দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জনসহ কয়েকটি দাবিতে ১-৭ জানুয়ারি আদালত বর্জন করেন বিএনপিসহ সরকারবিরোধী আইনজীবীরা; সে সময় প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেন দুই আইনজীবী।
Published : 11 Jan 2024, 01:08 PM
প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বিএনপিপন্থি দুই আইনজীবীকে চার সপ্তাহ সময় দিয়েছে আপিল বিভাগ। এ সময়ের মধ্যে তারা সুপ্রিম কোর্টের কোনো বিভাগে মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।
দুই আইনজীবী হলেন- অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মহসিন রশিদ ও অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল।
এদিন সকালে তাদের পক্ষে সময়ের আবেদন করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জনসহ কয়েকটি দাবিতে ১ থেকে ৭ জানুয়ারি আদালত বর্জন কর্মসূচি পালন করেন বিএনপিসহ সরকারবিরোধী আইনজীবীরা। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেন অ্যাডভোকেট মহসীন ও বাদল।
ওই চিঠি দিয়ে আদালতের ‘মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার’ ব্যাখ্যা দিতে গত ৩ জানুয়ারি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আপিল বিভাগ এ দুই আইনজীবীকে তলব করে। বৃহস্পতিবার [১১ জানুয়ারি] তাদের ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য দিন ধার্য ছিল।
ব্যাখ্যা চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে অ্যটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এর আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “চিঠি দেওয়া ভাষা ভালো ছিল না।”
গত ১ ডিসেম্বর অ্যাডহক কমিটির প্যাডে প্রধান বিচারপতি বরাবর চিঠি দেন অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ ও অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল।
ওই চিঠিতে বলা হয়, দেশে একটি ‘অনির্বাচিত, জবাবদিহিহীন এবং অস্বচ্ছ ফ্যাসিবাদী’ শাসনের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের ওপর ‘নিপীড়ন’ চালানো হচ্ছে। এর ফলে মানুষ প্রজাতন্ত্রের প্রতি ‘আস্থা হারিয়ে ফেলছে’।
এ অবস্থায় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিবাদে আইনজীবীরা ১ থেকে ৭ জানুয়ারি আদালত বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, “এমন একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে আইনজীবী, জনগণ স্বাধীন, বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা রাখছে। আশা করছি মানবাধিকার রক্ষাকারী হিসেবে বিচার বিভাগ কার্যকরভাবে ভূমিকা পালন করবে।”
চিঠিতে বলা হয়, “পুলিশ এবং বিচার বিভাগ উভয়ই সরকারের ফ্যাসিবাদী নিপীড়নের সহায়ক হয়ে উঠেছে। সাধারণ নাগরিকদের প্রাপ্য জামিন আবেদন নামঞ্জুর এবং দ্রুতগতিতে বিচার পরিচালনা করা ন্যায় বিচারকে কবর দেওয়া হয়েছে।
“এই পরিস্থিতিতে, আদালত বর্জন কর্মসূচি চলাকালে মামলা সংশ্লিষ্ট যেসব আইনজীবী শুনানিতে অংশ নিতে অথবা নির্ধারিত তারিখে আদালতে উপস্থিত থাকতে পারবেন না, সেসব মামলার পরবর্তী কার্যক্রম ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হোক। সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের অনুপস্থিতে মামলা খারিজ বা বিরূপ আদেশ দেওয়া উচিত হবে না।”
২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা মুখোমুখি হন। ওই সময় আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা নির্বাচনে অংশ নিলেও বিএনপিপন্থি আইনজীবী শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকেননি।
পরে আবার নির্বাচন অনুষ্ঠান করার লক্ষ্যে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা একটি অ্যাডহক কমিটি গঠন করেন। আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা এর বিরোধিতা করে আসছেন তখন থেকে।
পুরনো খবর