বিজিএমইএ নির্বাচন: আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ স্বাধীনতা পরিষদের

পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে হামলার মুখে পড়ার অভিযোগ করেছে স্বাধিনতা পরিষদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2019, 08:43 AM
Updated : 2 March 2019, 02:29 PM

শনিবার বিজিএমইএ ভবনে এই ‘হামলার’ সময় মনোনয়নপত্র জমার প্রমাণপত্রও ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম।

তবে এই ধরনের হামলার কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের এই সমিতির নির্বাচনী পরিচালনা কর্তৃপক্ষ।

‍দুই বছর মেয়াদী বিজিএমএমইএর পরিচালনা পর্ষদের নেতৃত্ব বাছাইয়ে প্রায় পাঁচ বছর পর আগামী ৬ এপ্রিল নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

২০১৫ সালে সংগঠনটির দায়িত্বে আসা সিদ্দিকুর রহমান নেতৃত্বাধীন পর্ষদের মেয়াদ কয়েক ধাপে বাড়িয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

আগামী ৬ এপ্রিল ৩৫টি পরিচালক পদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী, শনিবার ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। প্রত্যাহারের শেষ দিন রাখা হয়েছে আগামী ৬ মার্চ।

২০১৫ সালে বিজিএমইএর নেতৃত্ব নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়ার পর প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি প্যানেল সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম সমঝোতার মাধ্যমে বর্তমান সভাপতি সিদ্দিকুরকে সভাপতি করে একটি পরিচালনা পর্ষদ ঠিক করেছিল।

সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের আধিপত্য ভাঙতে আলাদাভাবে প্যানেল দিতে যাচ্ছে স্বাধীনতা পরিষদ।

জাহাঙ্গীর শনিবার দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারা অন্তত ৪০ জন কারাখানা মালিক মনোনয়নপত্র দাখিল করতে গিয়েছিলেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের পর ফেরার পথে তাদের উপর হামলা হয়।

হামলাকারী হিসেবে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারা কোনো কারখানার মালিক না হলেও গত ৩/৪ বছর ধরে বিজিএমইএতে ঘোরাফেরা করছে।”

এই হামলার পেছনে বিজিএমইএর কারও ইন্ধন রয়েছে বলে ইঙ্গিত করেন জাহাঙ্গীর।

তিনি বলেন, “এরা কার অনুসারী, পোশাক মালিকরা তা ভালো করেই জানেন। আমি এই মুহূর্তে কারও নাম উল্লেখ করতে চাই না।”

হামলার বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের একজন সদস্যকে জানানো হয়েছে বলে জানান জাহাঙ্গীর।

যোগাযোগ করা হলে নির্বাচনী বোর্ডের সচিব মেজর রফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজকে অনেকেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসেছিল। স্বাধীনতা পরিষদের উনারাও এসেছেন। কিন্তু কারও ওপর হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ পাইনি। কিংবা এ ধরনের কোনো খবর শুনিনি।”

হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

হামলার প্রতিবাদে বিকালে কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন বিজিএমইএর কয়েকশ সদস্য।

মানববন্ধনে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, স্বাধীনতা পরিষদের পক্ষে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে প্রাপ্তি স্বীকার পত্র ( রিসিভড কপি) নিয়ে বিজিএমইএর নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত কক্ষ হতে বের হবার পর আহাদ আনসারি, আমজাদ হোসেন, ফিরোজ, লিটনসহ কিছু মুখচেনা সন্ত্রাসী  নির্বাচন কমিশন কার্যালয় কক্ষের বাইরে দাখিল করা নমিনেশনের রশিদ ছিনিয়ে নেয় ও প্রতিনিধিদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।

তিনি বলেন, “নানাভাবে তাদের প্যানেলকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চাচ্ছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। সবকিছুতে ব্যর্থ হয়ে এখন সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে।” 

হামলায় বিজিএমইএ সদস্য এম এইচ মোশতাক চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম, শাহজাহান শেখ, আতিনুর রহমান এবং মো.আকরাম আলি আক্রান্ত হয় বলে পরিষদের নেতারা জানান। 

মানববন্ধনে শরীফুল আলম চৌধুরী নামের এক প্রার্থী বলেন, ৭০ জনের মতো কারখানা মালিক মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু হাঙ্গামার পরিস্থিতি দেখে তারা চলে গেছেন।

জাহাঙ্গীর বলেন, নানাভাবে তাদের প্যানেলকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চাচ্ছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। সবকিছুতে ব্যর্থ হয়ে এখন সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। 

হামলার ঘটনায় হাতিরঝিল থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করা হয়েছে বলে জানান জাহাঙ্গীর।