ত্রাণে ‘প্রয়োজন মিটছে না’ রাজশাহীর বাঘায় পানিবন্দি মানুষের

আব্দুল কাদের নাহিদআব্দুল কাদের নাহিদ
Published : 24 August 2021, 02:11 PM
Updated : 24 August 2021, 02:11 PM

গত কয়েকদিন ধরে পদ্মার পানি বাড়তে থাকায় অসহায় হয়ে পড়েছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চরাঞ্চলের পানিবন্দি বাসিন্দারা। উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের প্রায় তিন হাজার পরিবারের দিন কাটছে এখন ত্রাণের আশায়।

ইউনিয়নের চর কালিদাসখালি, নিচ পলাশি, চকরাজাপুর, লক্ষিনগর, মানিকের চর, আতারপাড়া গ্রামের বেশির ভাগ বাড়িতে ঢুকে পড়েছে পদ্মার পানি।

এ অঞ্চলে ঘরবাড়ি, হাট-বাজার, স্কুল-মাদ্রাসা মসজিদ এবং ফসলি জমিও তলিয়ে গেছে পানিতে। পানিবন্দি মানুষ প্রয়োজনীয় খাবারও কিনতে পারছে না। জ্বালানির অভাবে পারছে না রান্না করতেও।  ত্রাণ যা পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে প্রয়োজন মেটাতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা বলে অনেকে জানালেন।

বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটের কথাও বললেন তারা।

পরিবারের জরুরি আসবাবপত্র ও গবাদি পশু নিয়ে কাছের উঁচু স্থানে আশ্রয়ের আশায় ছুটতে হচ্ছে স্থানীয়দের। কেউ কেউ অন্যের জমিতে পলিথিন ও টিন দিয়ে অস্থায়ী চালা তৈরি করে কোনো রকমে দিন পার করছেন। কিছু কৃষক চলতি ফসল পাট ঘরে  তুলতে পারলেও সম্পূর্ন ডুবে নষ্ট হয়েছে ক্ষেতের ধান।

বাড়ি ছেড়ে কাছের উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে বেশিরভাগ পরিবার।

পরিবারের ১০ জন সদস্য নিয়ে কাছের আম বাগানে আশ্রয় নেওয়া তছির আলী বলেন, "বাড়িতে এখন কোমর অবধি পানি। থাকার মত কোনো উপায় নাই।"

চকরাজাপুর ৩ নম্বর এলাকায় আম বাগানে আশ্রয় নেওয়া গৃহিনী আলেয়া খতুন বলেন, "বাড়ি-ঘর ছেড়ে এসেছি। এখন বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে খাবারের কষ্টে আছি।"

পরিবারের সাত জন সদস্য, পাঁচটি ছাগল আর গরু নিয়ে কাছের আম বাগানে আশ্রয় নিয়েছেন গৃহিনী মুনজিলা বেগমও।

তিনি বলেন, "নিজে তো খেতে পাই না গরু-ছাগলের খাবার দেওয়ার মতও কিছু নেই।"

নিচ পলাশি গ্রামের নাসির উদ্দিন বলেন, "পানি বাড়তে বাড়তে এখন বাড়িতে উঠেছে রান্না করে খাওয়ার মত কোনো উপায় নেই।"

চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিযুল আযম বলেন, "আমাদের ইউনিয়নের পলাশি ফতেপুর ও দাদপুরের কিছু অংশ ছাড়া সব পাড়া-মহল্লার বাসিন্দারা এখন পানিবন্দি।

"সরকারি ত্রাণ আসতে শুরু করেছে। যেগুলো দেওয়া হচ্ছে তাতে ঠিকমত প্রয়োজন পূরণ হচ্ছে না। রান্না করে কারো খাবার মত উপায় নেই।"