বিজিএমইএতে ‘সমঝোতার নির্বাচন’ ঠেকাতে নতুন ফোরাম

বিজিএমইএ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘স্বাধীনতা পরিষদ’ নামে ব্যবসায়ীদের নতুন একটি ফোরামের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Jan 2018, 12:30 PM
Updated : 11 Jan 2018, 12:31 PM

বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন পরিষদের আহ্বায়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম।

ডিজাইন অ্যান্ড সোর্স (ডিএসএল) গ্রুপের মালিক জাহাঙ্গীর বলেন, “নির্বাচন এড়িয়ে কোনো অবস্থাতেই যাতে আগের মতো সমঝোতার কমিটি হতে না পারে, সেজন্য ‘স্বাধীনতা পরিষদ নামের ফোরাম গঠন করা হয়েছে।”

এদিকে গতবার সমঝোতার মাধ্যমে গঠিত বর্তমান কমিটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলছেন, ভোটাভুটির বিরোধিতা তিনি করছেন না।

“নির্বাচনের একটা তফসিল ঘোষণা হয়েছে, সেই অনুযায়ী নির্বাচন হবে। কেউ যদি ভোট করতে চায়, তাহলে ভোট করবে। এখানে অস্পষ্টতার কিছু নেই। এখানে কেউ বাধাও দিতে আসেনি।”

গত ১৮ ডিসেম্বর বিজিএমইএ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়। সে অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ ৩০ জানুয়ারি। ৩৫ জন পরিচালক নির্বাচনে ভোট হবে আগামী ৭ মার্চ।

প্রায় সাড়ে ৪ হাজার সদস্যের সমিতি হল বিজিএমইএ। এতদিন ধরে সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম নামে দুটি প্যানেলে ভাগ হয়ে নির্বাচন করে আসছিলেন তৈরি পোশাক ব্যবসায়ীরা।

সবশেষ ২০১৫ সালের নির্বাচনে দুই পক্ষ সমঝোতা করে সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমানকে বিজিএমইএর সভাপতি করেন।

সমঝোতার কমিটির প্রসঙ্গ সিদ্দিকুর বলেন, “তখন যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে সমঝোতাটা হয়েছে। এখানে মন্দ কিছু তো হয়নি।”

সিদ্দিকুরের নেতৃত্বাধীন কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর। তবে বিভিন্ন কারণে নির্বাচন না হওয়ায় মেয়াদ আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হয়।

নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই ‘এক্স প্রেসিডেন্ট ফোরাম’ নামের একটি সংঘ গঠন হয়েছে, যাতে বর্তমান সভাপতি সিদ্দিকুরও রয়েছেন। এই সংঘ আগের মতোই সমঝোতার পথ তৈরি করতে পারে বলে নবগঠিত স্বাধীনতা পরিষদের আশঙ্কা।

ফোরাম থেকে আনিসুর রহমান সিনহা, প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক, আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বিজিএমইএ সভাপতি হয়েছিলেন।

সম্মিলিতি পরিষদ থেকে সভাপতি হয়েছিলেন বর্তমান সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, আতিকুল ইসলাম, মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস, টিপু মুনসী ও সালাম মুর্শেদী।

পোশাক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ডিসেম্বরে বিজিএমইএর কয়েকজন সাবেক সভাপতির বৈঠকে রূপা গার্মেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদুল ইসলামকে সভাপতি মনোনীত করার গুঞ্জন রয়েছে।

সিদ্দিকুর বলেন, “এক্স-প্রেসিডেন্ট ফোরামের নেতারা এক সময় সদস্যদের ভোটেই সভাপতি হয়েছিলেন। তাদের মতামতেরও একটা মূল্য আছে। নতুন নেতৃত্ব সম্পর্ক তারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেটাই সঠিক হবে।”

স্বাধীনতা পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর বলেন, “বিজিএমইএর নেতৃত্ব দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় একটি স্থবির ও অকার্যকর সংগঠনে পরিণত হয়েছে। সাধারণ সদস্যরা প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, হয়রানি ও অবেহেলার শিকার হচ্ছেন। নেতাদের নির্বাচনের প্রয়োজন না হওয়ায় তারা সদস্যদের কাছে জবাবদিহিতার প্রয়োজন মনে করছেন না।”

সমঝোতার মাধ্যমে নতুন কমিটি হলে তা বিজিএমইএর সদস্যরা মেনে নেবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

স্বাধীনতা পরিষদের নয় সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিতে আছেন ভেনিক্স বাংলাদেশের মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, নোভা এপারেলের শহিদুর রহমান, প্যারেন্টস সোয়েটারের গোলাম মাওলা চৌধুরী, এলায়েন্স এপারেলসের ওমর ফারুক, ওয়েমার্ট এপারেলের আয়েশা আকতার, ডি কে গ্লোবাল ফ্যাশনের মাহমুদ হোসেন, আজরা এন্টারপ্রাইজের আনসারুল আলম লিংকন ও ওলিরা ফ্যাশনের হুমায়ুন রশিদ জনি।