“আজ একটা দাবি নিয়ে কথাবার্তা বলার পরদিন আরেকটা নতুন দাবি নিয়ে আসছে,” আন্দোলনকারীদের দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে ঔষধ শিল্প সমিতির সভাপতি।
Published : 03 Sep 2024, 11:09 PM
সরকার পতনের পর থেকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ওষুধ কারখানায় ‘ভাঙচুর’ ও কর্মকর্তাদের ‘জিম্মি রাখার’ ঘটনা তুলে ধরে ওষুধ উৎপাদন ও সরবরাহ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন মালিকরা।
একের পর এক এমন ঘটনায় অনেকগুলো ওষুধ কারখানায় ‘অস্থিরতা’ তৈরি হওয়ার দাবি করে তারা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চেয়েছেন।
তা না হলে দেশে ওষুধের ‘সংকট’ দেখা দেওয়ার শঙ্কার কথা তুলে ধরেছেন ওষুধ খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির নেতারা।
মঙ্গলবার ঢাকার তেজগাঁওয়ে সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি আব্দুল মুক্তাদির বলেন, “গত কয়েকদিন ধরেই এ অস্থিরতা চলছে। এরইমধ্যে কয়েকটি কারখানায় উৎপাদন আংশিক বা পুরো বন্ধ হয়ে গেছে।
“এভাবে ভাঙচুর, কর্মকর্তাদের জিম্মি করে রাখা দাবি আদায়ের ভাষা হতে পারে না। কারও দাবি থাকলে সেটা উপস্থাপন করবে। আলোচনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সংগতি থাকলে সেটা নিষ্পত্তি হতে পারে। কিন্তু জোর জবরদস্তির মাধ্যমে যা করা হচ্ছে, তাতে ফল খুবই খারাপ হচ্ছে।”
গত দুই সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কারখানায় শ্রমিকদের আন্দোলন, হামলা-ভাঙচুর ও কর্মকর্তাদের জিম্মি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
আব্দুল মুক্তাদির বলেন, মালিকপক্ষ একটা দাবি মেনে নিলে আবার আরেকটা দাবি নিয়ে আসছে। এজন্য কোনোভাবেই কারখানায় বিশৃঙ্খলা থামাতে পারছেন না তারা।
“আজ একটা দাবি নিয়ে কথাবার্তা বলার পর, পরেরদিন আরেকটা নতুন দাবি নিয়ে আসছে। এজন্য আমাদের শঙ্কা হয়। শঙ্কা হয় দুইটি জায়গায়, একটা হল কোনোদিন আমাদের শিল্পে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি, সেটা কেন হচ্ছে। দ্বিতীয়টি হল কোনোভাবেই তারা দাবি কেন মানছে না।
“যাই হচ্ছে একজন না একজন আরেকটা নতুন দাবি নিয়ে এসে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করছে। বিষয়টি গভীরভাবে চিন্তা করা উচিত। এটার সূদুরপ্রসারী খারাপ প্রভাব রয়েছে আমাদের ওষুধ শিল্পের জন্য।”
চলমান সমস্যা দ্রুত সমাধানে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা সরকারের সর্বোচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমরা উনাদের বলেছি, উনারাও জানেন।
“আমরা উনাদের মনোযোগ পেয়েছি ঠিকই, আমরা চাচ্ছি আপনারা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে যেসব কাজ করছেন, সেখানে ওষুধ শিল্পকেও দিন। একটা বিশাল বড় খাতকে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচান।”
চাহিদার ৯০ শতাংশের বেশি দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলোর উৎপাদনের তথ্য তুলে ধরে সমিতির সভাপতি মুক্তাদির বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতি চলতে থাকলে দেশে ওষুধের সংকট দেখা দেবে। কিছু ওষুধ থাকে এক সপ্তাহের স্টক, কিছু ওষুধের এক মাসের স্টক থাকে। সাধারণত আমরা ৩০ দিনের স্টক নিয়ে কাজ করি। কিন্তু অনেক ওষুধ আছে সেগুলো অলরেডি দুই সপ্তাহ হয়ে গেছে। সেগুলোর কিছু ঘাটতি এখন হতে পারে।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কারা ষড়যন্ত্র করছে, তা আমরা বলতে পারব না। আমরা বিষয়টি শুধু দেখতে পাচ্ছি।”
সংবাদ সম্মেলনে ঔষধ শিল্প সমিতির সহসভাপতি মো. হারুনুর রশীদ, হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সিইও মোহাম্মদ হালিমুজজামান, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জারিন করিম, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের পরিচালক আফসার উদ্দিন, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের নির্বাহী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির মহাসচিব এস এম শফিউজজামান ও সিইও অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মো. মুস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।