পোশাক খাতের মজুরি পুনর্বিবেচনার আহ্বান টিআইবির

“নতুন মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনগুলো কি আকারে বিবেচনা করা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। বরং শ্রমিকের ন্যূনতম জীবনমান ও প্রয়োজন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে জীবনযাপন ব্যয় ও সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়গুলো মোটেই গুরুত্ব পায়নি বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।”

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2023, 04:06 PM
Updated : 21 Nov 2023, 04:06 PM

ধারাবাহিক মূল্যস্ফীতি ও বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় নিলে পোশাক শ্রমিকদের বেতন যতটা বাড়ানো হচ্ছে বলে নিম্নতম মজুরি বোর্ড থেকে বলা হচ্ছে তা সঠিক নয় বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি।

তারা ঘোষিত মজুরি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে।

সর্বনিম্ন ১২ হাজার ৫০০ টাকা বা ৫৬ শতাংশ বাড়িয়ে চলতি মাসের শুরুতে নতুন মজুরি কাঠামোর খসড়া গেজেট প্রকাশ করে মজুরি বোর্ড, যাতে আপত্তি জানানোর সময় রাখা হয়েছে ১৪ দিন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এই মজুরিতে আপত্তি জানিয়ে তা আরও বাড়ানোর দাবি করা হয়েছে। 

পোশাক শ্রমিকদের নিম্নতম মোট মজুরি ৫২-৫৬% বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হলেও, বাস্তবে বৃদ্ধির হার ২৫ থেকে ২৮.৮৮ শতাংশ মন্তব্য করে টিআইবি জানায়, নিম্নতম মজুরি বোর্ডের কাছে এক চিঠিতে এ বিষয়ে বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছে তারা।

নিম্নতম মজুরি বোর্ড চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে দেখানো হয়েছে- বাৎসরিক ৫% বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, ডলারের বিনিময়মূল্যের ঊর্দ্ধগতি বিবেচনায় পোশাকশ্রমিকদের মজুরি প্রকৃত অর্থে ৩০ শতাংশও বাড়েনি।

পোশাক শ্রমিকদের জীবনমান, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা কর্তৃক নির্ধারিত মানদণ্ড বিবেচনায় নিয়ে প্রস্তাবিত নিম্নতম মজুরি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।  

টিআইবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী মূল মজুরি সর্বমোট মজুরির ৬০ শতাংশ ধরা হলেও, বাংলাদেশের প্রস্তাবিত মজুরি কাঠামো অনুযায়ী তা ৫৩ থেকে ৫৬ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে বছর প্রতি ৫% মূল মজুরি বৃদ্ধির সুযোগ রাখা হলেও, সামনের দিনে তুলনামূলক কম মজুরি বাড়বে শ্রমিকদের, যা এই মজুরি কাঠামোর বড় দুর্বলতা। 

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “নির্ভরযোগ্য বিভিন্ন গবেষণা ও বিশ্লেষণে আমরা দেখতে পাচ্ছি, সামগ্রিক বিবেচনায় পোশাক শ্রমিকদের নতুন প্রস্তাবিত ন্যূনতম মজুরি জীবনধারণের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।”

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থাকর্তৃক নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী নিম্নতম মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে শ্রমিক ও তার পরিবারের প্রয়োজন, দেশের সাধারণ মজুরি কাঠামো, জীবনযাপনের ব্যয় এবং এ সংক্রান্ত পরিবর্তন, সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা, অন্যান্য সংশ্লিষ্ট শ্রমজীবীদের জীবনযাত্রার মান এবং অর্থনৈতিক বিবেচ্য, বিশেষ করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, উৎপাদনশীলতা এবং উচ্চ কর্মসংস্থান তৈরির বিষয়সমূহ মাথায় রাখার কথা বলা হয়েছে।

“নতুন মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনগুলো কি আকারে বিবেচনা করা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। বরং শ্রমিকের ন্যূনতম জীবনমান ও প্রয়োজন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে জীবনযাপন ব্যয় ও সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়গুলো মোটেই গুরুত্ব পায়নি বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।”