বিজিএমইএ নির্বাচনে আবারও তফসিল

বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ তিন দফায় বাড়ানোর পর আবার নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Jan 2019, 03:37 PM
Updated : 14 Jan 2019, 04:33 PM

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৬ এপ্রিল বিজিএমইএর ৩৫টি পরিচালক পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সোমবার বিজিএমইএর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন উপলক্ষে সদস্যদের বকেয়া চাঁদা পরিশোধের সর্বশেষ তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি। প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টা পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৬ মার্চ।

তবে এই তফসিল ঘোষণার পরও অতীতের মতো নির্বাচনের পথে না হেঁটে সমঝোতার মাধ্যমে বিজিএমইএর নেতৃত্ব ঠিক করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছে একটি পক্ষ। তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের দাবি তুলেছে।

 ২০১৫ সালে বিজিএমইএর নেতৃত্ব নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়ার পর প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি প্যানেল সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম সমঝোতার মাধ্যমে বর্তমান সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানকে সভাপতি করে একটি পরিচালনা পর্ষদ ঠিক করে। এরপর থেকে আর নির্বাচন না হয়ে তিন ধাপে এই পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ বাড়ানো হয়।

এই প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করে একটি পক্ষ ‘স্বাধীনতা পরিষদ’ নামের আরেকটি প্যানেল গঠন করে নির্বাচনের দাবি জানালেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে সেই প্রক্রিয়া আর এগোয়নি।

স্বাধীনতা পরিষদের সভাপতি ও ডিএসএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অতীতের মতো এবারও সস্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম কর্তৃপক্ষ সমঝোতার মাধ্যমে নেতৃত্বে ঠিক করতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমরা নিজেদের পক্ষ থেকে বড় একটি প্যানেল দিয়ে নির্বাচন নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।” 

সম্মিলিত পরিষদের পক্ষ থেকে বর্তমান সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এবং ফোরামের পক্ষে প্রয়াত সভাপতি আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হকের নাম শোনা যাচ্ছে বিজিএমইএর সদস্যদের মুখে।

সিদ্দিকুর রহমান

যোগাযোগ করা হলে সিদ্দিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের প্যানেল শীর্ষনেতারা আলোচনা করে ঠিক করবেন।

পুনরায় নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে।”

নির্বাচনী বোর্ডের সচিব রফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামিন, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ বা এমসিসিআইএয়র সভাপতি নিহাদ কবির, হিসাববিদদের সংগঠন আইসিএবির সাবেক সভাপতি এএসএম নাঈম রয়েছেন নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডে।

পাশাপাশি বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) সভাপতি কামরান টি রহমানকে চেয়ারম্যান করে নির্বাচনী আপিল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এই বোর্ডে রয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফজলে ফাহিম ও ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম খান।

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য নিহাদ কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নির্বাচনের তফসিল ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা নির্বাচনী আইন অনুযায়ী বাকি কাজ সম্পন্ন করব।”

স্বাধীনতা প্যানেল চায় ভোটাভুটি

সিদ্দিকুর নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর। তখন নির্বাচন না হওয়ায় মেয়াদ আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হয়েছিল।

চলতি বছরের শুরুতে দ্বিতীয় দফায় মেয়াদ বাড়ানোর আগে বিজিএমইএর নির্বাচনের জন্য তফসিলও ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন আর হয়নি, মেয়াদ বাড়ানো হয় আরও একবার।

দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইতে বরাবরই সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম প্লাটফর্ম থেকে নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়ে আসছে।

বর্তমান সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান সম্মিলিত পরিষদের প্রতিনিধি। এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, আতিকুল ইসলাম, মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস, টিপু মুনশি ও সালাম মুর্শেদী এই পক্ষ থেকে বিজিএমইএর সভাপতি হয়েছিলেন।

ফোরাম থেকে আনিসুর রহমান সিনহা, প্রয়াত আনিসুল হক, আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বিজিএমইএ সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।