“আমরা তাদের একটি সহজ পদ্ধতি বলে দিয়েছি যে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে আমাদের কাছে সেটির একটি অনুলিপি দিলেই আমরা পদক্ষেপে যাব,” বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
Published : 23 Nov 2023, 03:06 PM
ঢাকায় কর্মরত জাতিসংঘের কর্মকর্তাসহ বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছ থেকে সে সম্পর্কে জেনেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন গোয়েন লুইস।
বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “তিনি (গোয়েন লুইস) জানতে চেয়েছিলেন জাতিসংঘসহ অন্যান্য বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তার জন্য আমরা কী পদক্ষেপ নিয়েছি।
“আমরা বলেছি- জনগণের নিরাপত্তা দেওয়াই আমাদের কাজ। পাশাপাশি বিদেশি যারা আছেন তাদের অগ্রাধিকার দিয়েই ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা এও বলেছি, যদি আপনি মনে করেন আপনার নিরাপত্তা আরও বাড়াতে হবে, তাহলে আপনি আমাদের জানালেই সেই বিষয়টি বিবেচনা করব।”
সরকারের কাছ থেকে অধিক নিরাপত্তা পেতে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় বলে গোয়েন লুইস জানানোর পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে সহজে নিরাপত্তা পাওয়ার পথ দেখিয়ে দিয়েছেন।
কামাল বলেন, “তিনি বলেছেন, আমাদের তো একটি লম্বা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। প্রথমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তারপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। আমরা তাদের একটি সহজ পদ্ধতি বলে দিয়েছি যে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে আমাদের কাছে সেটির একটি অনুলিপি দিলেই আমরা পদক্ষেপে যাব।”
অগ্রাধিকার দিয়ে কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ আছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
“বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী সবসময় সজাগ থাকবে, যাতে কেউ কোনো রকম নাশকতা কিংবা ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে। বিদেশি কূটনীতিকরা মুক্তভাবে চলাচল করতে পারবে কিনা, জানতে চাইলে আমরা বলেছি, যেখানেই যেতে চান যেতে পারেন। যদি তিনি মনে করেন সহযোগিতার দরকার আছে, আমরা সেটা করব।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের অভ্যন্তরীণ রক্তপাত নিয়ন্ত্রণে পুলিশি পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক। তবে এ বিষয়ে আরও সতর্ক হতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
“আমরা বলেছি, নাফ নদীর ওই পাড়ে মিয়ানমারের সীমান্ত। কিছুটা দুর্গম পথ রয়েছে, বাকিটা সহজ। যে কারণে তারা প্রবেশ করতে পারছে। আমরা দেখছি, মিয়ানমারের সঙ্গে আরাকান আর্মির যুদ্ধ চলছে। চেহারা একই রকম হওয়ায় আমাদের এখানে আরাকান আর্মিরা ঢুকে পড়ে, আমরা দেখেছি। সে কারণে মাঝেমাঝে দু’একটা ঘটনা ঘটছে। আমরা বিজিবি ও কোস্ট গার্ডকে আরও সতর্ক থাকতে বলেছি, যাতে তারা ঢুকতে না পারে।”
এক প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা স্বপ্রণোদিত হয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। কাউকে চাপ দিয়ে নির্বাচনে আনা হচ্ছে না।
কামাল বলেন, “বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বিভিন্নভাবে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে। এসব নেতাকর্মীরা তৃণমূল বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে। সেটা যারা পারবেন না, তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও অংশ নেবেন। নির্বাচনে সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করা হচ্ছে।”
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের সঙ্গে কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
“আমরা তাকে বলেছি, বাংলাদেশে নির্বাচন একটি আনন্দঘন পরিবেশে হয়, সবখানে আপনি দেখবেন সবাই উৎসুকভাবে অপেক্ষা করছেন, যখন থেকে প্রচার-প্রচারনা শুরু হবে তখন থেকে ঢাকঢোল পিটিয়ে মিছিল হয়, দেখতে পাবেন।”