শহরজুড়ে ‘মৃত্যুফাঁদ’, মানুষ মরলেই ‘জাগে’ কর্তৃপক্ষ

“গ্রিন কোজি কটেজের মত একটা বাণিজ্যিক ভবন পরিচালনার জন্য সরকারের যে আটটি সংস্থার অনুমোদন লাগে, এসব সংস্থার প্রত্যেকটিকেই এই অবহেলাজনিত হত্যার আসামি হওয়ার উচিত।”

গোলাম মর্তুজা অন্তুবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2024, 07:40 PM
Updated : 1 March 2024, 07:40 PM

চার বছর আগে রাজধানীর বনানীতে এফ আর টাওয়ারে আগুন লেগে ২৭ জনের মৃত্যুর পরেই প্রকাশ পায় ভবনের নানা গুরুতর অনিয়মের কথা। কর্তৃপক্ষ ‘জাগ্রত হয়ে’ জানায় নকশা বহির্ভূত অতিরিক্ত তলাসহ নিরাপত্তার ঘাটতির কথা।

নিমতলী বা চুড়িহাট্টার আগুনে শতপ্রাণ ঝরার পর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সেখানে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা রাসায়নিকের মজুদ প্রাণ কেড়েছে।

এভাবে প্রতি বছরই আগুনে মানুষ হতাহত হওয়ার পর জানা যায় ভবনের অনুমোদন সংক্রান্ত নানা অনিয়মের কথা। প্রতিবারই প্রশ্ন উঠে, মানুষ মরলেই কেন কর্তৃপক্ষের ‘ঘুম ভাঙে’, স্বাভাবিক সময়ে এত বড় বড় ভবনে দৃশ্যমান অনিয়মগুলো কেন চোখে পড়ে না?

ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, খিলগাঁওসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় এক ভবনে অনেকগুলো রেস্তোরাঁ খুলে বসা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে। ধানমন্ডির একটি ভবনের স্থপতি তার নকশা করা ভবনটিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলছেন, কারণ সেটি জুড়ে গড়ে উঠেছে অনেকগুলো রেস্তোরাঁ, যেখানে অগ্নিনিরাপত্তার বালাই নেই।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সহসভাপতি স্থপতি ইকবাল হাবিব বলছেন, “গ্রিন কোজি কটেজের মত একটা বাণিজ্যিক ভবন পরিচালনার জন্য সরকারের যে আটটি সংস্থার অনুমোদন লাগে, এসব সংস্থার প্রত্যেকটিকেই এই অবহেলাজনিত হত্যার আসামি হওয়ার উচিত।”

গত বছরের ৭ মার্চ গুলিস্তানে ক্যাফে কুইন ভবনে বিস্ফোরণেও প্রাণ যায় ২৩ জনের। ওই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেছিলেন, “ভবনটিতে কোনো সংস্কার হত না, পয়ঃনিস্কাশন নিয়মিত তদারকি হত না, পার্কিং এলাকায় গুদাম ভাড়া দেওয়ার নিষেধ থাকার পরেও দেওয়া হয়েছে, ব্যবসায়ীরা জেনেও নিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সংস্থার তদারকিরও অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে।”

সেই ঘটনার পরও তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে, সরকারি সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয় নিয়ে কথা হয়েছে। জানানো হয়, সেই ভবন মালিককে নোটিসও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ আর কিছুই করা হয়নি।

বেইলি রোডের এই ভবনটিতে এতগুলো রেস্তোরাঁ বসানোর বৈধতা ছিল না, ফায়ার সার্ভিস তাদেরকে নোটিসও দিয়েছিল, কিন্তু আর কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। 

‘টনক’ কখন নড়বে?

