বাসিন্দা গৃহকর্মী খোদেজা খাতুন বলেন, “যে পরিমাণ বাড়ছিল, ওইরকম কমে নাই, আরও কমা উচিত।”
Published : 29 Nov 2024, 10:50 PM
শীতের মৌসুমি শাক-সবজির সরবরাহ বাড়ায় বাজারে প্রায় সব ধরনের শাক-সবজির দাম কমেছে। এতে স্বস্তির কথা জানিয়েছেন ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, দাম আরও কমতে পারে। তবে সবজির দাম কমার প্রভাব আলুর ওপর পড়েনি।
শুক্রবার রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজার এবং নিকেতন কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব শাক-সবজির দাম কেজিতে গড়ে ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
বাজারগুলোতে শিম প্রতি কেজি ৪০ টাকা কমে ৮০ টাকা, ফুলকপি প্রতিটি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৭০ টাকা, টমেটো কেজিতে ২০ টাকা কমে ১৩০ থেকে থেকে ১৫০ টাকা, গাজর ১৫০ টাকা, মুলা কেজিতে ১০ টাকা কমে ৪০ টাকা, শালগম ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বেগুন প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কচুরমুখী কেজি ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, বরবটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, লাউ আকার-আকৃতি ভেদে ৪০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
নতুন আলু ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পুরান আলুর কেজি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা।
দাম আরও কমবে, আশা বিক্রেতাদের
মহাখালী কাঁচাবাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পাইকারিতে কেনা কম পড়তেছে, আমরাও কমে বেচতে পারতাছি। গত সপ্তাহের চেয়ে আমদানি বেশি। এর জন্য কারণে দাম কমছে। ২-৩ দিনের মধ্যে আরও কমতে পারে।”
নিকেতন কাঁচাবাজারের বিক্রেতা হেলাল হোসেন বলেন, বগুড়া থেকে মৌসুমি শাক-সবজি আসছে প্রচুর পরিমাণে। এজন্য দাম কমছে।
এই বাজারের আরেক সবজি বিক্রেতা আবদুর রহমান বলেন, শীতকালে কয়েক দফায় শাক-সবজি চাষ করেন উৎপাদকরা। এখন দ্বিতীয় দফার শাক-সবজি বাজারে আসছে। এরপর আরও দাম কমবে।
মহাখালী কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা গৃহিণী সালমা বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রায় শাক-সবজির দামই কমেছে। এটা তো কিছুটা স্বস্তিরই। মানুষ এটাই চায়, তবে এখনও আলুর দাম স্বাভাবিক হয়নি। আলুটা ৩০-৪০ টাকা কেজি হওয়া উচিত।”
একই বাজারে আসা বেসরকারি চাকুরে আবদুল জব্বার বলেন, “শীতকালের শাকসবজি বাজারে উঠলে যেমন কমে আরকি। আমরা চাই, যেন সবসময় অন্তত শাকসবজির দামটা যৌক্তিক থাকে।”
নিকেতন কাঁচাবাজার এলাকায় আসা সাততলা এলাকার বাসিন্দা গৃহকর্মী খোদেজা খাতুন বলেন, “যে পরিমাণ বাড়ছিল, ওইরকম কমে নাই, আরও কমা উচিত।”
ব্রয়লার মুরগির দামও গেল সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কমে ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সোনালি মুরগির দাম কেজিপ্রতি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, হাইব্রিড সোনালির দাম ২৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
তবে ডিমের দাম এখনও চড়া। লাল ডিমের ডজন ১৫০ টাকা। হাঁসের ডিমের ডজন ২৩০ টাকা, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকা।
গরুর মাংসের কেজি ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা, খাসির মাংস এক হাজার ১৫০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে মাছের দাম প্রায় অপরিবর্তিত আছে।
পেঁয়াজ-রসুনের দামও কমেছে
দুই সপ্তাহ ধরেই চড়তে থাকা পেঁয়াজের দাম গেল সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমেছে। বিক্রেতাদের দেয়া তথ্যানুযায়ী সব ধরনের পেঁয়াজ কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১০ টাকা কমে ১৩০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ১০ থেকে ২০ টাকা কমে ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পুরনো আদা প্রতি কেজি ২৮০ টাকা, রসুন কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, জিরা ১০০০ টাকা, পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল আগের মতোই ৮১৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
দেশি মসুর ডাল আগের মতোই ১৪০ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ১০ টাকা কমে ১১০টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, মিনিকেট চাল ৭২ থেকে ৭৬ টাকা ও নাজিরশাইল চাল প্রকারভেদে ৭৫ থেকে ৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা চাল প্রকারভেদে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
নিকেতন কাঁচাবাজারের মুদি দোকানি গোলাম হোসেন বলেন, “দুই-তিন বন্ধ থাকার পর ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ায় বাজারে প্রভাব পড়েছে। এছাড়া পেঁয়াজ কলির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজ আসতে শুরু করলে দাম একশর মধ্যে চলে আসবে।”