ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ আগের চেয়ে ১৭২০ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
Published : 06 Jun 2024, 09:08 PM
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়াতে ১০ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এ প্রস্তাব করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সামাজিক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আগামী ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এক লাখ ৩৬ হাজার ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল এক লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা।
“প্রতিবন্ধীদের স্বার্থ এবং অধিকার সুরক্ষায় আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আগামী অর্থবছর প্রতিবন্ধী ভাতাপ্রাপ্তদের সাংখ্যা বর্তমানে ২৯ লাখ থেকে বৃদ্ধি করে ৩২ লাখ ৩৪ হাজার জনে উন্নীত করা হবে। এছাড়া প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের উপবৃত্তির হার বিদ্যমান ৯৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০৫০ টাকায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।”
মা ও শিশু সহায়তা কার্যক্রমের আওতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মাহমুদ আলী বলেন, আগামী অর্থবছরে উপকারভোগীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৪ হাজার ৮০০ জন থেকে ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ২৮০ জনে উন্নীতকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫৮ লাখ ১ হাজার প্রবীণকে মাসিক ৬০০ টাকা হারে মোট চার হাজার ২০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছরে সুবিধাভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি করে ৬০ লাখ এক হাজার জনে উন্নীত করা হবে। সেজন্য ৪ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে ২৫ লাখ ৭৫ হাজার বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারী ভাতা পেয়ে আসছেন জানিয়ে মাহমুদ আলী বলেন, সেই সংখ্যা ২৭ লাখ ৭৫ হাজার জনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেজন্য এক হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বর্তমানে মোট ৬ হাজার ৮৮০ জনকে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে মোট ১২ হাজার ৬২৯ জনকে ভাতার আওতায় আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বেদে জনগোষ্ঠীর জন্য ভাতা প্রদান কার্যক্রম চলমান থাকবে।
“আগামী অর্থবছরে সমাজের অনগ্রসর অন্যান্য জনগোষ্ঠীর ৯০ হাজার ৮৩২ জনকে ভাতার আওতায় আনা হবে। হিজড়া, বেদেসহ সকল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিক্ষা উপবৃত্তি চলমান থাকবে।”
বেড়েছে ভর্তুকি-প্রণোদনা
বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ মোট ৮৮ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী, যেখানে বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ ৮৬ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা। তার মানে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ আগের চেয়ে ১৭২০ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাজেটে সম্পদের ব্যবহার বিবরণীতে দেখা যায়, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ খাতে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ এবার বরাদ্দ রাখা হয়েছে পাঁচ হাজার ২৬৭ কোটি টাকা। এই বরাদ্দ বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট থেকে ২৩৬ কোটি টাকা কম; ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হয় ৫ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা ।
কৃষিতে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ প্রস্তাব করা হয়েছে ১৭ হাজার ২৬১ কোটি টাকা, যেখানে বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। তার মানে এই খাতে ভর্তুকি ও প্রণোদনা কমেছে ৮ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা।
জনপ্রশাসন খাতে বরাবরের মতোই সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে, ৬৩ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ ছিল ৫৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা।
জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা খাতে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ ধরা হয়েছে এক হাজার ৩০২ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ১১৯৫ কোটি টাকা।