যাদের নাম পত্রিকায় এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কিনা, তদন্ত হচ্ছে কি-না, সেসব তথ্য আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে।
Published : 18 Oct 2022, 05:29 PM
দেশের আর্থিক খাতের ৩৭০০ কোটি টাকা ‘লুটপাটে’ বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক পাঁচ ডেপুটি গভর্নরসহ জড়িতদের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার দুদকের কাছে এই প্রশ্ন রেখেছে।
বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, “কী পদক্ষেপ নিয়েছে, দেখান। যাদের নাম এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে? তদন্ত হচ্ছে কি-না, জানান। চিঠি লিখে আপনারা বাংলাদেশ ব্যাংককে বলেন।”
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক, দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
‘৩৭শ কোটি টাকা লুটপাটে দায়ী পাঁচ ডেপুটি গভর্নর’ শিরোনামে দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের বলা হয়, “বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসি) ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডে (আইএলএফএসএল) আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দায় রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক পাঁচ ডেপুটি গভর্নরসহ ২৪৯ কর্মকর্তার।
“কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তিনটি বিভাগের এই কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুট করেছেন আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) এবং মেজর (অব.) মান্নান। নজিরবিহীন এই অনিয়মের কারণ ও দায়ীদের চিহ্নিত করতে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির আলাদা তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। মোট ১২শ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দুটি এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।”
সকালে আদালত বসার পর ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আইনজীবীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিচারকরা। পরে উভয়ক্ষের আইনজীবীরা শুনানিতে অংশ নেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা ২৭ অক্টোবরের মধ্যে জানাতে আদালত দুদককে বলেছে।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আদালতে আমরা বলেছি, হাই কোর্টের অন্য একটি বেঞ্চের নির্দেশে এই প্রতিবেদন (যার কথা পত্রিকায় লেখা হয়েছে) প্রস্তুত করা হলেও সেটি একটি কোম্পানি কোর্ট। আর এখানে দুর্নীতির বিষয় থাকায় এই কোর্টের এই বিষয়টি দেখার বিষয় আছে।”
দৈনিক কালবেলার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিআইএফসি ও আইএলএফএসএল থেকে ‘অবৈধভাবে’ জামানতবিহীন ঋণ নিয়ে মোট ৩ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা ‘আত্মসাৎ’ করা হয়েছে। এর মধ্যে আইএলএফএসএল থেকে শুধু ভারতে কারাবন্দি প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) এবং তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামেই নেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। আর বিআইএফসি থেকে বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান ও তার প্রতিষ্ঠান ‘নিয়ে গেছে’ ৬০০ কোটি টাকা।
“বছরের পর বছর ধরে এই লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও নিশ্চুপ ছিলেন প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।”