২০০৯ সালের ভোক্তা অধিকার আইনের ৩৮ ধারা অনুসারে দৃশ্যমান কোনো স্থানে পণ্যের মূল্য প্রদর্শন করতে হবে।
Published : 25 Jan 2023, 03:32 PM
ফেইসবুকে বিভিন্ন পণ্যের পেইজ থেকে কেনাকাটার অভিজ্ঞতা যাদের রয়েছে, তারা ’ইনবক্স প্লিজ’ কথাটির সঙ্গে পরিচিত। অনেক পণ্য বিক্রির ফেইসবুক পেইজে পণ্যের ছবি বা ভিডিও পোস্টের সঙ্গে মূল্য উল্লেখ করা হয় না। তখন আগ্রহী ক্রেতা মন্তব্য ঘরে দাম জানতে চাইলে উত্তর আসে, ‘ইনবক্স প্লিজ'।
এই নিয়ে অনেক ক্রেতারাই অসন্তুষ্ট হন।
মৌসুমী ফল ডেলিভারি দেওয়ার ফেইসবুক পেইজে গিয়ে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে জানালেন বগুড়ার সাজু।
তিনি বলেন, ”পেইজে গিয়ে দেখলাম তাদের গ্রাহকদের উচ্ছ্বসিত সব রিভিউ। …কিন্তু পেইজের পোষ্টগুলোতে পণ্যের মূল্যমান উল্লেখ নেই।
”এমনকি কমেন্টে যারা দাম জানতে চাচ্ছেন, তাদেরকে আবার ইনবক্সে নক করতে বলা হচ্ছে।”
পেশায় শিক্ষক রিনা মনে করেন, ফেইসবুকে পণ্য বিক্রির পেইজগুলোতে পণ্যের দাম উল্লেখ করা উচিৎ।
তিনি বলেন, ”কেউ যদি কমেন্টে দাম জানতে চায়, তবে তাকে সেখানেও দাম বলা উচিত। ইনবক্সে নক করতে বলাটা কোনোভাবেই সুষ্ঠু সেবার নমুনা হতে পারে না।
”দামের বিষয়ে তথ্য জানাটা কাস্টমারের রাইট। এই বেসিক ইনফোর জানার জন্য কেন ইনবক্স পর্যন্ত যেতে হবে?”
অনার্সের শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, ”ক্রেতা যখন পোস্টে বা মন্তব্যে দাম নিয়ে কোনো উত্তর পায় না, তখন তার সময় নষ্ট হয়, অন্তত আমি তাই মনে করি।”
”আসলে অনেক পেইজে দেখি তো এমন করতে। এসব নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে, কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না।”
গত ১৩ জানুয়ারি এ নিয়ে ফেইসবুকে এই পোস্ট করেছে ভোক্তা অধিকার সংস্থা কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি (সিসিএস)।
পোস্টে তাদের বক্তব্য, “ফেইসবুকে অনেক বিক্রেতা পণ্যের মূল্য জানতে ’ইনবক্স’ করতে বলেন। এটা বেআইনি। ”
”মূল্য ও অন্যান্য তথ্য প্রকাশ্যে উল্লেখ না করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
এই পোস্ট এখন পর্যন্ত ছয়শ বারের বেশি শেয়ার হয়েছে।
২০০৯ সালের ভোক্তা অধিকার আইনের ৩৮ ধারা অনুসারে, “কোনো ব্যক্তি কোনো আইন বা বিধি দ্বারা আরোপিত বাধ্যবাধকতা অমান্য করিয়া তাহার দোকান বা প্রতিষ্ঠানের সহজে দৃশ্যমান কোনো স্থানে পণ্যের মূল্যের তালিকা লটকাইয়া প্রদর্শন না করিয়া থাকিলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।”
কিন্তু এই বিধি ফেইসবুকের অ্যালগারিদম উপযোগী নয় বলে মনে করছেন ফুয়াদ সারওয়ার।
তিনি ফেইসবুকে লিখেছেন, “…এখানে ভোক্তা অধিকার আইন একটি অবৈজ্ঞানিক আবেগময় আইন ছাড়া আর কিছুই না।
”অনলাইন আর অফলাইন মার্কেট এক না। কেউ কিন্তু নিজের ওয়েবসাইটে (ইকমার্সে) প্রাইস হাইড করেনা। কিন্তু ফেসবুক তাদের এলগরিদমটা এমনভাবে সাজিয়েছে যে তারাই এটা প্রমোট করে।”
ডলার মুদ্রার মান ওঠা-নামার পণ্যের মূল্যে পরিবর্তন আনতে হয় বলে প্রকাশ্যে মূল্য লেখাটা বিক্রেতাদের জন্য অসুবিধাজনক, এমন বক্তব্য মোহাম্মদ সাব্বির হোসাইনের।
তিনি ওই পোস্টে মন্তব্য করেছেন, ”যারা ইমপোর্টেড প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করে, তাদের কয়েকবার করে প্রাইস চেঞ্জ করা লাগে, ডলার রেট আপ-ডাউন এর কারণে।
”প্রাইস ছাড়াও ইনবক্সে আরো অনেক তথ্য জানার থাকে যা কমেন্টে সম্ভব নয়। তাছাড়া দরকারে পরবর্তীতে ঐ গ্রাহক ও সেলারকে কমেন্ট থেকে খুঁজে বের করাও কষ্টকর।”
কোনো কোনো বিক্রেতা অবশ্য সিসিএসের ওই পোস্টে মন্তব্য করে জানিয়েছেন, তারা পণ্যের দাম পোস্টে উল্লেখ করে রাখেন।
ঝুন্টু আলী লিখেছেন, “আমি যা কিছু অনলাইনে বিক্রি করি, তার দাম + মান সবটা জানিয়ে দিয়ে থাকি…।”
আপনার নিবন্ধিত ইমেইল থেকে অপ্রকাশিত লেখা/ছবি/ভিডিও আকারে নাগরিক সংবাদ পাঠান [email protected] ঠিকানায়।
নিবন্ধিত নাগরিক সাংবাদিক হতে আপনার নাম (বাংলা ও ইংরেজিতে), ঠিকানা, ফোন নম্বর, ইমেইল আইডি এবং ছবি [email protected] ঠিকানায় ইমেইল করুন।