‘ফাস্ট ট্র্যাক’ সেবা পাবেন আইসিটিতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা

দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ঝামেলাহীন দ্রুত সেবা নিশ্চিত করতে ফাস্ট ট্র্যাক সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2019, 05:24 PM
Updated : 16 Jan 2019, 05:24 PM

বুধবার এ উপলক্ষে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড গভার্নেন্স-এলআইসিটি প্রকল্পের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

বিডার সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ও বিসিসির নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

বিমানবন্দরে বিদেশিদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যসেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দ্রুত ‘অন অ্যারাইভাল’ ভিসা নিশ্চিত করা হবে এই উদ্যোগের প্রথম কাজ।

এছাড়াও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দ্রুত ইমিগ্রেশন পার হতে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর সেবা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করা দুই পক্ষ।

অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিমানবন্দরে নেমে দেশের মাটিতে পা দিলেই যেন স্বাগতবাণী শুনতে পায়, সেখান থেকেই যেন তারা বিনিয়োগের নানা তথ্য পেতে পারে আইসিটি বিভাগ বিডার সঙ্গে সেই বিষয়ে কাজ করবে।”

বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানি হার্ডওয়্যার তৈরির কারখানা স্থাপন করেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “আরও তিন-চারটি কোম্পানি কারখানা স্থাপনের আবেদন করে রেখেছে। সরকার সফটওয়্যারের পাশাপাশি হার্ডওয়্যারকেও গুরুত্ব দিচ্ছে।”

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন,  “গত ১০ বছরে আইসিটি খাতের রপ্তানি ৩৭ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে এখন এক বিলিয়নে পৌঁছেছে। সরকারের প্রতিশ্রুতি, এই খাতের নীতি সহায়তার কারণেই এমনটি সম্ভব হয়েছে।”

আইসিটি খাতকে অন্যতম রপ্তানি খাতে পরিণত করার জন্য সরকার থেকে ইতোমধ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।  

বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঢাকার বিমানবন্দরের ধীরগতিকে অন্যতম সমস্যা হিসাবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগকারীদের জন্য বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন ঝামেলামুক্ত করতে উদ্যোগ নিতে হবে।

“একটি লাগেজ পার করতে যদি তিন ঘণ্টা সময় লেগে যায় তাহলে সেখান থেকেই একটি নেতিবাচক বার্তা পায় বিনিয়োগকারীরা। তাই ইমিগ্রেশনের সমস্যাগুলোর সমাধানে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করতে হবে।”

বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন সেবায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে গুরুত্ব দেন পলক।  

দেশে বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টির পাশাপাশি এই বিনিয়োগকে টেকসই ও গতিশীল করতে দক্ষ জনশক্তি তৈরির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, “শুধু ইমিগ্রেশনে নয়, বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রতিটি তথ্যই একটি সেলের মাধ্যমে দ্রুত সরবরাহ করবে বিডা।”

ইতোমধ্যেই বিডা থেকে সেই সেবা চালু হয়েছে বলে জানান তিনি।

“বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিসে আইসিটি সেক্টরের একজন প্রতিনিধি থাকবেন যিনি আইসিটি সংক্রান্ত তথ্য দেবেন।”

সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী বিডা আইসিটি খাতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য অন অ্যারাইভাল ভিসা ইস্যু করবে।

প্রবাসী বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ব্যবসা নিবন্ধন ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহের ব্যাপারে দ্রুত সেবা প্রদানেও কাজ করবে তারা।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা এবং তাদের মধ্যে আইসিটি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহীদের দ্রুত সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আইসিটি বিভাগের সঙ্গে কাজ করবে বিডা।

আর বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইভেন্টে বিডার সুবিধাগুলো তুলে ধরবে এলআইসিটি প্রকল্প।

অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব জুয়েনা আজিজ, এলআইসিটি প্রকল্পের পরিচালক মো. রেজাউল করিমসহ দুই প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।