পথের কুকুর-বেড়ালদের খাবার দেন বলে কটাক্ষও সইতে হয়েছে পূর্ণাভা সিদ্দিকীকে। তবে তার মতে, মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি এখন বদলাতে শুরু করেছে।
Published : 14 Aug 2023, 01:34 AM
ঢাকার খামারবাড়ির টিঅ্যান্ডটি মাঠের পাশে মাঝেমধ্যেই কিছু ভবঘুরে কুকুরকে যত্ন করে খাওয়ানোর দৃশ্য দেখা যায়। এক চা দোকানির সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, পাশের স্কাই টাচ ভবনের বাসিন্দা এক ভদ্রলোক এই কুকুরদের দেখভাল করেন।
ওই ভবনে গিয়ে জানা গেল, প্রাণী হিতৈষী ওই মানুষটির নাম ইফতি রহমান। তবে তিনি এখন দেশে নেই। কথা হল তার বাসার সহকারী নুরু মিয়ার সঙ্গে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নুরু বলেন, "স্যার (ইফতি রহমান) এখানকার প্রায় সবগুলো পথের কুকুরকে নিয়মিত খাবার দেন, কুকুরগুলোর কোনোটা অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যান। শুধু পথের কুকুর দেখভাল করার জন্য বেতন দিয়ে একজন লোক রেখেছেন। স্যার দেশে নেই বলে উনার বাবা ফজলুর রহমান কুকুরদের খাওয়ানোর ব্যাপারটি তদারকি করছেন।"
ইফতি রহমানের এমন গল্প যেমন মানুষের মানবিক চরিত্রটি সামনে আনে, আবার বিনা কারণে কুকুর-বেড়ালকে নির্যাতন, এমন কি হত্যার ঘটনাও কম ঘটে না।
২০১৮ সালের নভেম্বরে অভিনেতা প্রাণ রায় খিলক্ষেত থানায় সাধারণ ডায়রি করলে একবার খবর হয়েছিল প্রাণিহত্যা নিয়ে। প্রাণ রায় তার পোষা কুকুর চুরি করে খেয়ে ফেলার অভিযোগ এনেছিলেন পিংক সিটিতে বসবাস করা দুই চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে।
পরের বছর পিংক সিটির আরেক বাসিন্দা সাদিয়া সালমা ওই এলাকায় বসবাস করা আটটি কুকুরের নিখোঁজ হওয়া এবং সেগুলোর একটির অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে থানায় অভিযোগ করেন।
অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ওই দিন আরও দুটি কুকুর মারা গেছে। দুই দিনে তিনটি কুকুরের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ বলে গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা শাহনেওয়াজ কাকলী।
ওই ঘটনার চার বছর পর শাহনেওয়াজ কাকলী এখনও তেমনটাই মনে করেন। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “তখন মোট ১১টি কুকুর নিখোঁজ হয়েছিল। তদন্ত হলে বেরিয়ে আসত পশুদের প্রতি মানুষের নিষ্ঠুরতার কাহিনী। ওই কুকুরগুলোকে হত্যা করা হয়েছিল।
“সাদিয়া সালমা আপা যে মামলাটি করেছিলেন, সেটি পরে তিনি ব্যক্তিগত কারণে আর নিয়মিত খোঁজ নিতে পারেননি। আমাদের বলেছিলেন, খোঁজ নিতে। কিন্তু তারপরই তো মহামারী শুরু হয়। সেটা নিয়ে পুলিশ পরে কী করেছিল, আমাদের আর জানা নেই।”
পিংক সিটিতে কুকুর হত্যার ঘটনার তদন্ত করছিলেন খিলক্ষেত থানার এসআই সজল সরকার। খিলক্ষেত থানায় খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সজল সরকার বদলি হয়ে গেছেন।
থানার ওসি কাজী সাহান হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বললেন, "সজল সরকার এখন খিলক্ষেত থানায় নেই। তিনি এখন কোথায় কাজ করছেন, আমার জানা নেই।"
কুকুর হত্যার ঘটনায় থানায় যে অভিযোগটি এসেছিল, তার সমাধান হয়েছিল? প্রশ্ন শুনে ওসি সাহান হক বললেন, "সেটাতো বেশ কয়েক বছর আগের ঘটনা। এ বিষয়ে আমার জানা নেই। না জেনে কোনো মন্তব্য করতে পারব না।"
সহানুভূতি কী বাড়ছে?
