শিল্পাঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন দিনে সাপ্তাহিক ছুটির প্রজ্ঞাপন প্রকাশ

এতে ৪৯০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে, আশা বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 August 2022, 01:02 PM
Updated : 11 August 2022, 01:02 PM

বিদ্যুতের লোড শেডিংয়ের তীব্রতা কমাতে দেশের শিল্পাঞ্চলগুলোতে আলাদা দিনে সাপ্তাহিক ছুটি ঠিক করে দিয়েছে সরকার।

এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে কয়েকদিন আগেই জানানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।

বিদ্যুৎ বিভাগ আশা করছে, সাপ্তাহিক ছুটি পুনর্বিন্যাসের ফলে ৪৯০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।

সরকারি হিসাবে, দেশে এখন বিদ্যুতের দৈনিক চাহিদা ১৪ হাজার মেগাওয়াটের বেশি হলেও ১৩ হাজার মেগাওয়াট সরবরাহ করা যাচ্ছে। ফলে লোড শেডিং দিতে হচ্ছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, “দেশের শিল্পাঞ্চলসমূহে বিদ্যুৎ সরবরাহ নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে ভিন্ন-ভিন্ন দিনে সাপ্তাহিক ছুটি পুনর্বিন্যাস করার নিমিত্ত পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভিন্ন ভিন্ন সাপ্তাহিক বন্ধের দিন নির্ধারণ করেছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডাইফ)।”

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ১১৪ (২) ধারার ক্ষমতাবলে সারা দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য জনস্বার্থে সাপ্তাহিক বন্ধের ভ্ন্নি ভিন্ন দিন ধার্যের কথা বলা হয় প্রজ্ঞাপনে।

এই আদেশ এখন থেকে কার্যকর হবে এবং পুনরায় আদেশ না হওয়া পর্যন্ত তা চলবে

বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।”

বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের অর্থনৈতিক সঙ্কট এড়াতে বিদ্যুৎ ও তেলের খরচ কমানোর একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত হয় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে।

সঙ্কটে পড়ে ডলার ধরে রাখতে জ্বালাতি আমদানি কমিয়ে দেয়ায় দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমিয়ে ফেলা হয়।

জুলাইয়ের শুরুতে স্পট মার্কেটের এলএনজি আমদানি বন্ধ করার পর গ্যাসের অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটায় হারিয়ে যাওয়া লোড শেডিং ফিরতে শুরু করে।

এরপর ডিজেলচালিত কেন্দ্রগুলোতে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় লোড শেডিং আরও বেড়ে যায়।

জ্বালানির অভাবে দিনে প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ ঘাটতি সামাল দিতে হচ্ছে কয়েক ঘণ্টা লোড শেডিংয়ের মাধ্যমে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে সব ধরনের আলোকসজ্জা নিষিদ্ধ, রাত ৮টার পর দোকানপাট বন্ধ, সরকারি অফিসে ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয়সহ নানা নির্দেশনা জারি করা হয়।

এরই মধ্যে গত রোববার বিদ্যুৎ ভবনে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিটিএমএ ও বিকেএমইএর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বিদ্যুতের লোড শেডিংয়ের তীব্রতা কমাতে শিল্পাঞ্চলগুলোতে আলাদা দিনে সপ্তাহিক ছুটি দেওয়ার বিষয়ে সরকারের প্রস্তাবে একমত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, “বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে ৪৯০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে দিনে। আমরা বলেছি, কেবল ঢাকায় নয়, সারা দেশেই যেন এরকম ছুটি কার্যকর করা হয়।”

এক সময় যখন নিয়মিত লোড শেডিং হত, তখন এরকম ছুটির ব্যবস্থা চালু ছিল জানিয়ে বিকেএমইএর সহসভাপতি ফজলে শামীম আহসান বলেন, “আমরা বলেছি, প্রয়োজনে সে ধরনের সূচি আবার চালু করা হোক। তবে ডায়িং ও স্পিনিং ফ্যাক্টরিকে কিছুটা ছাড় দেওয়া যায় কিনা, সেই প্রস্তাব আমরা করেছি।”