নৈশভোজে অংশ নিলেন টেড কেনেডির ছেলেসহ পরিবারের সদস্যরা, দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।
Published : 31 Oct 2022, 11:51 PM
একাত্তরে বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সেনেটর টেড কেনেডি, যুদ্ধকালীন সেই বন্ধুকে ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’য় ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার। প্রয়াত সেই মার্কিন রাজনীতিকের সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হল তার ছেলের হাতে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এক নৈশভোজ অনুষ্ঠানে এডওয়ার্ড কেনেডি জুনিয়ারের হাতে তার বাবার সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। সফরকারী কেনেডি জুনিয়র ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্মানে এই নৈশভোজ আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, “১৯৭১ সালে এডওয়ার্ড এম কেনেডি সিনিয়রের সফর (ভারতে শরণার্থী শিবির পরিদর্শন) আমাদের জনগণকে যেভাবে উৎসাহিত করেছিল, আজকে আপনার (কেনেডি জুনিয়র) সফরও আমাদেরকে সেভাবে উৎসাহিত করেছে আমাদের জনগণের জন্য, দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে।”
এদিন সকালে কেনেডি জুনিয়র, তার পত্নী ক্যাথরিন কেনেডি, মেয়ে কিলি কেনেডি এবং ছেলে টেডি কেনেডি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। আমন্ত্রণ গ্রহণ করে বাংলাদেশ সফরের জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যে শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা শুরুর পর ১ কোটির উপর শরণার্থী যখন ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল, তাদের দেখতে টেড কেনেডি ছুটে আসার কথাও স্মরণ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “মানুষের দুঃখ, কষ্ট তিনি (কেনেডি সিনিয়র) উপলব্ধি করেছিলেন। তখনই তিনি পদক্ষেপ নেন এবং সিনেটে (মার্কিন) এ বিষয়ে কথা তোলেন এবং আমেরিকা যে পাকিস্তানিদের পক্ষ নিয়েছে, তাদেরকে অস্ত্র দিচ্ছে, অর্থ দিচ্ছে তার বিরোধিতা করেন এবং তিনি দ্ব্যার্থহীন কণ্ঠে বলেন যে মুক্তিকামী বাঙালিদের পাশে আমেরিকার থাকা উচিৎ, তাদের মানবাধিকারের জন্য থাকা উচিৎ।”
কেনেডি সিনিয়রের পদক্ষেপ, কথা যে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা, সাহস জুগিয়েছিল, সে কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমেরিকা সরকারের হয়ত কিছু অংশ আমাদেরকে সমর্থন করেনি, কিন্তু অধিকাংশ আমাদের সমর্থন করে এবং আমেরিকার জনগণ আমাদের সমর্থন করেন।”
আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০০৯ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন বন্ধুদের সম্মান জানানোর পদক্ষেপ নেয়। অনুষ্ঠান করে সম্মাননা স্মারক তুলেও দেওয়া হয় বিদেশি বন্ধুদের কিংবা যারা প্রয়াত হয়েছেন, তাদের পরিবারের হাতে।
তখন টেড কেনেডিকে সম্মান জানাতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, “আজকে যখন কেনেডি জুনিয়র এখানে এসেছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে, তখন আমরা চিন্তা করলাম এটা হচ্ছে একটা মোক্ষম সময়। কাজেই এই অনারটা যে আমরা দিতে পারলাম সময়মতো, সেটাই হচ্ছে আমাদের জন্য সব থেকে বড়।”
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীর আয়োজনে যোগ দিতে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন কেনেডি জুনিয়র।