের মধ্যে শ্রমিক নেয়ার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়।
ইরাকের শ্রমমন্ত্রী নাসের আল রুবাইয়েত এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ হোসেন দুই দেশের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ইরাক সরকার বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩০ হাজার দক্ষ শ্রমিক নেয়ার চাহিদাপত্র দিয়েছে।
“খুব কম খরচে ইরাক যাওয়ার সুযোগ পাবেন বাংলাদেশি কর্মীরা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ইরাকই প্রথম জনশক্তি আমদানি করে। তবে ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের পর কর্মী পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়।
২০০৩ সালে বহুজাতিক বাহিনীর ইরাক অভিযানের পর থেকে দেশটি এখনো অস্থিতিশীল।
মন্ত্রী বলেন, ইরাক দক্ষ, শিক্ষিত ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনশক্তি নিতে চায়।
আগামী ৮ সেপ্টেম্বর ইরাকের একটি প্রতিনিধি দল আসবে, যারা জনশক্তি রপ্তানি ব্যুরোর ডাটাবেইজ, মিরপুর ও কোরিয়ান সেন্টারে কর্মী প্রশিক্ষণ কার্যক্রম দেখবে।
খোন্দকার মোশাররফ বলেন, কর্মীদের বিভিন্ন বিষয় দেখার পর প্রথম ধাপে এক হাজার কর্মী নেবে ইরাক।
“মালয়শিয়ায় পাঠানোর জন্য যে সাড়ে ১৪ লাখ শ্রমিক রেজিস্ট্রেশন করেছে, তাদের থেকে বাছাই করে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ইরাকে লোক পাঠানো হবে।”
মালয়শিয়ায় সরকারিভাবে কর্মী পাঠানো হলেও ইরাকের ক্ষেত্রে কী হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে মন্ত্রী জানান।
তবে ইরাকি মন্ত্রী নাসের আল রুবাইয়েত বলেন, সরকারি-বেসরকারি দুই পর্যায়েই জনশক্তি আমদানি করতে চান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এ সমঝোতার মাধ্যমে দুই বন্ধু দেশের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোরদার হবে।
“একই সাথে দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে ইরাকে যাওয়া বন্ধ হবে।”
বাংলাদেশ থেকে ইরাকে যেতে কর্মীদের অন্তত দুই বার বিমান পরিবর্তন করতে হয়, যা পরিবহন খরচ বাড়িয়ে দেয়।
এ বিষয়ে ইরাকের মন্ত্রী বলেন, “আমরা বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে ঢাকা-বাগদাদ সরাসরি ফ্লাইটের মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেছি।”
কর্মীদের শতভাগ মানবাধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, “যদি কোনো কর্মী হয়রানির শিকার হয়, তাহলে ১৯৬২ সালের আইন অনুযায়ী যথাযথ ক্ষতিপূরণ পাবে।”
বাংলাদেশ থেকে ইতোমধ্যে কিছু চিকিৎসক ইরাক গেছেন। ভবিষ্যতে আরো এক হাজার নার্স নেয়ার আগ্রহের কথা জানান ইরাকি মন্ত্রী।
শুধু জনশক্তি নয়, বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাদা চুক্তি হতে যাচ্ছে বলে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া প্রথম আরব দেশটির শ্রমমন্ত্রী জানান।
সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণ সচিব জাফর আহমেদ খান এবং ইরাকে নিযুক্ত বাংলাদেশের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জিয়াদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।