ঢাকা শহরে প্রতিদিন ৭০০০ মেট্রিক টন কঠিন বর্জ্য তৈরি হয়, তার মধ্যে ১০ শতাংশ সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
Published : 11 Feb 2024, 09:04 PM
ঢাকা শহরকে রক্ষায় পরিবেশ ধ্বংসকারী একবার ব্যবহারযোগ্য (সিঙ্গেল ইউজ) প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার বন্ধের দাবি করছেন ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ।
রোববার সংসদের অধিবেশনে জরুরি জনগুরুত্বসম্পন্ন নোটিসে (৭১ বিধি) এ দাবি করেন তিনি।
সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে না পারলে রাজধানীর পরিবেশ রক্ষা করা চ্যালেঞ্জ দাঁড়াবে জানিয়ে ফেরদৌস বলেন, “প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সাথে সাথে আমরা প্রতিদিন অতিমাত্রায় প্লাস্টিক নির্ভর হয়ে পড়ছি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, উৎসবে, পিকনিকে ওয়ান টাইম গ্লাস, চায়ের কাপ, প্লেট, চামচ, প্যাকেট ইত্যাদি ব্যবহারের পর আমরা যত্রতত্র ফেলে দেই।”
“নির্বাচনী প্রচারসহ অনেক বিজ্ঞাপন ও প্রচারণার জন্য এখন প্লাস্টিকে মোড়ানো পোস্টার ও লিফলেটের ব্যবহার রেড়েছে আগের চেয়ে বহুগুণ। প্রয়োজন শেষে ফেলে দেয়া এ সকল প্লাস্টিক বছরের পর বছর মাটির নিচে থাকলেও পচে না। এ ধরনের 'ওয়ান টাইম' প্লাস্টিক বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বের উদ্বেগের কারণ।”
তিনি বলেন, “প্রয়োজন ফুরালে এসকল প্লাস্টিকের শেষ ঠিকানা হয় রাজধানীর ড্রেন ও নালা-নর্দমা। এতে একদিকে বাড়বে জলাবদ্ধতা, অন্যদিকে দেখা দিচ্ছে পরিবেশের ভয়ংকর ক্ষতি। ঢাকা শহরকে বাঁচাতে ও পরিববেশ দূষণের হুমকি থেকে বাংলাদেশকে রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।”
পরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এ ধরনের একটি প্রস্তাব আনার জন্য ফেরদৌসকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দেন।
মন্ত্রী বলেন, “একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বা ওয়ান টাইম প্লাস্টিক বলতে আইনগতভাবে কী বোঝায় সে সংজ্ঞাটা তৈরি করেছি আমরা। পণ্যগুলো চিহ্নিত করেছি- পানির বোতল, প্লাস্টিকের চামচ, প্লেট, স্ট্র হতে পারে। আমাদের সুনির্দিষ্ট প্রেক্ষাপট প্রয়োজন, কি কি পণ্যকে সিঙ্গেল ইউজ তালিকায় নিয়ে আসব, এরপর উৎপাদন, বিতরণকে কন্ট্রোল করতে চাই।”
পরিসংখ্যানগত তথ্য তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, সারা বাংলাদেশে প্রতিদিন ৩০ হাজার মেট্রিক টন কঠিন বর্জ্য উৎপাদন হচ্ছে। ঢাকা শহরে প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে প্রায় ৭ হাজার মেট্রিক টন; এর মধ্যে ১০ শতাংশ সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক।
“এর ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে আমরা আগামী দুই বছরে ৯০ শতাংশ কমাতে চাই। পর্যায়ক্রমে আমরা এর উৎপাদন ও বিতরণ বন্ধ করতে চাই। আমরা এ বিষয়ে কিছু কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছি। তবে এ ক্ষেত্রে আমাদের সকলের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার। বিকল্প থাকা সত্ত্বেও আমরা সহজলভ্য হওয়ায় সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক গ্রহণ করছি।”
সিঙ্গেল ইউজস প্লাস্টিক বন্ধের বিষয়ে উদ্যোগ তুলে ধরে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, “আমি প্রস্তাব করব-আমরা যেন সিঙ্গেল ইউজ প্লাটিক বন্ধ করি। এটা দেশের জন্য একটি ভালো দৃষ্টান্ত হবে। যে পণ্যগুলো তৈরি করবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য তাদেরকে দায়ী করতে চাই। এজন্য আমরা বিধি তৈরির উদ্যোগ নিচ্ছি।”
“আমরা ১০০ দিনের যে কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছি- সেখানেও দূষণের বিষয়টি নিয়ে আসছি। সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক থেকে কিভাবে বেরিয়ে আসব, আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি।”
আরও পড়ুন