Published : 07 Dec 2023, 05:31 PM
নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের অন্যতম নেতা তৌহিদুর রহমান ওরফে তৌহিদ সিফাতকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট-সিটিসিসি।
কক্সবাজার থেকে বুধবার গ্রেপ্তার করে তাকে ঢাকায় আনা হয় বলে জানিয়েছেন সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ২৯ বছর বয়সী তৌহিদই বর্তমানে হিযবুত তাহরীরের সবচেয়ে সক্রিয় নেতা। তিনি গত সেপ্টেম্বরে একটি অনলাইন সম্মেলনে অংশ নেন, যেখানে বর্তমান সরকার ও যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে বিষোদগার করা হয়।
সম্মেলনে তৌহিদ ‘প্রধান বক্তা’ ছিলেন জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, সম্মেলনটি লেবাননভিত্তিক একটি ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি প্রচার করা হয়।
“এ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য তারা ঢাকাসহ সারাদেশে পোস্টার লাগায় এবং অনলাইনে প্রচার চালায়। সম্মেলনে দুইজন বক্তা এবং একজন উপস্থাপক অংশগ্রহণ করে, যেখানে সবাই ছদ্মনাম ব্যবহার করে। এ সম্মেলনে বক্তারা সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও মার্কিন যুক্তরাষ্টসহ বিভিন্ন দেশের সাথে সরকারের সম্পর্ক নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়।”
ধর্মের ‘অপব্যাখ্যা’ দিয়ে তৌহিদ ও তার সহযোগীরা দেশের সাধারণ মানুষকে হিযবুত তাহরীরের নেতৃত্বে ‘ইসলামী রাষ্ট্র’ কায়েমের জন্য ‘উস্কানি’ দেয় বলেও জানান সিটিটিসি প্রধান।
পুলিশের বিশেষ ইউনিটের এ কর্মকর্তা বলেন, হিযবুত তাহরীর প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশে জঙ্গি ও মৌলবাদী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
“এই সংগঠনের সদস্যরা বাংলাদেশের প্রচলিত সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে বিশ্বাস না করায় এবং নানা ধরনের বিভ্রান্তিমূলক প্রচার-প্রপাগান্ডা চালানোর কারণে যেকোনো সময় বড় ধরনের আঘাত তারা ঘটাতে পারে- এই তথ্যের ভিত্তিতে ২০০৯ সালে সরকার এই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করে।”
পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান বলেন, প্রকাশ্যে আসতে না পারায় হিযবুত তাহরীর সদস্যরা গত কয়েক বছর ধরে অনলাইন বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছে।
“পাশাপাশি দেশের সার্বভৌমত্বকে আঘাত করার জন্য, গণতন্ত্রকে উৎখাত করার জন্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার ষড়যন্ত্র করে আসছে।”
সাম্প্রতিক অনলাইন সম্মেলনের পর গোয়েন্দা তৎপরতা চালিয়ে তৌহিদের অবস্থান শনাক্ত করা হয় বলে জানান আসাদুজ্জামান।
তৌহিদ সিটিটিসির জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে এমবিএ শেষ করে তিনি অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ২০১১ সালে দুই বন্ধুর মাধ্যমে হিযবুত তাহরীর সম্পর্কে তিনি জানতে পারেন, পরে তিনি জঙ্গি সংগঠনটিতে যোগ দেন।
সিটিটিসির সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১১ সালে সেপ্টেম্বর মাসে হাজারীবাগ থানার একটি মামলায় তৌহিদ প্রথমবারের মতো গ্রেপ্তার হন। সে যাত্রায় চার মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়ে তিনি জঙ্গি সংগঠনটিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন।
“পরবর্তীতে সে সংগঠনের আস্থাভাজন হয়ে অন্যতম শীর্ষ স্থান দখল করে। ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে আবারও গ্রেপ্তার হয়ে নয় মাস কারাভোগ করে তৌহিদ।”