অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং বাংলাদেশ পুলিশ আলাদা তিনটি তদন্ত কমিটি করেছে।
Published : 07 Apr 2023, 10:18 AM
রাজধানীর বঙ্গবাজারে গত মঙ্গলবার ভোরে যে আগুন লেগেছিল, তা শুক্রবার সকালে পুরোপুরি নির্বাপণ করার কথা জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
এ বাহিনীর উপসহকারী পরিচালক শাহজাহান সিকদার বলেন, “আজ সকাল সাড়ে ৯টায় সব প্রক্রিয়া শেষে বঙ্গবাজারের আগুন নির্বাপণ সম্পন্ন হয়েছে।”
আগুন লাগার পর নিরাপত্তার কথা ভেবে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছিল। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎও ফিরতে শুরু করেছে।
দেশের অন্যতম বড় কাপড়ের মার্কেট বঙ্গবাজারে মঙ্গলবার সকাল ৬টা আগুন লাগার পর দুই মিনিটের মধ্যে সেখানে ফায়ার সার্ভিস পৌঁছে গেলেও ‘সর্বনাশ’ ঠেকানো যায়নি। বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে টিন ও কাঠ দিয়ে তৈরি দোকানগুলোয়।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগুনের ভয়াব্হতা বাড়ে এবং ফায়ার সার্ভিসও তাদের ইউনিটের সংখ্যা বাড়াতে থাকে। বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীও যোগ দেয় সেই কাজে, ছিল পুলিশ, র্যাব এবং আনসারও। পানি ছিটাতে থাকে হেলিকপ্টারও।
আগুনে বঙ্গবাজার মার্কেট, মহানগর মার্কেট, আদর্শ মার্কেট ও গুলিস্তান মার্কেট পুরোপুরি ভষ্মীভূত হয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাশের এনেক্সকো টাওয়ার এবং আরও কিছু ভবন।
ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিটের সাড়ে ৬ ঘণ্টার চেষ্টায় সেদিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও বিভিন্ন স্থানে শিখা দেখা যাচ্ছিল। এমনকি রাতেও দুটি স্থানে আগুন জ্বলতে দেখা যায়, তা নেভাতে কাজ করে যান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
বুধবার ও বৃহস্পতিবার এনেক্সকো টাওয়ার ও বঙ্গবাজারের পশ্চিম পাশে থাকা ভবনগুলো থেকে মালামাল নামিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও ব্যবসায়ীরা। তখনো ভবনগুলো থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পানি মেরে সেগুলোকে ঠাণ্ডা করার কাজ করেছেন।
তারা বলছেন, কাপড়, কাগজ, পাট এই ধরনের পণ্যাগারে আগুন লাগলে আগুন নিয়ন্ত্রণের পর তা নির্বাপণ করতে অনেক বেশি সময় লাগে। কারণ অনেক জায়গা থেকে আগুন জ্বলতে থাকে।
সেজন্য আগুন লাগা ভবনের সব পণ্য নামিয়ে আগুন আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে হয়। সেই কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পরে আগুন নির্বাপিত হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়।
বঙ্গবাজার, উত্তর পশ্চিম কোণের সাততলা এনেক্সকো টাওয়ার, তার পূর্ব পাশে মহানগর কমপ্লেক্সসহ আশপাশের মার্কেট মিলিয়ে ৫ হাজারের মত দোকান ছিল, তার অধিকাংশ পুড়ে গেছে এ আগুনে।
ঈদের আগে সব দোকানেই লাখ লাখ টাকার পোশাক তোলা হয়েছিল, সব পুড়ে যাওয়ায় পথে বসার উপক্রম হয়েছে হাজার পাঁচেক ব্যবসায়ীর।
সরকারের পাশাপাশি বহু ব্যক্তি ও সংগঠন ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তায় নানা উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
ভয়াবহ এই আগুনে কারও মৃত্যুর খবর আসেনি। তবে ফায়ার সার্ভিসের আটকর্মীসহ বেশ কয়েকজন আহত ও দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং বাংলাদেশ পুলিশ আলাদাভাবে তিনটি তদন্ত কমিটি করেছে, তারা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও নিরূপণ করবে।