২৬ মার্চের মধ্যে আগারগাঁও থেকে দিয়াবাড়ি পর্যন্ত সবগুলো স্টেশন খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে কর্তৃপক্ষ।
Published : 09 Jan 2023, 03:32 PM
আগামী ২৫ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর পল্লবী স্টেশনেও থামবে মেট্রোরেল। এমআরটি লাইন-৬ এর পল্লবী স্টেশনটি সবার জন্য খুলে দেওয়া হবে সেদিন।
সোমবার ঢাকার ইস্কাটনে মেট্রোরেল বাস্তবায়নকারী ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আপাতত সকাল সাড়ে ৮টা থেকে চার ঘণ্টা আগারগাঁও থেকে উত্তরা উত্তর স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করছে মেট্রো ট্রেন। যাত্রীদের অভ্যস্থতা বাড়লে পর্যায়ক্রমে স্টেশনের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। এভাবে ২৬ মার্চের মধ্যে ওই পথের সব স্টেশন খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
ঢাকা শহরের চিরচেনা যানজট এড়াতে সাড়ে ছয় বছর আগে উত্তরায় দেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণযজ্ঞ শুরু হয়েছিল। গত ২৮ ডিসেম্বর এই মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেলে চড়ে যোগাযোগের নতুন পর্বে ঢাকা
মেট্রো উচ্ছ্বাসের দ্বিতীয় দিনে যাত্রী পারাপারে কিছুটা গতি
উদ্বোধনের পরদিন থেকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় মেট্রোরেল। প্রথমে আগারগাঁও থেকে উত্তরা উত্তর স্টেশন পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু হয়। মাঝে আরও সাতটি স্টেশন থাকলে এখন সেখানে ট্রেন থামছে না।
২৫ জানুয়ারি পল্লবী স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে ট্রেন। এরপর উত্তরা সেন্টার, উত্তরা সাউথ, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া স্টোশনেও থামবে ট্রেন।
জাপানের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণের এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের ডিসেম্বর নাগাদ এই ট্রেন ধরেই উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যাতায়াত করা যাবে ৪০ মিনিট সময়ে। আর ২০২৫ সালের জুন মাসে কমলাপুর পর্যন্ত অংশের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে ডিএমটিসিএল।
এম এ এন ছিদ্দিক জানান, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এমআরটি-১ লাইনের কাজের উদ্বোধন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুবিধা অনুযায়ী তারিখ চূড়ান্ত করা হবে। এটি হবে দেশের প্রথম পাতাল রেল।
বছরে ৪০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি কমবে মেট্রোরেলে: এম এ এন ছিদ্দিক
ডিএমটিসিএল এমডি জানান, মেট্রো ট্রেন চালু হওয়ার পর ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ১০ দিনে ৯০ হাজার যাত্রী পরিবহন করে ৮৮ লাখ টাকা আয় হয়েছে। এর মধ্যে এমআরটি পাস বিক্রির অর্থও রয়েছে।
“মেট্রো রেল ট্যুরিস্ট স্পটের মত হয়ে যাওয়ায় সিঙ্গেল জার্নির টিকেট বেশি বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে ট্রেন ছাড়ার আধা ঘণ্টা আগে স্টেশনের গেইট খোলা হবে। আবার শেষের দিকে আধা ঘণ্টা আগে প্রবেশ গেইট বন্ধ করা হবে।
বিফ্রিংয়ের সময় ডিএমটিসিএল এমডি সাংবাদিকদের সামনে মেট্রোরেল পরিচালনায় ব্যয়ের তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি জানান, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পরিচালন, ব্যবস্থাপনা ও আনুষঙ্গিক সব ব্যয় মিলে বছরে হাজার কোটি টাকা লাগতে পারে বলে আনুমানিক হিসাব করা হয়েছে।
এ ব্যয় মেটাতে দৈনিক প্রায় তিন কোটি টাকা করে আয় করতে হবে। এ পরিমাণ অর্থ আয় হলে লাভজনকভাবে মেট্রোরেল পরিচালনা করা যাবে বলে জানান তিনি।
তবে এখন মেট্রোরেল পরিচালনা ব্যয়ের ‘সিড মানি’ হিসেবে এক বছরের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে এক হাজার কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
ডিএমটিসিএল এমডি বলেন, এ প্রকল্পের জন্য যে ঋণ নেওয়া হয়েছে সেটা এ প্রকল্পের আয় থেকেই পরিশোধ করতে হবে।
আরেক প্রশ্নে তিনি জানান, সব স্টেশনের জন্যই জনবল প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন স্তরে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে মেট্রো ট্রেনের ২০ ও ২১তম সেট এসে পৌঁছেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী জুনের মধ্যে বাকিগুলোও এসে পৌঁছাবে।