বিদেশি যাত্রী ও পাইলটদের কাছে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আলোচনা থাকে মশার কারণেও; যা তাড়াতে ভিন্ন উপায় খুঁজছে কর্তৃপক্ষ।
মশার প্রকোপ থেকে রক্ষায় গত এক দশকে প্রথাগত নানা উপায়ে চেষ্টা করেও খুব বেশি সুবিধা না হওয়ায় এবার প্রাকৃতিক পদ্ধতি অনুসরণ শুরু করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
প্রথাগত পদ্ধতির পাশাপাশি গাপ্পি মাছ, গাঁদা ও তুলসি গাছ দিয়ে মশা তাড়ানোর প্রাকৃতিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি চলছে জোর পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, কয়েক মাস আগে বিমানবন্দরের ‘এয়ার ও ল্যান্ড সাইডের’ বিভিন্ন খাল ও পুকুরে গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়েছে। একই সঙ্গে মশা নিরোধক গাছ যেমন- গাঁদা, লেমন গ্রাস ও তুলসি রোপন করা হয়েছে।
দেশের প্রধান এ বিমানবন্দরে মশার বেশি উৎপাত শুরু হয় মূলত শীতের শেষে। কয়েক মাস সন্ধ্যা নামতেই বিমানবন্দরে মশার আক্রমণ সাংঘাতিক আকার ধারণ করে। নিয়মিত ধোঁয়া, ধূপ, কয়েল ব্যবহার করেও রেহাই মেলে না। উড়োজাহাজে মশা ঢুকে পড়ায় ফ্লাইট দেরি হওয়ার মত ঘটনার নজিরও আছে।
এমন প্রেক্ষাপটে এবার আগেভাগেই মশা নিধনে ব্যবস্থার কথা জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল জানান, ডেঙ্গু মশা নিধন এবং সামনের শীত মৌসুমে কিউলেক্স মশার সমস্যা নিরসনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এবং সরকারের কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) দপ্তরের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। লার্ভা নিধনে প্রতিদিন বিমানবন্দরের বিভিন্ন স্থানে ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে। পূর্ণ বয়স্ক মশা নিধনে বিভিন্ন জায়গায় বারবার কীটনাশক স্প্রে ও ধোঁয়া (ফগিং) দেওয়া হচ্ছে।
বিমানবন্দরে ঢোকা ও বের হওয়ার সকল ফটকের পাশেই ভোরে ও সন্ধ্যায় ধূপ জ্বালানো হচ্ছে। বৈদ্যুতিক মশার ফাঁদও ব্যবহার হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় গঠিত টাস্কফোর্সের তত্ত্বাবধানে বিমানবন্দরের ভেতরের খাল ও পুকুর নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকার বর্জ্য নিয়মিত অপসারণ করা হচ্ছে।
এছাড়া আশপাশের এলাকার মশা যাতে না আসে সেজন্য বিমানবন্দর সংলগ্ন ১, ৬ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড মশামুক্ত রাখতে ডিএনসিসিকে অনুরোধ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। সিডিসিকে বিমানবন্দর ও আশপাশের ওই তিনটি ওয়ার্ড এলাকায় দুই মাস পরপর সার্ভে করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
নির্বাহী পরিচালক কামরুল জানান, গত জুলাই ও সেপ্টেম্বরে সিডিসির দুটি জরিপে দেখা গেছে, বিমানবন্দরের পরিচ্ছন্নতা ও লার্ভার নিয়ন্ত্রণ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে সন্তোষজনক।