বেইলি রোডের ওই ভবনে আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যুর পর ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলছেন, “ভবনটিতে কোন ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না। আমরা দু-একটি ফায়ার এক্সটিংগুইশার দেখেছি। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা একটি মাত্র সিঁড়ি, একটাই পথ।” 

তিনি জানান, যে কক্ষে মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল সেখানে কোনো ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা নেই, একটি জানলাও নেই। প্রায় প্রতিটি ফ্লোরে খাবারে দোকান, গ্যাস সিলিন্ডারগুলো রাখা ছিল অপরিকল্পিতভাবে।

ভবনের চতুর্থ তলার সিঁড়িতে এখনো সিলিন্ডার রাখা আছে। তবে কোনো সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়নি।

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলছেন, ভবনের অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভবন কর্তৃপক্ষকে তারা একাধিকবার নোটিস দিয়েছিলেন। তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কি না তা জানাননি তিনি।

ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের সাবেক উপপরিচালক সেলিম নেওয়াজ ভুঁইয়া এখন অগ্নি নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বলছেন, “আইনগতভাবে কোনো ব্যত্যয় ঘটলে ফায়ার সার্ভিস একটা নোটিস দেবে। তা না মানলে সেই ভবন ব্যবহারযোগ্য নয় বলে ঘোষণা করতে হবে।”

বারবার নোটিস দেওয়ার বিধান কোন আইনে আছে সে প্রশ্ন তুলে তিনি বলছেন, “আইনে বলা আছে তারা যদি সেইফটি প্ল্যান বাস্তবায়ন না করে আপনি তখন অ্যাকশনে যাবেন। আপনার (ফায়ার সার্ভিসের) মামলা করার এখতিয়ার না থাকলে সিটি করপোরেশন বা জেলা প্রশাসনসহ যেসব কর্তৃপক্ষ মামলা করতে পারে আপনি তাদেরকে চিঠি দিয়ে জানান।”

ভবনের অনিয়ম দেখার কর্তৃপক্ষ আসলে কার?

প্রথমত, যে কোনো ভবনের নকশা অনুমোদন দেওয়ার এখতিয়ার রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউকের।

নকশা অনুমোদনের সময়ই নির্ধারণ করে দেওয়া হয় সেটি আবাসিক না বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা হবে। বাণিজ্যিক ভবন হলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা এর নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করে নিরাপত্তা পরিকল্পনা দেওয়ার কথা। কিন্তু ভবনগুলোতে মানুষ মরার পর অনুমোদন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ আশরাফুল ইসলাম বলছেন, “ভবনটির এক থেকে সাততলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে অনুমোদন নেওয়া ছিল। তবে সেখানে রেস্তোরাঁ বা দোকানের জন্য অনুমোদন ছিল না। ওই অনুমোদনে সেখানে অফিস হতে পারত।”

আইনি বাধ্যবাধকতা না থাকলেও ভবনটি যেহেতু বাণিজ্যিক, সেহেতু আলাদা অগ্নি নির্গমন পথ রাখা দরকার ছিল বলে মনে করেন আশরাফুল।

ভবন নির্মাণের সময় এবং নির্মাণের পরে রাজউক ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের ভবনের নিরাপত্তা যাচাই করে সেখানে স্থাপিত বাণিজ্যিক সংস্থাগুলোর অনুমোদন দেওয়ার কথা। কিন্তু কেউ সেগুলো করছেন না বলে ভাষ্য ইকবাল হাবিবের।

বেইলি রোডে পুড়ে যাওয়া গ্রিন কোজি কটেজ ঘুরে এসে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ভবনটির প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে ফায়ার এক্সিট, তার মূল যে সিঁড়ি, প্রত্যেকটি আইনের ব্যত্যয় করে অত্যন্ত সরু। পুরো ভবনটি আবদ্ধ, তার কোনো নরমাল ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা নেই।

“ভবনের যে জায়গাগুলোতে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়ার কথা ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক দেখাচ্ছিলেন, সেই কক্ষগুলোতে কোনো ধরনের আলো-বাতাস ঢোকার জায়গা ছিল না। মানুষগুলো দম বন্ধ হয়ে, ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে মারা গেছেন।”

কমপ্লায়েন্সের বিষয়গুলোর কারণে কোনোভাবেই রাজউকের এই ভবনের অনুমোদন দেওয়ার সুযোগ ছিল না বলেও মত এই প্রকৌশলীর।

বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে অনুমোদন নিয়ে রেস্তোরাঁ কীভাবে হয়- সে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “রেস্তরাঁর রান্নাঘরগুলো হচ্ছে বাণিজ্যিক রান্নাঘর। এর নকশা অত্যন্ত জটিল। সেটি এখানে অনুমোদন পেতে পারে না।”

