এর মধ্য দিয়ে দুই যুগ আগের এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হল।
Published : 28 Aug 2022, 09:22 PM
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী আদালতে সাক্ষ্য দিলেন। এর মধ্য দিয়ে দুই যুগ আগের এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হল।
রোববার ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে তিনি সাক্ষ্য দিয়ে সেদিনের ঘটনার সবিস্তার বর্ণনা করেন। বাদী হিসাবে তিনি কাঠগড়ায় কয়েকজন আসামিকে শনাক্ত করেন। এ সময় তিনি সব আসামির শাস্তি চান।
এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা শুরু করেন। তবে জেরা শেষ না হওয়ায় অবশিষ্ট জেরা ও পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৩০ অগাস্ট দিন রেখেছেন বিচারক মো. জাকির হোসেন।
আলোচিত এই হত্যা মামলার আসামিরা হলেন- ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও আশীষ চৌধুরী, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন, আদনান সিদ্দিকী, তারিক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ও ফারুক আব্বাসী।
আসামিদের মধ্যে সানজিদুল ইসলাম ইমন, আশীষ চৌধুরী ও তারিক সাঈদ মামুনকে রোববার কারাগার থেকে এজলাসে হাজির করা হয়। আদনান সিদ্দিকী অসুস্থ জানিয়ে তার পক্ষে হাজিরা দেন আইনজীবী ফারুক আহমদ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ শামসুল হক বাদল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গত ২২ অগাস্ট তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হয়েছিলেন। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেন, মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারের সময় শেষ হয়ে গেছে। তাই মামলাটি দায়রা আদালতে ফেরত পাঠানোর প্রার্থনা করেন তারা।
তবে ২৪ অগাস্ট সেই আবেদন খারিজ করে আদেশ দেন আদালত। একইসঙ্গে ২৮ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করে বাদীকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছিল।
১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সোহেলকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার দিনই তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন।
এই অভিনেতা খুন হওয়ার পর চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: কেস ডকেট উপস্থাপনে শেষ সুযোগ পেলেন ফরিদ
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: গ্রেপ্তার দেখানো হল আশীষ চৌধুরীকে
ওই মামলায় ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়। এরপর মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ২০০৩ সালে ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে পাঠানো হয়।
কিন্তু আসামিদের মধ্যে তারিক সাঈদ মামুনের পক্ষে হাই কোর্টে মামলাটি বাতিল চেয়ে আবেদন করা হলে আদালত একটি রুল দেয়; সেই সঙ্গে বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ আসে।
এরপর দীর্ঘদিন মামলাটির নথিপত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি সবার নজরে আসে। তারপর বিচারিক আদালতে পুনরায় বিচার শুরু হয়।
১৯৮৪ সালে এফডিসির নতুন মুখের সন্ধানে নামের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে পা রেখেছিলেন সোহেল চৌধুরী। একই প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন পারভিন সুলতানা দিতিও। পরে এই তারকা দম্পতি বিয়ে করেন।