বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশে কাজ করা চল্লিশটির বেশি মার্কিন ব্র্যান্ড এবারের প্রদর্শনীতে অংশ নেবে; প্রদর্শনী চলবে ২৭ থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত।
Published : 25 Oct 2022, 09:34 PM
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র্রের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্য নিয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকায় শুরু হচ্ছে ‘ইউএস ট্রেড শো’।
আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স (অ্যামচেম) বাংলাদেশ এবং ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের যৌথ আয়োজনে ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে তিন দিনের এ মেলায় বাংলাদেশে কাজ করা শীর্ষ মার্কিন কোম্পানিগুলো অংশ নেবে।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গেল দুই বছর এ প্রদর্শনী হয়নি।মঙ্গলবার সোনারগাঁও হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এবারের আয়োজনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, এ আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা, যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার সুযোগ, বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের উন্নয়নে ইউএসএইডের কর্মকাণ্ড এবং মেধাস্বত্ব বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস আয়োজিত সেমিনার থাকবে।
বৃহস্পতিবার ২৮তম ইউএস ট্রেড শো উদ্বোধন করবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিষয়ক সহকারী সচিব অরুণ ভেঙ্কটরমন।
যুক্তরাষ্ট্রের যেসব সর্বাধুনিক পণ্য ও সেবা বাংলাদেশে পাওয়া যায়, সেগুলো প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হবে বলে জানান রাষ্ট্রদূত হাস।
জ্বালানি, ব্যাংকিং ও আর্থিক সেবা, খাদ্য ও পানীয়সহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশে কাজ করা চল্লিশটির বেশি মার্কিন ব্র্যান্ড এবারের প্রদর্শনীতে অংশ নেবে। প্রদর্শনী চলবে ২৭ থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত।
রাষ্ট্রদূত বলেন, গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার। দুদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেওয়ার এই সময়ে ২৮তম ইউএস ট্রেড শো হচ্ছে।
“বাংলাদেশি পণ্যের সবচেয়ে বড় গন্তব্য এখন যুক্তরাষ্ট্র। বাণিজ্য অংশীদারিত্ব বাড়াতে ইউএস ট্রেড শোর এই আসর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।”
ইউএস ট্রেড শো চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস চারটি তথ্যভিত্তিক সেমিনারের আয়োজন করবে বলে জানান রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
এর মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থার (ইউএসএইড) উদ্যোগে একটি সেমিনার হবে, যার আলোচন্য বিষয় ‘বাংলাদেশে ইউএসএইড: অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা ও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ’।
শুক্রবার বিকাল ৩টায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ঢাকার কনস্যুলার অফিস ও এডুকেশনইউএসএ পরামর্শকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের যৌথ উপস্থাপনা। সেখানে তারা সারা বাংলাদেশে এডুকেশনইউএসএ এর মাধ্যমে দেওয়া বিনামূল্য পরামর্শসেবা এবং যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার জন্য শিক্ষার্থী ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোকপাত করবেন।
এ অধিবেশনের পর বিকাল সাড়ে ৪টায় দূতাবাসের কনস্যুলার কর্মকর্তারা ব্যবসা, বিনিয়োগ ও চাকরির ভিসাসহ বিভিন্ন প্রকার মার্কিন ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হবে।
শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় হবে দূতাবাস কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর মেধাস্বত্বের প্রভাব বিষয়ক প্যানেল আলোচনা।
এক প্রশ্নের জবাবে পিটার হাস বলেন, বাংলাদেশ যখন মধ্যম আয়ের দেশ ও উন্নত দেশের দিকে যাচ্ছে, তখন তথ্য প্রযুক্তি খাত, সেবা খাত, অবকাঠামো প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিনিয়োগের বিপুল সুযোগ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর বিশেষজ্ঞ জ্ঞান রয়েছে, যা তারা বাংলাদেশের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে পারে।
বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগের জন্য মার্কিন ব্যবসায়ীদের প্রতি যে আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, তাতে সাড়া দেওয়ার বিষয়টি সেই কোম্পানিগুলোর ওপরই নির্ভর করে বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রদূত।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের বিষয়ে এক প্রশ্নে অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, “চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি আমরা ব্যবসায়ীরা হই, কোনো দেশের সরকার নয়। লজিস্টিকস ও পুরাতন আমলের নীতির কারণে আমাদেরকে অনেক সময় সংগ্রাম করতে হয়।”
অন্যদের মধ্যে অ্যামচেমের সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, নির্বাহী পরিচালক শাহাদাত হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।