অবশ্য দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় ভোটারদের ওপর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন না এই নির্বাচন কমিশনার।
Published : 20 Dec 2023, 02:50 PM
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে ‘উদ্দীপনা ও নির্বাচনি আমেজ’ তৈরি হয়েছে বলে মনে করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
কোনো দল ভোটে না এসে উল্টো যদি নাশকতা বা উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড করে, তাদের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের ১৪টি জেলা ঘুরে এসে বুধবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন আলমগীর।
তিনি বলেন, “প্রতিটি জায়গায় নির্বাচনের পরিবেশ ভালো। কোথাও কোনো রকম সমস্যা নেই। স্থানীয় আইন শৃঙ্খলাবাহিনী, প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সব জায়গায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখেছেন। সুন্দর সুষ্ঠু, পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করা যেন সম্ভব হয়, সে বিষয়টি আশ্বস্ত করেছেন। তাদের পদক্ষেপের পাশাপাশি ইসির পক্ষ থেকে যেসব পরামর্শ দেওয়া দরকার তা দিয়েছি।“
আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সামনে রেখে গত সোমবার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করেন রিটর্নিং কর্মকর্তারা। এরপর শুরু হয় ভোটের প্রচার।
প্রতীক বরাদ্দের পরের পরিস্থিতি তুলে ধরে আলমগীর বলেন, “ভোটারদের মধ্যে বেশ উৎসাহ উদ্দীপনা দেখেছি। যারা প্রার্থী রয়েছেন, প্রতীক পেয়ে বেশ মিছিল, সভা করছেন। বেশ আনন্দেই আছে। কোথাও কোনো সমস্যা নেই। পুলিশ ও প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য মতে, কোথাও এমন কোনো থ্রেট নেই যে নির্বাচনে সমস্যা হতে পারে।”
এবারের নির্বাচনে ৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ভোটে আছে ২৮টি। অন্যদিকে বিএনপিসহ ১৫টি দল ভোট বর্জন করেছে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এক দফার আন্দোলনে থাকা বিএনপি দফায় দফায় হরতালে অবরোধের মত কর্মসূচি দিয়ে আসছে।
নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, “একটা জিনিস বুঝতে হবে-এটা গণতান্ত্রিক দেশ। স্বাধীনভাবে ভোটে অংশ নেওয়ার যেমন অধিকার রয়েছে, অংশ না নেওয়ারও অধিকার রয়েছে। কোনো দল যদি অংশ না নেয় সেটা তাদের রাজনৈতিক ইচ্ছে, কৌশল। এতে সমস্যা নেই।
“একই সাথে তারা ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধও করতে পারে, তাতেও সমস্যা নেই। কিন্তু সেটা শান্তিপূর্ণভাবে বলতে হবে। কোনো নাশকতা, উসকানি, বিশৃঙ্খলা করা যাবে না- এটা নির্বাচনী আইন বিধি অনুযায়ী অপরাধ। এ ধরনের অপরাধমূলক কাজ যাতে না করতে পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ে বলা হয়েছে। আমরা কঠোরভাবে দেখব।”
তবে তিনি মনে করছেন, বিএনপি ও সমমনাদের ভোট প্রত্যাখ্যান ও ‘নাশকতার প্রচেষ্টায়’ ভোটারদের মাঝে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।
“সহিংসতা একেবারেই দুয়েকটা ক্ষেত্রে বলা যায়। শান্তিশৃঙ্খলার সাথে এটার মাত্রা তুলনা করলে একেবারেই নগণ্য। যেটা করছে, খুবই বিচ্ছিন্ন দুয়েকটি ঘটনা ঘটাচ্ছে। আইন শৃঙ্খলাবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন, তারা অত্যন্ত তৎপর। কোনো নাশকতা ঘটানোর চেষ্টা করছে কিনা, সংগঠিত করার চেষ্টা করছে কিনা, (সে বিষয়ে) তারা অত্যন্ত সজাগ।
“আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছে। কোথাও এ ধরনের নাশকতামূলক কাজ যে করছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে। দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে ৩০০ আসনের নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যাপক সাড়া (প্রভাব) পড়ছে না; যেখানে আনন্দ উৎসবের অবস্থা হয়েছে, সেখানে এগুলো কোনো প্রভাব ফেলবে বলে আমরা মনে করি না। নির্বাচন যথেষ্ট শান্তিপূর্ণভাবে হবে।”
বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচনে না আসায়, নতুন করে তাদের জন্য কিছু করার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেন এ নির্বাচন কমিশনার।
তিনি বলেন, “মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময়ের মধ্যে এলে আমরা তখন বলেছিলাম কিছু করতে পারব, রিশিডিউল করতে পারব। সে সময় পার হয়ে গেছে। এ মুহূর্তে আর কিছু করার সুযোগ নেই।”
আলমগীরের মত অনান্য নির্বাচন কমিশনাররাও দেশের বিভিন্ন নির্বাচনি এলাকা সফর করছেন। ভোট সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মাঠ পর্যায়ের নির্বচানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।