পর্যাপ্ত বিদেশি মুদ্রার নোট হাতে না থাকায় গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে পারছে না বাংলাদেশে কার্যরত বিদেশি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক (এসসিবি)।
Published : 19 Nov 2015, 11:20 AM
সংকট সামাল দিতে ব্যাংকটি সম্প্রতি প্রায় ৫০ লাখ ডলারের সমমূল্যের মার্কিন ডলার, ইউরো ও পাউন্ড নোট আমদানির অনুমোদন চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ব্যাংকটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার, আড়াই লাখ ডলারের ইউরো ও এক লাখ ডলারের পাউন্ড নোট আমদানি করতে চায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক মো. আহসানউল্লাহ চিঠি পাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে বলেন, “স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রার নোট আমদানির অনুমোদন চেয়ে একটি চিঠি দিয়েছে। আমরা বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।”
লন্ডনের ট্রাভেলেক্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এসব নোট আমদানির প্রস্তাব করা হয়েছে চিঠিতে। এসসিবি তাদের নস্ট্রো হিসাবের মাধ্যমে এসব নোট আমদানি দায় পরিশোধ করবে বলে জানিয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রা আইন অনুযায়ী, এডি (অথরাইজড ডিলার) ব্যাংকের মাধ্যমে স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে বিদেশি নোট আমদানির সুযোগ রয়েছে।
এক্ষেত্রে এডি ব্যাংকগুলো নিজ দায়িত্বে নোট আমদানির পাশাপাশি অব্যবহৃত ও অতিরিক্ত নোট এবং আমদানির মূল্য প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করবে।
এ বিষয়ে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি। ব্যাংকটির জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ই-মেইল করার পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী ১৬ নভেম্বর তাকে ই-মেইল পাঠানো বলেও বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কোনো জবাব দেননি তিনি।
“এছাড়া অন্যান্য দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে যে পরিমাণ নগদ বিদেশি মুদ্রা দরকার, তা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য নোট আমদানি করতে চাচ্ছি আমরা,” বলেন ওই কর্মকর্তা।
হজ ও ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে প্রচুর মুদ্রা ‘বিদেশে চলে যাওয়াকেই’ নোট সঙ্কেটের কারণ হিসেবে এসসিবির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ১১ নভেম্বর দেশের ব্যাংকগুলোর কাছে দুই কোটি ৯০ লাখ ডলার সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রার নোট ছিল।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৮১ লাখ ডলারের বিভিন্ন বিদেশি মুদ্রার নোট ছিল সোনালী ব্যাংকের কাছে। এছাড়া জনতা ব্যাংকের কাছে ছিল ৬০ লাখ ডলারের সমমূল্যের নোট।
ওইদিন স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের কাছে ছিল ২২ লাখ ৭০ হাজার ডলারের বিভিন্ন বিদেশি নোট। এর আগে ২০১০ সালের ৪ জুলাই এই ব্যাংককে বিদেশি নোট আমদানির অনুমতি দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
মজুদ বাড়লেও সম্প্রতি বিদেশি মুদ্রার সরবরাহ কমে যাওয়ায় খোদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকই নোট আমদানি করতে চেয়েছে। এজন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আমদানি শুল্কসহ অন্যান্য কর প্রত্যাহার চেয়ে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। অবশ্য এনবিআর এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত দেয়নি।
এক মাসের ব্যবধানে দেশে ডলারের বিনিময় হার আড়াই টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি মার্কিন ডলার ৮১ টাকা থেকে ৮২ টাকা ৫০ পয়সায় পাওয়া যাচ্ছে। গত ১৫ অক্টোবরও সর্বোচ্চ ৮০ টাকায় ডলার বিনিময় করেছে দেশের ব্যাংকগুলো।