“তারা ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এসেছে৷ তারা আমাদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে চায়,“ মার্কিন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী টিটু।
Published : 28 May 2024, 09:08 PM
যুক্তরাষ্ট্রের আরও অনেক কোম্পানির বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আগ্রহ দেখানোর কথা তুলে ধরে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু নতুন কোম্পানির মধ্যে ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজনের সঙ্গে আলোচনা হওয়ার কথা বলেছেন।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ সফররত ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ বিজনেস ডেলিগেশনের সঙ্গে আলোচনার পর সাংবাদিকদের সামনে আসেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি বলেন, “নতুন নতুন আমেরিকান কোম্পানি যারা বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আগ্রহী যেমন আজকে অ্যামাজন আসছিল৷ তারা কীভাবে বাংলাদেশের পণ্য এখানে যুক্ত করতে পারে৷ কীভাবে বাংলাদেশের মার্কেট এই গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে যুক্ত হতে পারে এই সুযোগ-সুবিধাগুলি আমাদের এখানে আসতেছে৷
”আপনারা জানেন অ্যামাজন সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম৷ আমরা সেন্ট্রাল ওয়ারিং হাউস তৈরি করব৷ তারা সেখান থেকে পণ্যগুলো সংগ্রহ করবে৷ এরপর তারা সেগুলো আঞ্চলিকভাবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিক্রি করবে৷”
প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী টিটু বলেন, "যেসব ইউএস কোম্পানি বাংলাদেশে অপারেট করে তারা যেন সহজে ব্যবসা করতে পারে সেসব বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি৷ ব্যবসায় যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকে সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷”
তিনি বলেন, "আমাদের নেগেটিভ কোনো আলোচনা হয়নি। সব পজেটিভ আলোচনা হয়েছে৷ আমরা একক কোনো কোম্পানির ব্যবসায়িক প্রমোশনের জন্য এখানে বসিনি৷ তারা ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এসেছে৷ তারা আমাদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে চায়৷ তারা তাদের কোনো ব্যবসায়িক লাভ আলোচনা করেনি৷ বরং তারা আমাদের আর্থসামাজিক ব্যবসায়িক পরিবেশ কিভাবে উন্নয়ন করা যায় সেসব নিয়ে আলোচনা করেছে৷ একই সাথে আমাদের দেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ কীভাবে ভালো করা যায় সে বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷"
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমাদের ৯০ ভাগ ব্যবসা কিন্তু গার্মেন্টসে৷ এখানে কিন্তু গার্মেন্টসের কেউ ছিল না৷ তারা মূলত এ দেশের ই-কমার্স অবকাঠামো, ই-কমার্স বিজনেস থেকে শুরু করে এ দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলেছে৷
”এখানে শেভরনের প্রতিনিধি ছিল৷ টেলকোর প্রতিনিধিরা ছিল৷ ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমের মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ডের প্রতিনিধিরা ছিল৷ এখানে স্টার্টআপ পর্যায় থেকে আরম্ভ করে একেবারে বোয়িং পর্যন্ত তাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল৷”
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাজার ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছে জানিয়ে টিটু বলেন, “মার্কেট এক্সেস ইজিয়ার হবে যদি স্মার্ট বাংলাদেশ ফর স্ট্রাটেজিক গ্রোথের' সাজেশনগুলো যদি এডাপ্ট করতে পারি৷ দ্বিতীয়ত, ইউএসএ এর যে ইনভেস্টমেন্ট সেটা আরও সহজে কিভাবে বাংলাদেশে আসবে৷ সে বিজনেসটা যেন ইনোভেশনের মধ্যে থাকে এবং আমাদের মূল টার্গেট এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশনে হেল্প করে৷ আর সবশেষে বাংলাদেশ ও ইউএসএ এর সাথে সম্পর্ক আরও শক্তিশালীকরণ হয়৷"
তিনি বলেন, "আমরা কটন নিয়ে কথা বলেছি৷ আমরা ইউএস কটনের বড় আমদানিকারক দেশ৷ সেই ইউএস কটন থেকে তৈরি করা পণ্য কীভাবে মার্কেট এক্সেস পেতে পারে সেজন্য তারা কাজ করবে৷
প্রতিমন্ত্রীর সামনে প্রশ্ন রাখা হয়, কিছু কিছু মার্কিন কোম্পানি বাংলাদেশের পুঁজিবাজার থেকে তাদের বিনিয়োগ উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ সময়ে সোশাল বিজনেস গুরুত্বপূর্ণ না কি যারা বড় বিনিয়োগ থেকে মুখ ফেরাচ্ছে তাদের ফেরানো গুরুত্বপূর্ণ।
এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ দেশের মার্কেট যেখানে অ্যাক্সেস পাবে এবং ইন্টারন্যাশনাল করপোরেট যারা আগ্রহ নিয়ে আমাদের দেশে আসবে যেমন- ফেইসবুক, অ্যামাজন, শেভরন, কোক, বোয়িং তারা যদি বাংলাদেশের বিজনেস ভ্যালু এডিশনের সাথে যুক্ত হয় তাহলে দেশ সামনে দিকে এগিয়ে যাওয়ার যে পথ সেটা সহজ হবে৷
"আমরা ২৪ থেকে ২৬ সালের মধ্যে এলডিসি থেকে ডেভেলপিং কান্ট্রিতে উন্নিত হব৷ এই দুই বছরের মধ্য বিভিন্ন দেশের মার্কেটে অ্যাক্সেস পেতে চাই৷ এক্ষেত্রে ইউএস-বাংলার যে বিজনেস কাউন্সিল যে মার্কেট এক্সেস করপোরেট কাউন্সিলের সাথে সংযুক্ত করার জন্য তারা আমাদের দেশে এসেছে৷"
টিটু বলেন, "এ ধরনের বড় কোম্পানি যখন কোনো চেম্বারের মাধ্যমে আসে বাংলাদেশের টেকসই ভবিষ্যৎ দেখেই আসে৷ আমরা চেষ্টা করব কিভাবে আমাদের পলিসি দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারের বিনিয়োগ কারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে পারি৷ বাংলাদেশ কোনো ছোট মার্কেটপ্লেস নয়।”
তাদের আসার মাধ্যমে নতুন বাজার সম্প্রসারণ এবং নতুন কোম্পানি এদেশে আসার পথ উন্মুক্ত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।