কোভিড মহামারী শুরু হলে অভিনেত্রী জয়া আহসানসহ অনেকেই পথের কুকুর-বিড়ালদের খাবার দিতে রাস্তায় নামেন। সেসব ছবি ও ভিডিও ফেইসবুকে সাড়া ফেলে। কুকুরসহ বিভিন্ন পশুদের নিধনের ব্যাপারে সব সময় সোচ্চার হয়ে প্রতিবাদ করেছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান।
২০২০ সালে রাজধানীর বেওয়ারিশ কুকুর স্থানান্তরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন হয়েছিল। সেটি করেছিলেন জয়া আহসান এবং ‘অভয়ারণ্য’ ও ‘পিপলস ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার’ নামের দুটি প্রাণিকল্যাণ সংগঠন।
রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানির পরপরই কুকুর অপসারণ বন্ধ করে দেয় দক্ষিণ সিটি কর্তৃপক্ষ।
ওই সময় কুকুর স্থানান্তরের প্রতিবাদে অংশ নিয়ে অভিনেত্রী জয়া আহসান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “প্রতিটি প্রাণী সভ্যতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শহর থেকে কুকুর সরিয়ে দেওয়া হবে ধ্বংসাত্মক। আমাদের জীবনযাপনে প্রত্যেকটি প্রাণীর প্রয়োজন আছে। কুকুর, শিয়াল, সাপ, ব্যাঙ, ঈঁদুর সবাইকে নিয়েই আমাদের থাকতে হবে।”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পূর্ণাভা সিদ্দিকী থাকেন উত্তরায়। বাসার পাশে থাকা কুকুর-বেড়ালদের নিয়মিত খাবার দেন বলে নানা রকম কটাক্ষ তাকে সহ্য করতে হয়।
তবে এখন অনেকের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে বলে জানালেন পূর্ণাভা। আবার পুলিশের ভয়েও অনেকে নেতিবাচক মন্তব্য করেন না।
পূর্ণাভা সিদ্দিকী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আমি নিয়মিত উত্তরা এলাকায় কুকুর-বিড়ালদের খাবার দিয়ে থাকি। প্রথম দিকে মানুষ বাঁকা চোখে তাকাত, এখন কিছুটা পরিবর্তন হচ্ছে। কোভিডের সময় কেউ কেউ বলত, 'মানুষই খাওন পায় না, আবার কুকুর-বিড়ালদের খাওয়ায়'। এখন অনেকে আর এটা বলে না।"
পূর্ণাভার বাবা অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাওয়া একজন নাট্যকার। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি।
গেল বছরের জুলাই মাসে উত্তরায় রতন সিদ্দিকীর বাসায় হামলা হয়েছিল। সেদিনের হেনস্তার কথা বলতে গিয়ে পূর্ণাভা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “হামলাকারীরা বলছিল, এই বাড়ির মেয়েরা কুকুর পালে, ওরা সব নাস্তিক।"
হামলাকারীরা সাধারণ মানুষের মধ্যে তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় আবেগ উসকানোর চেষ্টা করছিল।
গত ঈদের ছুটিতে বন্ধুরা কয়েকজন মিলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে গিয়ে কুকুর-বেড়ালদের খাবার দিয়েছেন জানিয়ে পূর্ণাভা বলেন, "যখন ক্যাম্পাস খোলা থাকে, তখন অনেকেই খাবার দেয় এই প্রাণীদের। কিন্তু ঈদের ছুটিতে তো ক্যাম্পাস ফাঁকা হয়ে যায়। তখন আমরা বন্ধুরা ভেবেছি এসব অবলা জীবদের খাবার দেওয়ার কথা।"
উত্তরার আরেক বাসিন্দা প্রজ্ঞা পারমিতা এবং তার বাসার লোকজন নিয়ম করেই প্রতিদিন পথের প্রাণীদের খাবার দেন। কোন তাড়না থেকে খাবার দেন জানতে চাইলে প্রজ্ঞা পারমিতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "ভালো লাগা থেকেই এই কাজটি করি। কথায় আছে না ‘জীবে দয়া করে যে জন, সে জন সেবিছে ঈশ্বর’।
“এসব প্রাণী তো আমাদের চারপাশেই থাকে। অথচ ক্ষুধা লাগলে তারা বলতেও পারে না। তারা অসহায়। আমাদের সবারই উচিত তাদের কথা চিন্তা করা। জীবকে সেবা করা মানেই তো ইশ্বরকেও সেবা করা।"
