সরকারের ব্যয় কম হওয়ার কারণে বাজেট ঘাটতি কমেছে।
Published : 07 Jun 2024, 01:15 AM
বাজেটের আকার, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বরাদ্দ কমিয়ে বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
বৃহস্পতিবার নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরার আগে সংশোধিত বাজেট উপস্থাপন করেন তিনি।
এতে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ২২ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে ৪ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা করার প্রস্তাব করেন তিনি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সরকারি ব্যয়ও ৪৭ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা কমেছে।
অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী, সরকারি ব্যয়ের অংক ৭ লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা, যেটি আগে ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “সংশোধিত বাজেটে ২ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪১৮ কোটি টাকার ঘাটতি প্রস্তাব করছি, যা জিডিপি’র ৪.৭ শতাংশ। এর মধ্যে ১ লক্ষ ৫৬ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ উৎস হতে এবং ৭৯ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা বৈদেশিক উৎস হতে নির্বাহ করার প্রস্তাব করছি।”
মূল বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছিল জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ। সংশোধিত বাজেটে ঘাটতির মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ৭৯ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা অর্থায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিদায়ী অর্থবছরে মূল বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এটি কমে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকায়। তার মানে ৪৭ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়েছে।
মূল বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এনবিআরের আওতায় লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা ঠিক করা হয়েছে।
বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই ২০২৩-মার্চ ২০২৪) রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ লাখ ৪৯ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা।
বিদায়ী অর্থবছরে সরকারের ব্যয় কম হওয়ার কারণে বাজেট ঘাটতি কমেছে। মূল বাজেটে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা (জিডিপির ৫.২ শতাংশ) । সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ ২ লাখ ৩২ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা (জিডিপির ৪.৬ শতাংশ) দেখানো হয়েছে।
বাজেট ঘাটতি কমলেও ঘাটতি পূরণে ব্যাংক থেকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ঋণ নেওয়া হয়েছে। এ খাতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এর বিপরীতে নেওয়া হয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা।
বিদেশি উৎস থেকে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া হয়েছে ৭৬ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। তার মানে বিদেশি উৎস থেকে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম ঋণ নেওয়া হয়েছে।
মূল বাজেটে দেশি ও বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধের লক্ষ্যমাত্রা ছিল যথাক্রমে ৮২ হাজার কোটি টাকা ও ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। এর বিপরীতে দেশি ও বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ করা হয়েছে যথাক্রমে ৮৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ও ১৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।