বাজারের উত্তাপ বাণিজ্যমন্ত্রীর ‘গায়েও লাগছে’

“সাধারণ মানুষ হা-হুতাশ করছে, এতে তাদের দোষ নেই,” বললেন টিপু মুনশি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2023, 04:33 PM
Updated : 14 March 2023, 04:33 PM

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের যে কষ্ট হচ্ছে, তা স্বীকার করলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তবে এই দুঃসময়ে সরকার সহযোগিতা বাড়াচ্ছে বলেও আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

‘বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস ২০২৩’ উদযাপনের বিস্তারিত জানাতে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এসে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন টিপু মুনশি। ১৫ মার্চ ভোক্তা অধিকার দিবস পালনে ঢাকার কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

তিনি বলেন, “জিনিসপত্রের দাম বাড়লে ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতার উপর তো আঘাতটা আসে। তারা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দাম বাড়লে তার উত্তাপ আমাদের গায়েও পড়ে। কারণ মানুষ তো আমাদের কাছেই আসে।”

পণ্য মূল্যের বাজারে ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রভাবের কথা তুলে ধরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “সাধারণ মানুষ হা-হুতাশ করছে, এতে তাদের দোষ নেই। বৈশ্বিক কারণে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। পৃথিবীতে যে ধরনের ঝামেলা তৈরি হয়েছে, তার প্রভাব আমাদের উপর পড়েছে।

“বৈশ্বিক অস্থিরতায় টাকার মান কমেছে-সবই এর প্রভাব, কিন্তু ভোক্তারা তা বুঝতে চান না। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের উপর প্রভাব কম পড়েছে। কিন্তু আমরা দরিদ্র দেশ হওয়ায় কষ্টটা বেশি ফিল করছি।”

এর মধ্যেই নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে টিপু মুনশি বলেন, “দেশে ২০ শতাংশ মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে রয়েছে। সে হিসাবে ৩ কোটি মানুষকে সহায়তা দেওয়া প্রেয়োজন। কিন্তু আমরা ১ কোটি পরিবারকে রমজানে বিশেষ দরে পণ্য দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি টিসিবির মাধ্যমে। তা বিবেচনায় নিলে ৫ কোটি মানুষকে সহায়তা দেওয়া হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে ২ লিটার সয়াবিন তেল, ২ কেজি মশুর ডাল, ১ কেজি চিনি বিক্রি করছে টিসিবি। রমজান মাসে এরসঙ্গে শুধু ঢাকায় ১ কেজি খেজুর ও ১ কেজি ছোলা বিক্রি করা হবে।

রোজার সময় বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যায় বরাবরই। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা একে অন্যকে দায়ী করে থাকেন মূল্য বৃদ্ধির জন্য।

এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “ক্রাইসিস যখন হয়, তখন কিছু সুযোগ-সন্ধানী লোক সুযোগটা নেয়, নিতে চায়। ক্রাইসিসকালে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের যে নৈতিকতার পরিচয় দেওয়া প্রয়োজন, আমরা তা পাই না। সবাই যে খারাপ তা বলছি না।

“সারা পৃথিবীজুড়েই তো ব্যবসায়ীরা রমজান মাসে পণ্য মূল্যে ছাড় দিয়ে সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করে। কিন্তু আমাদের দেশে তার প্রভাবটা নেই। আমরা বরাবরই বলছি, রমজান মাস সংযমের মাস, ব্যবসায়ীরা যদি একটু সংযমী হয়, মুনাফায় যদি একটু সংযমী হয়।”

রোজায় পণ্য যা প্রয়োজন, তা যথেষ্ট পরিমাণ মজুদ রয়েছে জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, “কোনো কারণ নেই দাম বাড়িয়ে দেওয়ার। কিন্তু ওই সুযোগটা নিয়ে কেউ যেনো দাম বাড়াতে না পারে।”

ভোক্তাদেরও পুরো রমজান মাসের পণ্য একসঙ্গে না কেনার আহ্বান জানান তিনি।

রোজার মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মুল্য ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে প্রতিদিন ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ৫৬টি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৪টি টিম বাজার তদারকি করবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।