ডেনিম রপ্তানিতে চীনকে টপকাতে চায় বিজিএমইএ

পোশাকের বিশ্ব বাজারে ২০২১ সালে বাংলাদেশের অংশ ৮ শতাংশের কাছাকাছি যাবে বলে ধারণা বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2022, 02:40 PM
Updated : 21 Nov 2022, 02:40 PM

আগামীতে চীনকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশ ডেনিম রপ্তানিতে বিশ্বের শীর্ষে উন্নীত হবে বলে আশার কথা শোনালেন পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি মো. ফারুক হাসান।

তিনি বলেন, “ডেনিম রপ্তানিতে আমরা চীনকে ছাড়িয়ে এক নম্বর হয়ে যেতে পারি। একইসঙ্গে ইউরোপে মোট পোশাক রপ্তানিতেও এক নম্বর হওয়ার হোপ দেখতে পাচ্ছি আমি।”

রোববার উত্তরায় বিজিএমইএ কার্যালয়ে সংবাদ মাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ আশার কথা শোনান।

দেশের শিল্পখাত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে যে সমস্যায় পড়েছিল, সেই পরিস্থিতির উন্নয়ন হয়েছে দাবি করে ফারুক বলেন, “আমাদের অর্ডার অন্য কোনও দেশে যাচ্ছে না। আমাদের এনার্জি ক্রাইসিস যেটা ছিল, সেটাও কিন্তু সলভ হচ্ছে। ইলেক্ট্রিসিটি অনেক ইম্প্রুভ করে গেছে।

“আশা করি, গ্যাস আগামীতে ইম্প্রুভ করবে। সরকারের সাথে এটা নিয়ে আলোচনা করছি। সরকারও এটা ভাল মত দেখছে। আমরা আশা করছি আগামীতে এই সমস্যা আর থাকবে না। “

মহামারীর পর যুদ্ধের কারণে অন্যান্য খাতের মত পোশাকেও ধাক্কা লেগেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে অর্ডার এবং রপ্তানি কিছুটা স্লো হয়েছে, এটা ঠিক। কিন্তু আমাদের অর্ডার ভিয়েতনাম কিংবা পাকিস্তানে চলে যাচ্ছে- এটা ঠিক নয়।

“তবে গত জুলাই থেকে অর্ডার কম আসছে, এটা গ্লোবাল ক্রাইসিসের জন্য। ইউক্রেইন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে গ্লোবাল একটা রিসেশন (মন্দা) চলছে, ইনফ্লেশন বেড়ে গেছে। এসব কারণেই অর্ডার স্লো ডাউন হয়েছে। এ কারণে আসলে সারা ওয়ার্ল্ডের মার্কেটটাই কমে গেছে।”

যুদ্ধের কারণে পোশাকের বিশ্ববাজারের আকারই কমে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তবে সার্বিকভাবে পোশাকের বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অংশ এবার বাড়তে পারে বলে মনে করেন বিজিএমইএ সভাপতি।

তিনি বলেন, “আমরা অধীর আগ্রহ করে অপেক্ষা করছি ২০২১ সালের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ডেটা কবে বের হবে। ২০২০ সালের ডেটা অনুযায়ী সারা বিশ্বের পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অংশ ছিল ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ।

“আমি খুব আশাবাদী যে, ২০২১ সালের রিপোর্ট এই মাসের শেষে বের হওয়ার কথা রয়েছে, তাতে আমাদের পোশাক রপ্তানির অংশ ৮ শতাংশের কাছাকাছি চলে যাবে। এবং ২০২২ এ গিয়ে আমরা আরও বাড়াতে পারব।”

ঢাকায় গত সপ্তাহে হয়ে যাওয়া ‘মেইড ইন বাংলাদেশ উইক’ নিয়ে আগামী শনিবার সংবাদ সম্মেলন করা হবে জানিয়ে ফারুক বলেন, “মেইড ইন বাংলাদেশ উইকে বিশ্বের বড় বড় ব্র্যান্ডের টপ লেভের কর্মকর্তারা যোগ দিয়েছেন। এখানে নতুন অনেক বায়ার এসেছে।

“আগামী ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরের কথা রয়েছে। এই সফরেও জাপানের সবচেয়ে বড় পোশাক ব্যবসায়ী গ্রুপ ইউনিক্লো‘র মালিকের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীসহ বৈঠকের কথা রয়েছে। ওই বৈঠকেও আমরা নতুন প্রতিশ্রুতি পাব বলে আশা করছি।”

‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য তিনটি আয়োজনে বিজিএমইএ স্পন্সর করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ইভেন্টগুলো হচ্ছে- আগামী জানুয়ারিতে ভারতের মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য প্রতিবন্ধী ‘ইন্টারন্যাশনাল টি২০ এবং ওডিআই হুইলচেয়ার’ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী ক্রিকেট খেলোয়াড় দল ওই টুর্নামেন্টে অংশ নেবেন।

“আগামী মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় ‘ওয়ার্ল্ড মিস ইউভার্সিটি পিস প্যাজেন্ট’ প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন রাফা নানজেবা তোরসা।  তৃতীয় ইভেন্টটি হচ্ছে- ম্যানচেস্টার মিউজিয়ামের এশিয়ান গ্যালারিতে রিকশা যুক্ত হচ্ছে।“

বিজিএমইএ সহ সভাপতি আব্দুল্লা হিল রাকিবসহ অন্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।