এসব অনুমোদন ছাড়া সিটি করপোরেশন ট্রেড লাইসেন্স দিতে পারে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সেবা সংস্থাগুলো যারা এর অনুমোদন দিয়েছে তারা কোনো না কোনোভাবে এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। যারা যারা অনুমোদন দিয়েছেন কিন্তু সরেজমিনে দেখেন নাই, এই কমপ্লায়েন্স ইস্যুগুলো নিশ্চিত করেন নাই, তাদের প্রত্যেককে আসামি দেখতে চাই।”

ঢাকায় এ রকম অসংখ্য ভবনে গ্লাসবক্স বানিয়ে, সিলিন্ডার দিয়ে ‘অন্ধকূপ’ বানিয়ে ফেলা হয়েছে বলে সতর্ক করেন ইকবাল হাবিব।

তিনি বলেন, “ভাগ্য ভালো এই ভবনের সিলিন্ডারগুলো একটাও ফাটেনি। এগুলো ফাটলে পুরো এলাকা অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হতে পারত।

“আমরা আশা করি আগামীকাল সরকার বসে এই নগরের টাইম বোমের মত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো টাস্কফোর্সের মাধ্যমে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেবে। যেভাবে রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশ সরকার পুরো একটি শিল্প খাতকে মাত্র আড়াই বছরের মধ্যে পরিবর্তন করে ফেলেছিল, সেভাবে আগামী ছয় মাসের মধ্যে সমস্ত ভবনের কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা হোক।”

বাকি ভবনগুলোর কী হবে

পুরো ঢাকাজুড়ে এখন বহুতল ঝাঁ চকচকে ভবনে রেস্তোরাঁ করার চল গড়ে উঠেছে। ধানমণ্ডির সাতমসজিদ সড়কের দুপাশে এ রকম অন্তত এক ডজন ভবন গড়ে উঠেছে যেগুলোর একেকটিতে ২০টি পর্যন্ত রেস্তোঁরা ও খাবারের দোকান রয়েছে। সেগুলো আদৌ নিরাপদ কি না তা নিয়ে প্রশ্ন আগেও ছিল, বেইলি রোডের ঘটনার পর তা আরো বড় হয়েছে।

স্থপতি তরিকুল লাভলু সাতমসজিদ রোডের ১৪ তলা ‘গাউসিয়া টুইন পিক’ ভবনের ছবি দিয়ে এ রকম প্রশ্ন তোলার পর এই ভবনটির স্থপতি মুস্তফা খালিদ পলাশ তার ফেইসবুক পাতায় লিখেছেন, ওই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ এবং তিনি প্রতিনিয়ত সেটি নিয়ে উৎকণ্ঠায় থাকেন।

গাউসিয়া টুইন পিক ভবনে দশটির বেশি রেস্তোরাঁ ও খাবারের দোকান রয়েছে।

স্থপতি খালিদ লিখেছেন, “নকশা এবং অনুমোদন বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে হলেও এর ব্যবহারে বড় রকমের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সার্বিকভাবে একে সমূহ অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ রেস্তোরাঁ ভবনে রূপান্তর করা হয়েছে। স্থপতি হিসেবে শেষ যে ক্ষমতাটুকু রাজউক দিয়েছে অকুপেন্সি সার্টিফিকেটের জন্য রিপোর্ট স্বাক্ষর করার, তার তোয়াক্কাও এখানে করা হয়নি। অকুপেন্সি সার্টিফিকেট না নিয়েই চলছে দেদার ব্যবসা।”

স্থপতি হিসেবে রিপোর্ট ও এজবিল্ট ড্রইং প্রদান থেকে বিরত থেকে জমির মালিক, ডেভেলপারকে বার বার লিখিত বার্তায় সতর্ক করেছেন খালিদ। তিনি লেখেন, “কোনো ফলপ্রসূ অগ্রগতি হয়নি। ডেভেলপারকে জিজ্ঞেস করলে উত্তর আসে, তাদের নাকি ফায়ার লাইসেন্স আছে।”

ভবনটি বানিয়েছে গাউসিয়া ডেভেলপারস লিমিটেড। তাদের ওয়েবসাইট ও ফেইসবুক পাতা থেকে ফোন নম্বর নিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি।

ওই এলাকাটি ফায়ার সার্ভিসের মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের অধীনে।

মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা মো. ফখরুদ্দীন বলছেন, তিনি স্থপতি মুস্তফা খালিদ পলাশের কোনো চিঠি পাননি। তবে তার আপত্তির বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছেন।

ফখরুদ্দীন বলেন, “আমি এখানে নতুন এসেছি। আমাদের ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে হবে অভিযোগের সত্যতা কতখানি, সেটা কতখানি ঝুঁকিপূর্ণ, ভবনের সেইফটি-সিকিউরিটির কী অবস্থা। তার আগে আসলে হুট করে কিছু বলা ঠিক হবে না।”

অন্দরসজ্জার অতি দাহ্য সরঞ্জাম

বেইলি রোডের ওই ভবনে আগুন নেভাতে যাওয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানিয়েছেন, ভবনটির ভেতরে ঠাসা ছিল দাহ্য অন্দরসজ্জার নানা উপকরণে। সেগুলোই দাউ দাউ করে জ্বলেছে আর ধোঁয়া উৎপন্ন করেছে প্রচুর।

ফায়ার সার্ভিসের একজন লিডার বলছেন, তারা এখন যে কোনো বাসা বাড়িতে আগুন নেভাতে গেলেই দেখেন ভেতরে প্রচুর দাহ্য সামগ্রী ব্যবহার করা হয়।

ভবনের নকশা ও অন্দরসজ্জার কাজে নিয়োজিত কোম্পানি ‘ডট ফাইভ’ এর কর্ণধার মাহফুজ খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা সত্যি যে ভবনের অভ্যন্তরীণ সজ্জায় প্রচুর দাহ্য বস্তু ব্যবহার করা হয়। ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে ভবনের অন্দরসজ্জা করা হয় পার্টিকেল বোর্ড দিয়ে, যেটা অতি দাহ্য।

“ভবনের সিলিংয়ের ডিজাইন, ওয়্যাল প্যানেলিং, পার্টিশন ওয়াল সবকিছুতেই এই বোর্ড ব্যবহার করা হয়, যার কারণে আগুন লাগার পর দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।”

অগ্নিনিরোধক অনেক উপকরণ থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় সেগুলোর ব্যবহার কম জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা ডিজাইন দেওয়ার পর ক্লায়েন্টদের দুই ধরনের ম্যাটেরিয়াল দিয়েই করার প্রস্তাব উপস্থাপন করি। কিন্তু ক্লায়েন্ট যখন দেখেন যে অগ্নিনিরোধক উপকরণের দাম বেশি পড়ছে, তখনই তারা পিছিয়ে আসেন।”

এখন দেশে নানা রকম অগ্নি নিরাপত্তার সরঞ্জাম চলে এসেছে জানিয়ে মাহফুজ বলেন, “দামে বেশি হওয়ায় গ্রাহকেরা সেগুলোতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

“দেয়ালে রঙের মত এক ধরনের ফায়ারপ্রুফ কেমিকেল কোটিং (আস্তর) আছে, যেটা দিলে এক ঘণ্টা পর্যন্ত দেয়াল আগুন থেকে রক্ষা পায়। সেগুলোর প্রতিও আগ্রহ কম। এখন বিভিন্ন ধরনের অগ্নিনিরোধক দরজা রয়েছে, যেগুলো দুই ঘণ্টা পর্যন্ত আগুন থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। জরুরি নির্গমন সিঁড়িতে আমরা এই দরজাগুলো লাগাতে বলি। কিন্তু দামের কারণে অনেকেই সেটা এড়িয়ে যান।

“স্বয়ংক্রিয় অ্যালার্ম এবং ফায়ার স্প্রিংকলারসহ অনেক রকম আধুনিক পদ্ধতিও বাজারে রয়েছে, কিন্তু বেশিরভাগ গ্রাহক তাতে আগ্রহ দেখান না।”

তবে পাঁচ তারকা হোটেল, বহুজাতির কিছু কোম্পানি এখন অগ্নিনিরোধক উপকরণ ব্যবহার করছে জানিয়ে মাহফুজ বলেন, “আগুন লাগার পর বসুন্ধরা-যমুনার মত অনেক বড় কোম্পানিই ঝুঁকি কমাতে খোলা সিলিং রাখছে।”