আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের বৃহত্তম অংশীদার চীনের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির করার উপর জোর দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।
Published : 28 Sep 2021, 09:57 PM
বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়ার পর যেসব বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে তা মোকাবেলা চীনের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তির প্রস্তাব করেন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন।
মঙ্গলবার ঢাকায় এক আলোচনায় তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের বৃহত্তম অংশীদার চীনের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হলে, এলডিসি পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। দেশটির সঙ্গে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনা সহজ হবে।
বাংলাদেশ প্রতিবছর সামগ্রিক আমদানির প্রায় ২০ শতাংশ পণ্য চীন থেকে আনে, সেই চীনে বাংলাদেশের রপ্তানি ১ শতাংশেরও অনেক নিচে।
২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের আমদানি করা ৫০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য মধ্যে চীন থেকে এসেছে ১১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। অন্যদিকে একই বছর চীন সারা বিশ্ব থেকে ২৪০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করলেও বাংলাদেশ দেশটিতে পাঠাতে পেরেছে মাত্র ৬০০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য।
চায়না-বাংলাদেশ ইকোনমিক অ্যান্ড ট্রেড কো-অপারেশন ফোরাম ২০২১ এবং চাইনিজ এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিইএবি) এর সপ্তম কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির কথা বলেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
ভাচুয়াল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ১ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলারের চীনা বিনিয়োগ এসেছে। এফটিএ হলে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চীনা উদ্যোক্তাদের আস্থা আরও বাড়বে।
বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করতে সরকারের দেওয়া কর অবকাশ সুবিধা, ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত হ্রাসকৃত হারে আয়কর, করমুক্ত রপ্তানি আয়, ক্যাপিটাল মেশিনারিজ ও কাঁচামাল আমদানিতে হ্রাসকৃত আমদানি শুল্কের কথা তুলে ধরেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ খুঁজে বের করতে গবেষণা প্রকল্প হাতে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জসিম বলেন, শিল্পক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তি আদান প্রদান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, পরিবহন, চামড়া, প্লাস্টিক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, কৃষি এবং বায়ো-টেকনোলজি খাতে চীনা উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল নজরুল ইসলাম ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বক্তব্য রাখেন।
ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান, বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি গাজী গোলাম মর্তুজা, সিইএবি’র সভাপতি কে চ্যাংলিয়াং, সংগঠনটির অনারারি লাইফ প্রেসিডেন্ট লিন ওয়েইকিয়াংসহ অন্যান্যরা অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।