প্রজ্ঞা তার প্রতিবেশীদের মাঝেও দেখেছেন প্রাণীদের প্রতি যেন সহানুভূতি বাড়ছে। অনেকেই এখন আশেপাশের প্রাণীদের ভালোবাসেন। পাখিদের জন্যও অনেক খাবার ছিটিয়ে রাখেন।
পাখির জন্য ভালোবাসা
মোহাম্মদপুরের আদাবরের মনসুরাবাদের বাসিন্দা নূরজাহান আক্তার এবং তার বর ও পুত্রকন্যারা বেশ কয়েক বছর ধরেই পাখিদের জন্য খাবার ছিটিয়ে রাখেন। তাদের ফ্ল্যাটটি ছাদ লাগোয়া, ছাদটি অনেকটা গ্রামের বাড়ির উঠোনের মত। তাদের ছাদে আছে নানান ফলের গাছ, যে সব ফল পাখিদের খুবই প্রিয়। প্রায়ই তাদের আঙিনায় নানা প্রজাতির পাখি আসে।
নূরজাহান আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আমাদের অনেক বছরের অভ্যাস পাখিদের খাবার দেওয়া। বাসার বারান্দায়, ছাদে আমরা পাখিদের জন্য খাবার রাখি। গত দশ বছরে অনেক প্রজাতির পাখি আসতে দেখেছি। কাক, চড়ুই তো খুবই কমন। আজকাল পাখি তেমন আসে না। আমাদের একটা পেয়ারা গাছ আছে, সেখানে একজোড়া কাক এসে বসত, সেই কাকগুলোকেও অনেকদিন আসতে দেখি না।”
মোবাইলে আলাপের ফাঁকেই নূরজাহান জানালেন, তার ফ্ল্যাটের বারান্দার কার্নিশে এসে বসেছে তিনটি মুনিয়া পাখি। তাদের খাবার দিয়ে এসে বললেন, “কিছুদিন আগেও চড়ুই এসে ঘরের ভেতর উৎপাত করে যেত। টিয়া আসত ছাদের উঠোনে। আমি কয়েক দিন ধরে টিয়াদের জন্য খাবার দিয়েছি, কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে টিয়ারা আর আসছে না।”
পাখি কম দেখতে পাওয়ার বিষয়টা ঠিক নাও হতে পারে বলে মন্তব্য করলেন সেন্ট্রাল রোডের নূর-ই আলম নাহিদ। তিনি তার বাড়ির ছাদের চিলেকোঠায় কবুতর, মোরগ-মুরগি পালেন। এই সব পোষ্যদের জন্য রাখা খাবারে নিয়মিতই ভাগ বসায় অন্য পাখিরা।
নাহিদের বাড়িটি সায়েন্স ল্যাবরেটরির খুব কাছে। ওখানে গাছপালা বেশি হওয়ায় পাখিও অন্য এলাকার চেয়ে বেশি। তিনি ছাদবাগানের কামরাঙা, করমচা, পেয়ারাসহ অন্য আরও কিছু ফল না তুলে পাখিদের জন্যই রেখে দেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “কিছুদিন আগে টিয়া পাখিরা কামরাঙা খেতে এসে গাছগুলোকে তছনছ করে দিয়ে গেছে। দুটো পেঁপে আর কয়েকটা ড্রাগন ফল রক্ষা করার জন্য জাল পরিয়ে রেখেছিলাম। জাল ফুটো করে পাখিরা সেগুলোও খাওয়ার চেষ্টা করেছে।”
নাহিদ জানালেন, চড়ুই, কাক, বুলবুলি, মুনিয়া ও শালিক তার ছাদবাগানের নিত্য অতিথি।
ধর্মীয় ভুল ব্যাখ্যা না দেওয়ার আহ্বান
কুকুর-বিড়ালসহ অন্য প্রাণীদের প্রতি মানুষের নিষ্ঠুর আচরণের নেপথ্যে ধর্মীয় ভুল ব্যাখ্যা একটি কারণ বলে মনে করেন প্রাণিপ্রেমীদের কেউ কেউ।
অভিনেতা প্রাণ রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "কোনো কোনো ধর্মীয় বক্তা ‘কুকুর-বিড়াল পালা ঠিক না’ বলে ভুল ব্যাখ্যা দেন। এতে তাদের অনুসারীরা কুকুরদের মেরেও ফেলে। তারা যদি সর্বপ্রাণের ব্যাপারে ইতিবাচক ধারণা দেন, প্রাণে প্রাণ মেলাবার বিষয়টিকে বুঝতে পারেন, বোঝাতে পারেন, তবে মানুষ অনেক বেশি সহানুভূতিশীল হবেন। আর সরকারেরও এসব ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে।"
এখন প্রাণীর প্রতি মানুষের ভালোবাসা কমছে বলে মনে করেন প্রাণ রায়। তিনি বলেন, "আগে গ্রামে গেলে দেখা যেত প্রায় সব বাড়িতেই দুয়েকটা পোষা কুকুর, বিড়াল থাকত। কেউ কেউ শখ করে অন্য প্রাণীও পালতেন। কিন্তু এখন এটা তেমন দেখা যায় না। বরং কেউ যদি কুকুর-বিড়াল পালতে চায়, তাহলে প্রতিবেশীরা নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেয়।
