তামাক পণ্যে ৩% সারচার্জ আরোপের সুপারিশ

নতুন বাজেটে তামাকপণ্যের ওপর কর বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত তিন শতাংশ সারচার্জ আরোপ করা হলে সরকার অতিরিক্ত ১১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পেতে পারে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2020, 03:23 PM
Updated : 7 June 2020, 03:57 PM

বাড়তি এই অর্থ করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় কাজে লাগানো যেতে পারে বলে মত এসেছে এক ভার্চুয়াল সেমিনারে।

রোববার ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ মঞ্চ’ নামের একটি এই সেমিনারের আয়োজন করে বলে সংগঠনটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

সংগঠনের সভাপতি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী সেমিনার সঞ্চালনা করেন।

সেমিনারের শুরুতে তামাক কর বৃদ্ধির বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পাঠানো সুপারিশের আলোকে আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন এবং তামাক-কর ও মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।

প্রস্তাবে বলা হয়, সিগারেটের চারটি মূল্যস্তরের পরিবর্তে দুইটি এবং সব ধরনের তামাকজাত দ্রব্যে সম্পূরক শুল্কের পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট শুল্ক আরোপ করতে হবে। এটি বাস্তবায়ন করা হলে সম্পূরক শুল্ক এবং ভ্যাট বাবদ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত রাজস্ব অর্জিত হবে।

অন্যদিকে, তামাক ব্যবহারে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই তামাকপণ্যের ওপর অতিরিক্ত তিন শতাংশ সারচার্জ আরোপ করা যেতে পারে, যা থেকে প্রায় আরও এক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করা সম্ভব হবে।

সেমিনারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কাজ করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দেশে তামাক ব্যবহার কমলেও এখনও পৌনে চার কোটি লোক তামাক ব্যবহার করে। সরকার তামাক খাত থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব পায়, তার চেয়ে বেশি অর্থ তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়ে যায়। তাই তামাকজাত দ্রব্যের কর বাড়াতে হবে।

“আর কর বাড়ালে অনেকে উচ্চ মূল্যস্তরের পরিবর্তে নিম্ন মূল্যস্তরের সিগারেট ব্যবহার শুরু করেন। এজন্য সিগারেটের মূল্যস্তর চারটা থেকে কমিয়ে দুইটা করতে হবে। অন্যদিকে অনেক জর্দা-বিড়ি কারখানা করজালের আওতায় নাই বিধায় তাদেরকেও কার্যকর উপায়ে করজালের আওতায় আনা প্রয়োজন।”

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় এখনও আমাদের দেশে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ অনেক কম। তাই তামাক থেকে আয় হওয়া রাজস্বের একটি অংশ স্বাস্থ্য খাতে দিতে হবে।”

ভার্চুয়াল এই সেমিনারে অংশ নেওয়া সংসদ সদস্যরা তামাক কর বৃদ্ধির বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে সমর্থন জানান। তামাক কর বৃদ্ধির পাশাপাশি তারা কৃষকদের তামাকের পরিবর্তে অন্যান্য শস্য ও অর্থকরী ফসল চাষে উৎসাহ ও প্রণোদনা দেওয়া এবং তামাক শিল্পের সাথে জড়িত শ্রমিকদের পুনর্বাসনের জন্য অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে মত দেন।

সেমিনারে অংশ নেন সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, আব্দুল মতিন খসরু, হাসানুল হক ইনু, হাবিবে মিল্লাত, ওয়াসিকা আয়শা খান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, খাদিজাতুল আনোয়ার, মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী এবং অপরাজিতা হক।

অন্যদের মধ্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিকসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও এতে অংশ নেন।