"শহরে সচেতনতা কিছুটা আছে। আবার অনেকে কুকুর-বিড়ালদের একবেলা খাইয়ে ফেইসবুকে প্রাণীপ্রেমি হিসেবে নিজেকে জাহির করে, এমনটাও দেখি। তবে গ্রামের তুলনায় শহরে প্রাণীদের প্রতি সহানুভূতি একটু বেড়েছে। আগে গ্রামের মানুষের মধ্যেই প্রাণীদের প্রতি ভালোবাসাটা বেশি ছিল। নিজের তিনবেলা খাবার জুটত না, কিন্তু প্রিয় কুকুরটাকে খেতে দিত। বাড়ির আঙিনায় থাকা অন্যান্য পশু-পাখিদের খেতে দিত। এখন সেটা কমেছে।"
পশু-পাখিদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ কোনোভাবেই ধর্ম সম্মত নয় বলে জানালেন মুফতি এনায়েতুল্লাহ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, "পশু-পাখিদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করার ব্যাপারে ইসলাম ধর্মে কঠোর নিষেধ আছে। ইসলাম ধর্ম সকল প্রাণীর প্রতি সহানুভূতিশীল হতে বলে।"
আইনের প্রয়োগ বাড়াতে হবে
২০১৮ সালে প্রাণ রায়ের কুকুর ধরে নিয়ে খেয়ে ফেলার ঘটনাটি মামলা হিসেবে নথিভুক্তু করেনি পুলিশ। তিনি মামলা করতে চাইলেও পুলিশ সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নিয়েছিল বলে তিনি জানালেন।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকেও দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর আহবান জানিয়ে প্রাণ রায় বলেন, "দেশের বেশিরভাগ থানায় এ ধরনের মামলা নেবে না। এটা আসলে দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। আমি যখন মামলা করতে গেছি, সেখানে যারা ছিলেন, তারা মনে করেছেন- 'একটা কুত্তা মারা গেছে, এটা গুরুত্বপূর্ণ কিছু না।' যদি তারা প্রাণীর প্রতি সহানুভূতিশীল হতেন, তাহলে এটাকে প্রাণী হত্যা হিসেবে দেখে মামলাটি নিতেন এবং আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন।"
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিনা কারণে যে কোনো প্রাণীকে হত্যা করলে সেটি 'প্রাণিকল্যাণ আইন, ২০১৯' অনুযায়ী অপরাধ বলে গণ্য হবে।
“কোনো প্রাণীর কারণে যদি কেউ তার বসবাস অনিরাপদ মনে করেন, তবে সেটি বন্য প্রাণী সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে জানাতে হবে। তারা ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু নিজের হাতে সেই প্রাণীটিকে হত্যা করা যাবে না। সকল প্রাণীরই বাঁচার অধিকার রয়েছে পৃথিবীতে। কেউ যদি কোনো প্রাণীর সঙ্গে নৃশংস আচরণ করে, সেই প্রাণীটি তো আর মামলা করতে পারবে না। এজন্য যে কোনো মানুষই বাদী হয়ে মামলা করতে পারবে।"
মামলা করার জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করার পরামর্শ দিয়ে তানজীম আল ইসলাম বলেন, "অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বা তার কাছ থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আদালত মামলা গ্রহণ করবে। এ আইনের আওতায় পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতার অপরাধ মোবাইল কোর্টেরও বিচার করার এখতিয়ার রয়েছে।"
তবে ঢাকা শহরে কী পরিমাণ বেওয়ারিশ কুকুর-বিড়াল রয়েছে, তার কোনো পরিসংখ্যান জানাতে পারেননি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণিসম্পদ পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ড. হোসেন মো. সেলিম।
তিনি বলেন, "আমাদের কাছে এর পরিসংখ্যান নেই। কুকুরসহ বিভিন্ন প্রাণী অসুস্থ হলে আমরা সেটি তদারকি করে থাকি।"
বছরে কত প্রাণীর চিকিৎসা দেওয়া হয়, সেই হিসাবও জানাতে পারেননি এই কর্মকর্তা।